পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

بحو 8 جوا প্রবাসী ১Ne৪৪ সব যাওয়াই যে যাওয়ার জন্তে তাও আমি মানি নে— যাওয়ার লোভেই অনেকে যায়।” “ও সব কথা থাকৃ। তোদের বাড়ীতে চাবি পড়ল কেন ? ভাড়া দিয়ে দে না ।” “আমি কেন দিতে যাব ? অামার কি গরজ ? শুনলাম বিয়ের পর আমাদের দান ক’রে দিতে চেয়েছিলেন, নেয় নি, নিলেও আমি ফিরিয়ে দিতাম।” অমলা চেয়েছিল কথাটা ঘুরিয়ে অন্ত পথে নিয়ে যেতে, কিন্তু নিশার কাছে এ-কথাটাও অপ্রীতিকর হচ্ছে দেখে সে থেমে গেল। তার পর বললে, “সময় পেলেই আসিস । তোর বর ত বেশ ভাল লোক দেখছি, বললেই কথা শুনবে " ... “বিয়ের পর কিছুদিন সব বরই ভাল লোক আর সব বরই কথা শোনে।” “ন, তোর বর পরেও শুনবে ।” “তাই নাকি ? একবার দেখেই চিনে নিয়েছিস । ব্যাপার ত ভাল নয়।” “জালাস নে। মা তোর শ্বাশুড়ীকে লিখবেন নিশ্চয় ।” “শুধু লিখলেই ত হবে না। তুই না গেলে তোদের বাড়ী তারা আমায় পাঠাবে কেন ?” “আইবুড়ো মেয়ের বুঝি যেখানে-সেখানে যেতে আছে ?" “জাইবুড়ে থাকবার জন্যে ত কেউ মাথার দিব্যি দিচ্ছে না। অশোকদাকে বলে যাচ্ছি---” "আচ্ছা, আর বাহাদুরি করতে হবে না। আমার ব্যবস্থা আমি নিজেই করতে পারব।” 嶺 嶺 粵 শরৎকে দশটার মধ্যে আপিসে হাজির হতে হয়, তাই নটা বাজতে না বাজতে তার ছুটোছুটি স্বরু হয় । বিয়ের কনে হয়ে এসেই নিশাকে স্বামীর কি কি দরকার তা ঠিক ক’রে রাখতে হত। হঠাৎ দৈনন্দিন নিয়মে বাধা পড়ল দেখে বাড়ীম্বুদ্ধ সবাই আশ্চৰ্য্য হয়ে গিয়েছিল। ন’টা বেজে যাবার পরও শরতের দেখা নেই। তার মা এসে নিশাকে জিজ্ঞেস করলে, “ই বেীমা, সে আজ আপিস যাবে না এ-রকম কিছু বলেছিল না কি ?” তাকে জিজ্ঞেস করায় নিশা একটু বিত্রত হয়ে পড়েছিল, বললে, “না।” “কোথায় গেছে তাও বলে যায় নি ত ?” “ત્રા * “ঐ ছেলেই আমায় পাগল করলে। এখন কোথায় খুঁজতে পাঠাই বল ত ? এ রকম ত সে কখন করে না।” তার আর বেশী কিছু বলা হ’ল না। শরৎ বাড়ী ফিরল কতকগুলো কাগজ-বাধা বাগুিল নিয়ে। মা কিছু বলবার আগেই সে বললে, “খুব রাগ করছিলে ত?” “তা করব না ? আপিসের দেরি হয়ে যাচেই...” “আজ আপিস যাব না।” “সে কি ? আপিস যাবি না কেন ?" “বিদেশ যেতে হবে তাই ছুটি নিয়েছি। এই জিনিষগুলো আর কতকগুলো কাপড় জামা একটা স্বটকেসে দিয়ে দিতে হবে—বারটার ট্রেনে যাচ্ছি।” “কোথায় যাচ্ছিল, কেন ধাচ্ছিস কিছুই ত বললি না।” “যাচ্ছি কাশী পৰ্য্যস্ত—বিশেষ কাজ পড়েছে ব’লে ।” “বেশী দিন থাকতে হবে না কি ?” “কাজ তাড়াতাড়ি হয়ে গেলে থাকতে হবে না। বাবাকে সব বুঝিয়ে বলেছি।” মা চলে যেতেই শরৎ, নিশাকে বললে, “মার কাছে জবাবদিহি ত শেষ হ’ল, এবার কি তোমার পালা না কি ?” নিশা কোন জবাব দিলে না দেখে শরৎ বললে, “খুব রাগ হচ্ছে, না, এক যাচ্ছি ব’লে ? লক্ষ্মীটি কিছু মনে ক’রো না ; বডড দরকারী কাজ তাই যেতে হচ্ছে।” নিশা স্কটকেস সাজাতে লাগল। কিছুক্ষণ পরে বললে, *বিছানা নেবে না ?” “না, দরকার হবে না। এক জন লোকের বাড়ী যাচ্ছি , আর ক'দিনের জন্তে ওসব ঝঞ্চাট না বাড়ানই ভাল । ই', তোমার ইচ্ছে হ’লেই তোমার বন্ধুর কাছে যেতে পার, বাবা-মা বারণ করবেন না ।” “অমুদির কাছে আমার যেতে সাহস হয় না।” "এ কয়দিনে সে কথা ত অনেকবারই শুনেছি, কিন্তু কি উপায় আছে বল ?” নীচে থেকে মা বললেন, “আর দেরি করিস নি ভাত বাড়ছি ।" 兴 嶽 তখন এলাহাবাদে কুম্ভমেলার আয়োজন চলছিল । সারা দেশ থেকে সাধুর আমদানি স্বরু হয়ে গিয়েছিল ; কত রকমের সাধু ! কেউ কাটার ওপর গুয়ে, কেউ চারদিকে আগুন জেলে দিনরাত তার মাঝে ব’সে, কেউ একটা হাত উপর দিকে তুলে, কেউ মৌনী, কেউ লোককে ওষুধ দিচ্ছেন, কেউ পাঠ করছেন । সিতাংশু ভেবেছিল তার বরাত খুব ভাল। ঠিক যে সময় সমস্ত ভারতবর্ষের সাধু-সন্ন্যাসী একসঙ্গে এসে হাজির হয়েছেন, সেই সময়টিতে সেও মুক্তি পেয়েছে। সমস্ত দিনরাত সে সাধুদের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরছে— আজ এক সাধুর কাছে যায়, তার সেবা করে, তার সঙ্গে কথাবাৰ্ত্ত বলে কিন্তু কোথায় যেন তার মেলে না, তার পর দিন আর এক সাধুর কাছে যায়। ক'দিনে তার চেহার এমন বিত্র হয়েছিল ষে হঠাৎ কেউ তাকে চিনে নিতে পারত ন, কিন্তু সেদিকে তাকাঁবার তার সময় ছিল না। এ রকম সুযোগ জীবনে আর আসবে না। তার সবচেয়ে বিপদ