পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান জগদ্ব্যাপী দুৰ্গতি য়ুরোপের কোন মধুমী ভক্তকে লিখিত পত্র ) ་ལམ་༽ শক্ষিতিমোহন সেন -_ অনেক দিন হয় আপনার পর পেয়েছি। এত দিন উত্তর ন-দেওয়া যে কত বড় অন্যায় হয়েছে তাই ভাবছি। এতদিন আমি বাংলার স্বত্বর সব গ্রামে গ্রামে আউলবাউল দরবেশ সাধুদের মধ্যে ছিলাম। তাদের সাধন নিত্য কালের, কাজেই কালের তাগিদ সেখানে পরাহত। তাত পত্রের উত্তর না দেওয়ার জন্তু আমাকে ক্ষমা করবেন * আশা করি। এক এক সময় মনে হয় এই সব সাধু-সন্তর জগতের কি ༽༩༧་༣་། ? জগতে যখন সাদাসিধা ভাবের ( simplicity ) যুগ ছিল তখন এই সব ভাবুকতা ( mysticism ) হয়তো বা মানাত । কিন্তু আজ জগৎ জুড়ে যে দুঃখ-দুৰ্গতির বস্থা চলেছে, পৃথিবীর বুকের উপর দিয়ে যে রুদ্রশক্তির তাণ্ডব লীলা চলেছে, তার মধ্যে এই সব ভাবুকতার কি কোনো স্থান আছে ? মানবের হাতে মানব-সভ্যতার এই যে নিগ্ৰহ, এই যে সব দুঃখ-শোক-যাতনা, এর মধ্যে কি এই সব মিষ্টিক সাধনা একটা বিলাসিত নয় ? পৃথিবীতে আগেকার যুগেও যুদ্ধবিগ্রহ ছিল। তখন পরম্পরে অনেক মারামারি কাটাকাটি হয়েছে। কিন্তু সে-সব জিনিষ আজকার বিপদের কাছে কিছুই নয়। আজ যে প্ৰলয় আসছে বিরাট তার আয়তন, বীভৎস তার ধ্বংসলীলা। ” § প্ৰলয় অন্ম তার কাছে সে-যুগের সেসব যুদ্ধবিগ্রহ অতি তুচ্ছ । "এই বিশাল বিনিপাত যখন আসবে তখন এক সঙ্গে তাবৎ মানব-সভ্যতাকে ধ্বংস করে তবে মঞ্জ-এখনকার যুগের সমগ্র মান-ইতিহাস যেন একটা দা র মত বিশ্ববিধাতার প্রচ্ছন্ন নিৰ্ম্মম ঘা খোয় নি ব মরবার দিকে ধেয়ে চলেছে। - জগতে যখন সভ্যতার এতদূর উন্নতি (t) হয় নি তখন মানব-সভাত যেন ছোট ছোট নৌকাতে যাতায়াত করত। T তখন তার আয়তন, তার পাঙ্গ-মাস্থল এত বিপুল ছিল না। যদি গুপ্ত শৈলের আঘাতে কোনো নৌকা ডুবে মরত তবে ক্ষতিটা এমন নিদারুণ হ’ত না, কারণ প্রত্যেকটি নৌকা ছিল আপন ক্ষুদ্রতায় সীমাবদ্ধ। مئة কিন্তু আজ মানব-সাধনার বিপুল বিস্তার নি বেড়েই চলেছে। তার এই সব বিস্তার, জাতীয়ত, সাম্রাজ্যবাদ প্রভৃতির নামে দিন দিন আপনাকে স্ফীত ক'রে তুলবে। জলদৈত্য অক্টোপসের মত তার বজব), সারা জগৎকে পাশবদ্ধ করে টেনে আনছে। মানব-সাধ-রে , জাহাজ আজ বিপুলকায়। বিজ্ঞানের বলে তার পলিগুলি আজ রসাতল হ’তে অন্তরীক্ষ পৰ্য্যন্ত পরিব্যাপ্ত । সৰ্ব্বভাবে আজ সে বিস্তারলাভ করেছে। পৃথিবীর যত সব নিগূঢ় শক্তি, সবগুলিকে মুক্ত ক'রে ঐ পালের উপর ঝড়ের বেগে এনে ফেলা হচ্ছে। সবই বিজ্ঞানের কাজ । শক্তির ও বেগের আর অন্ত নেই। অথচ এই জাহাজে কোনো হাল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, মানবসভ্যতার জাহাজ আজ কর্ণধারহীন-dereliot । ধৰ্ম্মের বা নীতির কোনো চালনা এর স্বীকার করতে নারাজ । গুপ্ত মৃত্যু-শৈলে ঘা খেলে এই জাহাজ সমস্ত জগৎকে নিয়ে ডুবে মরবে। তাতে যা প্রলয় হবে, টাইটানিক প্রভৃতির ধ্বংসলীলা তার কাছে কিছুই নয়। তার প্রলয়-সঙ্ঘর্ষে পৃথিবীর সব সভ্যতা চূৰ্ণবিচূর্ণ হবেই। রক্ষার আর কোনো পথ দেখা যাচ্ছে না। আজকার দিনের বিজ্ঞানের প্রলয় শক্তিকে ঠেকাবার সাধ্য কারো নেই। পৃথিবীকে আজ এই কর্ণধারহীন এমন এক অন্ধ উদ্ধৃঙ্খল শক্তির হাতে সঁপে দেওয়া হয়েছে যা স্বধু ধ্বংসই ৰূরতে জানে ; স্বষ্টির সামর্থ্য, প্রাণ দেবার, গড়ে তুলবার, শক্তি যার ন! ৷