পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o جسون . প্রষণসী 令°88 হাসতে হাসতে স্বামীজী বললেন, "ঘর ছেড়ে এসেছ কি যে ফিরতে চাই না বলছ ?”

  • বাংলা থেকে এত দূর এসেছি...” “তোমার দেহটা এসেছে, তুমি আস নি। আচ্ছ, সংসার ছেড়ে এসেছ, না ? তা বাড়ীর দলিল সঙ্গে কেন ?”

সিতাংশুর মনে পড়ে গেল সেটা কোটের পকেটেই আছে । বিব্রত হয়ে বললে, “যাকে দিতে চাইলাম সে নিলে না, কি করব বলুন ?” “রাস্তায় ফেলে দিলেই পারতে।" *রাস্তায় ? যে কেউ কুড়িয়ে---” *তাতে তোমার কি ? তোমার কাছে ওর দাম থাকা উচিত নয়।” “তাহলে এটা ফেলেই দি " "ফেলব বললেই ফেলতে পারবে কি ?” সিতাংশু পকেট থেকে বার ক’রে ঘরের মেঝেয় ফেলে দিলে। স্বামীজী হাসতে হাসতে বললেন, “হ’ল না ; ও ত তোমারই রয়ে গেল। কারও নামে লিখে দাও।” সিতাংশু স্বামীজীর নামে লিখে দিল । “বেশ ! কিন্তু এ ছাড়া আরও কিছু নেই কি ?” "কই মনে ত হচ্ছে না ; আপনি বলে দিন ।” “কোন লোকের কথা মাঝে মাঝে মনে পড়ে ?”

  • আঞ্জে না।” "অত তাড়াতাড়ি জবাব দিও না, ভেবে দেখ ! মনে হয় না কেউ হয়ত কঁাদছে, কার উপর হয়ত অন্যায় করেছ ?... আমার যেন মনে হচ্ছে অনেক দূরে কোথাও কেউ তোমার জন্যে র্কাদছে ।”

আমি ইচ্ছে ক'রে কাউকে দুঃখ দিই নি—কেউ যদি মন-গড়া দুঃখ নিয়ে কাদে, তার দিকে তাকাতে গেলে পথ চলব কি ক'রে ?” ”কারও দুঃখেই যদি কঁদিতে না শিখলে তাহ’লে পথ চলে লাভ ?” সিতাংশু জবাব খুঁজে পেল না, কিছুক্ষণ চুপ ক'রে বসে রইল। স্বামীজী তার দিকে চেয়ে বললেন, “সত্যিই তাকে দুঃখ দাও নি—অস্তত: তার দুঃখের জন্তে সে কি তোমায় মোটেই দায়ী করতে পারে না ?” সিতাংশুর মনে হ’ল সন্ন্যাসীর কথাগুলো তাকে অভিভূত ক’রে ফেলছে ; সে. বললে, “আমায়ু ভাবতে সময় দিন ।” “আচ্ছ, আজ যাও, কিন্তু কথাগুলো স্থির মনে ভেবে দেখ, বিচার করে, তার পর এস।” সিতাংশু প্রণাম ক'রে চলে গেল। তার সঙ্গীদের খোঞ্জ নেবার মত মনের অবস্থাও তার আর ছিল না। তার মনে হচ্ছিল, সন্ন্যাসী যাদুকর, তাকে সম্মোহন করেছেন। সে তার কথাগুলো যত ভুলবার চেষ্টা করেছিল সেগুলো তাকে ততই পেয়ে বসছিল । সে ভাবছিল, কয়দিন আগে নিশাও তাকে এই সব কথা বলেছিল, তখন সে তাকে ধমক দিয়েছিল। 臺 粵 鬍 ডাক্তার চ্যাটার্জীর বাড়ীর সামনে রোজ যেমন ভিড় হয় তেমনি হয়েছিল। ভোরবেল থেকে লোক আসে আর বেল একটা পৰ্য্যস্ত র্তার নিঃশ্বাস ফেলবার সময় থাকে না। কত দূর দূর জায়গা থেকে লোক আসে, কাউকে ফেরালে চলে না । এক-এক দিন এত বেলা হয়ে যায় যে তার মা রাগ করতে থাকেন । আগে অাগে ডাক্তার হেসে উড়িয়ে দিতেন, কারণ তিনি সকাল-সকাল খেয়ে নিলেও র্তার মার খেতে বসতে তিনটে বাঞ্জবেই ; কিন্তু আজকাল আর তা হয় না । মা ছাড়া আরও একজনকে আজকাল তার জন্যে অকারণ কষ্ট ভোগ করতে হয়। শুধু শুধু কাউকে কষ্ট দিতে তিনি রাজী নন । বেলা দশটা বেজে গিয়েছিল তাই তিনি খুব তাড়াতাড়ি কাজ সেরে নিচ্ছিলেন। যে কয়জন লোক ছিল তাদের দেখে শেষ করতে আর বেশ সময় লাগবে না, কিন্তু তাদের দেখে শেষ করবার অাগেই একটা গরুর গাড়ী এসে দাড়াল । ডাক্তার চ্যাটাজি যে একটু বিরক্ত হন নি তা বলা যায় না। তিনি ভেবেছিলেন, ঐ দেশেরই কোন লোক, কিন্তু লোকটি অচেনা বাঙালী দেখে তিনি একটুও আশ্চর্ষ্য হলেন না । জিজ্ঞেস করলেন, “কোথা থেকে আসছেন ?” “প্রায় ক্রোশ-ছয়েক দূর থেকে ” “কি হয়েছে বলুন ত " “ঠিক ত বুঝতে পারছি না, তবে চোখে অসহ যন্ত্রণা হচ্ছে ।”