পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b〜b〜B প্রবণসী SN983 অবস্থা ঘটান যায়, যে, যে খাটিবে না সে থাইতে পাইবে না— যেমন শুনিতে পাই রাশিয়ায় হইয়াছে, তাহ হইলে আলস্তের প্রতিকার হয় বটে ; কিন্তু যদি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ব্যবস্থা এরূপ হয়, যে, যে খাটিবে না সে থাইতে পাইবে না, তাহা হইলে তাহার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবস্থাও হওয়া চাই, যে, যে খাটিবে সে খাইতেও পাইবে এবং সকল মানুষকেই কিছু কাজ দিতে হইবে, কেহ বেকার থাকিবে না। শুনা যায়, রাশিয়ায় বেকার-সমস্যা নাই ; কিন্তু অন্য দিকে ইহাও শুনা যায়, যে, তথায় নূতন আমলেও দুর্ভিক্ষে বহু লক্ষ লোকের মৃত্যু হইয়াছে । যাক্ সে কথা । যে-কোন সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বলে পরিশ্রম না করিয়াও এক এক শ্রেণীর লোকের প্রভূত আয় হইতে পারে, তাহা এই কারণে অকল্যাণকর ও নিন্দনীয়, যে, তাহা অালস্ত উৎপন্ন করে ও তাহাকে প্রশ্রয় দেয় । আলস্য বহু দোষের আকর । জমিদারি ঐরূপ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পুজি দ্বারা কোম্পানীর কাগজ কিনিয়া বা তাহা ব্যাঙ্কে জমা রাখিয় তাহার হদ হইতে অর্থলাভ ঐরূপ আর একটি আলস্যজনক প্রথা ও ব্যবস্থা । ভারতবর্ষের যে কয়টি প্রদেশে রায়তদের দুঃখ মোচনের CEष्ट इद्दे उरझ কার রায়তদের ও রায়তবন্ধুদের মনের ভাব যেন এইরূপ, যে, জমিদারদিগকে উৎখাত করিতে পারিলেই যেন রায়তদের কল্যাণ স্বতঃসিদ্ধ হইবে । তাহ। কিন্তু সত্য নয় । ভারতবর্ষের যে-সব জায়গায় জমির চিরন্থ:ী বন্দোবস্তের সুবিধাভোগী জমিদার নাই, সেখানেও প্রজাদের বহু দুঃখ আছে । অতএব রায়তদের উন্নতি বাস্তবিক কিসে কিসে হয় তাহা স্থির করিয়া সমুচিত উপায় অবলম্বন করিতে হইবে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের যেখানে প্রচলন সেখানকার প্রজার অন্য সব স্থানের রায়তদের চেয়ে কম বা বেশ খাজনা দেয়, তাহাও দেখা উচিত। যাহার। জমিদারদের স্বত্ব লোপ করিতে ইতস্তত: করে না, তাহাদের মনে রাখা উচিত, যে, অনেকে নিজে বা অনেকের পূর্বপুরুষ অন্য উপায়ে ( ওকালত, ব্যারিষ্টরী, e yع ডাক্তারী, এঞ্জিনিয়ারী, ঠিকাদারী, বা কোন প্রকার বাণিজ্য দ্বারা ) টাকা রোজগার করিয়া সঞ্চিত টাকা দিয়া জমিদারী কিনিয়াছে । তাহীদের স্বত্ব লোপ করিতে হইলে খেসারৎ দেওয়া উচিত। যদি কেহ উত্তরাধিকারস্থত্রেই জমিদারী পাইয়া থাকে, যদি কাহারও পূৰ্ব্বপুরুষ লর্ড কর্ণওয়ালিসের আমলে জমিদার হইয়া থাকে এবং তদবধি জমিদারীটা সেই বংশের সম্পত্তি হইয়া আসিয়া থাকে, তাহা হইলে এই উভয়বিধ লোকের স্বত্বই বা বিনা-ক্ষতিপূরণে কেন কাড়িয়া লওয়া হইবে ? কাহারও পৈত্রিক ঘরবাড়ী বা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ব্যবসা বা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত টাকাকড়ি ত তুল্যমূল্য কিছু না-দিয়া কাড়িয়া লণ্ডয়া হয় না ? আমরা একথা ভুলিয়া যাইতেছি না, ধে, যে-সব রায়ত জমি চলে, তাহাদের পরিশ্রমের ফল তাহারা যথেষ্ট পরিমাণে পায় না। তাহা যথেষ্ট অবশুই করিয়া দেওয়া উচিত। কিন্তু কেহ জমি চষিলেই তাহাকে তাহার মালিক গণ্য করা যাইতে পারে না । ইহা বুঝাইবার নিমিত্ত একটি দৃষ্টান্ত দিতেছি । এক জন লোক নিজের টাকায় কারখানার বাড়ী নিৰ্ম্মাণ করাইল এবং পণ্যদ্রব্য উৎপাদনের জন্য যন্ত্রপাতি কিনিয়া কারখানার ঘরে বসাইল । পরে কারিগর ও মজুর লাগাইয়া সে পণ্যদ্রব্য উৎপন্ন করিয়া তাহা বিক্ৰী করিতে লাগিল । কারিগর ও মজুরের পরিশ্রম করিয়া পণাস্ত্রব্য উৎপাদন করিতেছে বলিয়া কারখানার বাড়ীটা ও যন্ত্রপাতি তাহাদের সম্পত্তি বিবেচিত হইতে পারে না—তাহারা কেবল যথেষ্ট পারিশ্রমিক দাবী করিতে পারে। ইহা সত্যু বটে, যে, রাশিয়ার কারখানাগুলি রাষ্ট্রের সম্পত্তি, ব্যক্তিবিশেষের নহে। সেরূপ ব্যবস্থা বিপ্লবের ফলে ঘটিয়াছে। অন্যত্রও বিপ্লবের দ্বারা সেরূপ ব্যবস্থা হইতে পারে, কিংবা আইন করিয়া সমুদয় পণ্যশিল্পের কারখানা । রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে পরিণত হইতে পারে । সেরূপ আইন ন্যায়সঙ্গত ভাবে করিতে হইলে কারখানাসমূহের ভূতপূৰ্ব্ব মালিকদিগকে খেসারৎ দিতে হইবে । এইরূপ, সমুদয় জমিও দুই প্রকারে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হইতে পারে। বিপ্লবের ফলে হইতে পারে—যেমন শুনা যায় রাশিয়ায় কতকটা হইয়াছে, এবং আইনের দ্বারা জমিদারদিগকে খেসারৎ দিয়া হইতে পারে। যদি ভোটের জোরে এমন