পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন আইন করা যায়, যে, জমিদাররা কোন ক্ষতিপূরণ পাইবে না অথচ তাহাদের কোন একটা স্বত্ব বা সমুদয় স্বত্ব লুপ্ত হইবে, তাহা হইলে তাহী বিপ্লবেরই সমান । বিপ্লব “বেঁচে থাকু বিপ্লব” “ইনকিলাব জিন্দাবাদ—” শুনিতে বেশ, খুব স্থলুক হয় । কিন্তু ইহার সঙ্গে কত নরহত্য, কত রক্তপাত, কত অন্য দুষ্কার্য্য জড়িত থাকে, তাহ; ভুলিলে চলিবে না। আজকাল ধৰ্ম্মের দোহাই বেশী লোকে মানিতে চায় না। কিন্তু ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে প্রভেদ লুপ্ত হয় নাই । যাহা ন্যায়সঙ্গত নহে তাহা করিলে শীঘ্র বা বিলম্বে তাহার প্রতিক্রিয়া হইবেই। নরহত্য ও রক্তপাত এক পক্ষ করিলে অন্য পক্ষও সুযোগ পাইলে তাহা করিবে। বিপ্লবও দু-রকমের হয় । ফ্রান্সে খ্ৰীষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে যে বিপ্লবের স্বত্রপাত হয়, বৰ্ত্তমান শতাব্দীতে রাশিয়ায় যে বিপ্লব হইয়াছে, তাহা সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ দের বিপ্লব। অনেক নরহত্যা করিয়া তাহ ঘটাইতে হইয়াছে।" রাশিয়ায় হত্যার জের এখনও মিটে নাই। যে-বিপ্লব রক্তপাত করিয়া ঘটান হষ্টয়াছিল, তাহাকে রক্ষা করিবার নিমিত্ত আরও রক্তপাত চলিতেছে । অন্যবিধ বিপ্লব সংখ্যাগরিষ্ঠদের প্রভুত্ব স্থাপনের জন্য বিপ্লব নহে, সংখ্যালঘু কতকগুলি লোকের প্রভুত্ব স্থাপন ও রক্ষার জন্তু ইহা ঘটিয়া থাকে বা ঘটান হইয়া থাকে ; যেমন ইটালীতে ফাসিষ্ট বিপ্লব, জাৰ্ম্মেনীতে । নাৎসী বিপ্লব। স্পেনে সংখ্যাগরিষ্ঠদের প্রভুত্ব স্থাপিত হইয়াছিল, কিন্তু এখন যুদ্ধ চলিতেছে ইটালীর ফাসিষ্ট ও জাৰ্ম্মেনীর নাৎসী প্রভুত্বের মত সংখ্যালঘু এক শ্রেণীর প্রভুত্ব স্থাপনের উদ্দেশে, এবং সেই জন্য স্পেনের বিদ্রোহীরা ইটালীর ও জাৰ্ম্মেণীর সাহায্য পাইয়া আসিতেছে । শুধু কারখানার শ্রমিকেরা ও তাহাদের মত লোকেরা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত হইবে, কিংবা কারখানার শ্রমিক ও মাঠের চাষীরাই রাষ্ট্রে সৰ্ব্বেসৰ্ব্বা হইবে, আর কোন শ্রেণীর লোক থাকিবে না, এ রকম রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ব্যবস্থা রাশিয়াতে বা অন্য কোন দেশে এখনও কায়েম হয় নাই ; আবার ইটালীর बिबिध প্রসঙ্গ—বিপ্লব b-ԵաQ ফাসিষ্ট প্রভুত্ব বা জামেনীর নাৎসী প্রভুত্বও নিরাপদ হইয়াছে মনে হয় না। রাশিয়ার বিপ্লবীদের ও কাল মার্কস্ প্রভৃতি যাহণদের মতের অমুসরণ তাহারা করিয়াছে, তাহাদের আদর্শ শ্রেণীবিহীন সমাজ (“classless Society) Gi আদর্শ রাশিয়াতেও বাস্তবে পরিণত হয় নাই । বস্তুত:, কোন শ্রেণীর লোককে বিনষ্ট বা দেশ হইতে “ বিতাড়িত করিয়া নিশ্চিহ্ন করিয়া ফেলা বা এক শ্রেণীর লোককে প্রভু করিয়া অন্য সকলকে শক্তিহীন ও পদানত করা ও রাখা, যাঙ্গর সংখ্যায় বেশী তাহীদের মত ও কাজকেই বিনা বিচারে দ্যtয্য বলিয়া মানিয়া লণ্ডয়—এবম্বিধ কোন পস্থা, আদর্শ, বা মত গ্রহণীয় ও অসুসরণীয় নহে। কেমন করিয়া যে সামাজিক সামঞ্জস্য রক্ষা করিয়া সমাজকে সুস্থ, জীবস্ত ও প্রগতিশীল রাখা যায়, তাহ বলা বড় কঠিন। যাহার প্রাণ আছে, তাহা বরাবর ঠিক এক অবস্থায় থাকিতে পারে না । জীবন্ত সমাজে পরিবর্তন অবশুম্ভাবী। জীবস্ত রাষ্ট্রেও পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। রক্তাল্পত বিপ্লবের পথে না-গিয়৷ কেমন করিয়া এরূপ পরিবর্তন করা যাইতে পারে, তাহা নির্দেশ করা কঠিন—যদিও আদর্শ তাহাই হওয়া উচিত। ইউরোপে ফ্রান্স, রাশিয়া, ইটালী, জামেনী. সশস্ত্র বলপ্রয়োগ দ্বারা পরিবর্তন সাধন করিবার চেষ্টা শরিয়াছে, পরিবর্তন করিয়াছেও। কিন্তু কোথাও এখনও রক্তপাতের জেব মিটে নাই। অন্য কয়েকটি দেশ , প্রধানত: ব্যতিরেকেই আধুনিক যুগে পরিবর্তন কাটাছে—যেমন ডেন্মার্ক, নরওয়ে, স্বইডেন, বেলজিয়ম, ইংলণ্ড -- —যদিও এমন কোন দেশ নাই যাহার ইতিহাসে কোন-না-কোন যুগে রক্তপাতসহকারে বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয় নাই। কিন্তু মামুষের ইতিহাসের গোড়ার দিকে যাহা ঘটিয়াছে, তাহাকে আদর্শ মনে করা যাইতে পারে না। মানুষের ক্রমোন্নতি বাঞ্ছনীয়। ইতিহাসের অনেক ভীষণ বিপ্লবের সহিত জড়রাজ্যে ঝড় ভূমিকম্প অগ্ন্যুৎপাত জলপ্লাবনের সাদৃশ্ব আছে। জড়রাজ্যে এই সকল উৎপাত বিনাশ করে অনেক কিছু। কিন্তু . তাহারা যাহা বিনাশ করে, তাহার মধ্যে আবর্জনা ক্লেদ রোগবীজ অনেক থাকে। এবং বিনাশের সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত সৃষ্টণ্ড কিছু কিছু হয়। বহু বিপ্লব সম্বন্ধেও এইরূপ কথা বলা যায়। “ - {..." مرا به عه রক্তপাত