পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন মৰলারীসমাজে নিবেদন ஆல்து করিব। নিজেদের সামাজিক ব্যবস্থার বেলায় বিদেশী সরকারের আইনের শাসন মানা র্যাহাদের মতে অস্থায়, তাহারা কি স্বীকার করিবেন না যে, সমাজে নূতন করিয়া কোন বিধি চালাইতে হইলে শাসনকতাদের রচিত আইন ছাড়া কোনও রকমে এই অমান্যকারীকে আইনের নিয়মে বাধ্য করা চলে না ? যেখানে প্রার্থিত নিয়মভঙ্গের অপরাধীকে একটি অবশুপালনীয় শাসনের অধীন হইতে হয় ন, সেখানে নূতন নিয়মকে কিছুতেই চালাইতে পারা যায় না। কেহ কেহ একথা বলিয়াও থাকেন—সমাজে এখন বহুপত্নী গ্রহণ উঠিয়া গিয়াছে বলিলেই হয়, আর অন্ত দিকে বন্থপতি গ্রহণের প্রথা একেবারেই নাই । উত্তরে বলিতে পারি যে, কোন অপরাধ অধিক আছে, বা নাই, এ বিচারে কেহ আইনের ব্যবস্থা উড়াইয়া দিতে পারে না । সমাজে সকল শ্রেণীর অপরাধেরই সম্ভাবনা আছে, আর র্যাহাকে অতিবড় বিশ্বাসী বা কত ব্যনিষ্ঠ ভাবা যায়, তাহারও পদস্খলন আছে। এই সকল অবস্থা না থাকিলে উকিলের পয়স হইত না,-আদালত টিকিত না । পরোক্ষে কাহারও কাহারও এই রকম উক্তির কথা শুনিয়াছি যে, তাহাদের প্রেম বড় পবিত্র ; কাজেই বিনা রেজেক্টিতে কোন আশঙ্কা নাই, আর যদি থাকে—সে কপাল। এই ধরণের অতি কাচ ছেলেমানুষী উক্তির তলায় লুকাইয়া আছে প্রাচীন কুসংস্কারপালনের প্রতি স্নেহ । স্বাধীনতার নামে শত বড়াই করিলেও অভকিতে প্রাচীন প্রথার দিকে প্রাণের তলায় এমন ঝোক আছে, যাহার উত্তেজনায় বা ভাবের মোহে প্রাচীন গোলামির ‘নাকে-দড়ি’ ও ‘পায়ে-বেড়ি'-রূপ অলঙ্কার পরিবার জন্ত শরীর উৎস করে। আমেরিকায় উন্নতির চালকেরা যখন নিগ্রোদের স্বাধীনতার নিশান উড়াইয়াছিলেন, তখন অনেক নিগ্রে বহুকালের গোলামির অভ্যাসে নিজেদের ইচ্ছায় গলার শিকল খুলিতে কুষ্ঠিত হইয়াছিল। আমার এই নিবেদন যাহাদের কাছে, তাহারা যখন ‘সনাতন’ শব্দের মোহে আচ্ছন্ন নহেন, আর বাহা হিতকর তাহাকেই বরণ করিতে প্রস্তুত, তখন আশা হয়—তাহারা স্ববুদ্ধিতেই সকল কথা বিচার করিবেন,—প্রাচীনের মান্ত কোন শব্দের দোহাই দিয়া চলিবেন না । এই প্রসঙ্গে একটা নূতন ধরণের অনুষ্ঠানের উল্লেখ করিতেছি ; এমন রিপোর্ট পড়িয়াছি—ইউরোপের কয়েকটি মহিল ব্রাহ্মণ্য প্রথার গুরুদের কাছে দীক্ষা লইয়া একেবারে ধমে ও জাতীয়ত্বে হিন্দু হইয়াছেন আর এদেশের লোককে বিবাহ কfরয়াছেন, এই ইউরোপীয় মেয়েরা স্বাধীন বিচারে ব্রাহ্মণ্য ধম অবলম্বন করিতে পারেন, আর খাটি প্রেমের আকর্ষণে ভারতের লোককে বিবাহ করিতে পারেন, কিন্তু তাহারা আপনাদের জাতীয় বিসর্জন দিয়াছেন,—জন্মভূমির প্রতি তাহাদের কতব্য ঝাড়িয়া ফেলিয়াছেন, শুনিলে শিহরিতে হয় । বিবাহ করিলে এমন ভাবে স্বামীর গোলাম হইতে হইবে ষে আপনার জন্মভূমির প্রতি যে প্রেম থাক চাই, কতব্য থাকা চাই, তাহা পায়ে দলিতে হইবে, ইহাও অতিশয় ঘৃণ্য অতিশয় পাপময় । এমন বহু ইংরেজ আছেন যাহারা খ্ৰীষ্টিয়ানি মুনেন না ; খ্ৰীষ্টিয়ানি মানেন না বলিয়া তাহারা ইংরেজ নন বলা চলে না। বর্ণ ও জাতীয়ৰ এক নয়। যাহারা ১৮৭২ জন্ধের তিন আইনে বিবাহ করিয়া অথবা ধম বিষয়ে নিজেদের স্বাধীন মতের ফলে ব্রাহ্মণ্যধম মানেন না বা মানিবেন না অথবা প্রেমের পবিত্র টানে অঙ্ক দেশের লোককে বিবাহ করিবেন, তাহারা যদি তিল পরিমাণে স্বদেশপ্রেম হারান তবে স্বাধীনতার সাধনার নামে মহাপাতক করিবেন। অামার নিবেদন, ফেনবনারীরা সনাতন অসনাতনের বিচার উপেক্ষা করিয়া জীবনবিকাশের জন্য স্বাধীনতা বরণ করিয়াছেন, তাহারা আমার কথাগুলি সামগ্রহে বিচার,করিবেন।