পাতা:প্রবাসী (সপ্তদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থা ইয়ে ইয়ে সমস্ত ধূলামাট নিজের অঙ্গে তুলে নিয়ে আমি চোখ বুঙ্গে আমার এতদিনের দুঃখে শোধ বেৰি অসংখ্য শিকড়ে বোন৷ হাড়-পাঁজরের মত কাঠামোখানা হয় সেই কদিনেই তুলে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অন্ত আদরের ঘটা বেশী বাড়লে হয়ত তাকে একদিন মুনা সে সোনার ভাৱে সইবে কেন ? তার সশরীরেই নীৱ কোলে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই বট ছিড়ে গেল, আমার আনন্দ-গানও সেই থেকে থেমে গেছে গাছের তলায় দুখানা বড় পাথর জোড়া দিয়ে এখনকার আমাদের ছেলে-খেলার দিনগুলো হাসি আয় গানে ঘাট। সেদিন খুব ভোরে, নদীর জল তখনও উষার যখন ভরপুর হয়ে উঠেছে, তখন ঐ প্রকাও বাড়ীটায় এক আলোয় ব্লাঙা হয়ে ওঠেনি, ধূসর অঙ্গ মেলে দিয়ে তক্ষণ কোণে দাদামশায় তার শেষ শয্যায় অঙ্গণের প্রথম চুম্বনে ছির হয়ে ওঠবার অপেক্ষা কাছে নিজের আনন্দ নিয়ে কাটিয়ে সকাল-সন্ধ্যায় আমি রোজ আমবাগানে দোয়েল পাপিয়া সেই সবে সুৰ্য্যদেৰকে ডাক দুবার তার ঘরে খোঁজ নিতে যেতাম আমার দিকে চোখ ডাকি সুক্ক ফয়েছে , এখন সময় আমি ঘর ছেড়ে নদীর তুলে তাকাতে দাদামশায়ের শান্ত দৃষ্টি কেমন যেন কদৰ ঘাটের সেই পাথরের উপর গিয়ে বসেছিলাম। ভাবছিলাম হয়ে আসত, তিনি তার দুৰ্ব্বল হাতথানি তুলে আমায় মুখে আমায়াগোর কথা ; ত্ৰিকুলে কেউ আছে কি না জানি চোখে মাথায় এমন হেভরে বুলিয়ে দিতেন, যেন আমা। মা বলেই কপালগুণে যার ঘরে এসে পড়েছি, তারও দেহের সমস্ত মানি তার হাতের স্পশে দূর হয়ে যাবে ছেদিন পরে সন্ধ্যা-প্ৰদীপ জ্বালাবােৱ লোক জুটবে কি না আমি জানতাম, পৃথিবীর কাছ থেকে বিদায় নেৰায় দিনে কলা ভাৱ। হাত দিয়ে নদীর জল কাটতে কাটতে পরপারের কথার চেয়ে তিনি তার আশ্ৰিতা দুঃখিনীর কথাই এখনি কত কি ভাবছিলাম, পায়ের শব্দে চোখ তুলে হঠাৎ বেশী ভাবেন এই বয়সে দরিদ্রার এই অসহায় অনাথ চাইতে দেখি তৰুণ ব্ৰহ্মচারীর মত দীপ্তমূৰ্ত্তি তুমি সেই মেয়েটিকে কার কাছে ফেলে যাবেন, সেই ভাবনাতেই পায়ে-হাটা পথে নদীয় দিকে এগিয়ে আসছ । উদার ঠাৱ আয়ু যেন আরো শীঘ্ৰ শেষ হয়ে আসছিল। আদি পালো চোখে পড়বার আগেই তোমার সঙ্গে সেই আমার জানতাম, আমার নীচকুলে জন্ম, দাদামশারের মত উদা প্ৰথম শুভদৃষ্টি । জানি না সে কি অশুভক্ষণে ঘটে মহৎ পুকৃষও যখন খাবার আগে আমায় চলে স্নান কয়ন্তে, তার পর যখন জানলাম, এ বাড়ীতে নবীন আর প্রবীণ তখন আর-কোনো ভদ্ৰলোক ত আমায় ঘরে ঠাইও মেয়ে বন্ত তুমি আর দাদামশায় এই দুটিমাত্ৰ আমার “পাবার না। কিন্তু তোমার সঙ্গে মিলনের সে কটা দিন ভাষায় সী, তখন প্ৰবীণকে বাদ দিয়ে আমি তোমাকেই বেছে ওসৰ কথা ভাববারও অবসর ছিল না । দাদামশায় তুমিও আমাকেই বেভচ্ছ নিলে। তোমাকু সঙ্গ সময় অামাকে কাছে টেনে বসিয়ে কি যেন একটা পেয়ে আমার চিরদিনের বাইরের হাসি ক’দিনের জন্তে বলবার ব্যৰ্থ প্ৰয়াস করতেন, তার চোখে সে কথা প্ৰা আবারের হয়ে উঠে আমার. ভিতর-বাহির আলোয় আলে ফুটে উঠত, আমার কাছে—তার এই আশ্ৰিতার করে দিলে। সে কদিনের জন্তে আমার সব দুঃখ আমি তার যেন কি একটা নিবেদন আছে মনে হ’ত, দি বিসৰ্জ্জন দিয়েছিলাম ; মনের কোনো কোণে এতটুকু আমার তখন সে বৃদ্ধের চোখের কায়ার ভাবা পড়া দুঃখও মুখ আঁধার করে ছিল না। খাটে, পথে, মাঠে সময়ও ছিল না, ইচ্ছাও ছিল না। তোমার তক্ষণ চোখে দিনগুলো যে কেমন করে কেটে গোল , তা আমি একবার যে নিত্য নুতন ভাষা শতদল-পদ্মের মত হাজার কথাটি টোেৱও পেলাম না এখন শুধু মনে হয়, কোন সুদূর তুলত, আমার সমস্ত মন তখন সেই দিকে। হেসে ৈ অতীতে স্বপ্নের ঘোরে তারা দেখা দিয়েছিল, আবার চোখ কথা বলে, মাথার বালিশ কটা গুছিয়ে দিয়ে, বিছানা না মেলতেই সোনায় পাখা মেলে নিশেষে কথন আকাশের চাদরটা একটু কেড়ে দিয়ে, আমি যখন থিওগতিতে গাৱে মিলিয়ে গেছে। স্মৃতি হয়ে পড়ে আছে শুধু তাদের ঘর বােরাদা পার হয়ে নিজের মনে চলে বেতা, তা নাসা এফাট পালক। আমার পিছনে যে কত দীৰ্ঘশ্বাস শূন্তে মিলিয়ে যে, ৪৫১ নেই। আল চোখে না দেখেও সে সমস্তই আমার হৃদয়ের কোনো গোপন দুঃখ আমাদের হাসির খায়ে আধা পরিষ্কার ভেসে উঠছে, কিন্তু সেদিন চোখে অ জেগে উঠেছে । আমিই কি সে দুঃখেয় কারণ ? চেয়ে দেখতাম না বোধ হয় সেদিন আর কারুর সঙ্গে কথা কইনি। নদীর ধাৱে সেই যে একদিন পদ্মবনের ধারে দাসের উপর বসে পাথরের বারান্দায় একলাট মুখ আঁধার করে বসে রইলাম। । ৰাতে আমাতে প্ৰকাণ্ড পদ্মফুলের মালা গেঁথেছিলাম কেৰলি মনে হছিল, কি একটা কঠিন দুঃখের অগ্ৰদূত দিনকার কথা তোমার মনে আছে কি ? একই সুতো আজ দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে আমার সমস্ত শী শিৱে মুখ দিয়ে দুজনে ফুল পরিয়ে পরিয়ে মালাটা বড় করে উঠছিল। কি সে দুঃখ, যা আমার মাথার উপর উদ্ধা ছিলাম পাছে দুজনের ফুল মিশে যায় বলে মাঝখানে হয়ে আছে ? কিসের জন্যে প্ৰস্তুত হব ? একবার মনে একটা বড় ফোটাফুল দুলিয়ে দিয়েছিলাম দাদামশায় হ’ল তুমি বুকি আমার নানে কোনো কথা দাদামশায়ে বড় ভালবাসতেন, তাই আমি মালাটা নিয়ে তার কাছে বলেছ। কিন্তু ভেবে দেখলাম, আমি খলে৷ গিয়ে হাজির হলাম। তিনি মুখ ফিরিয়ে শুয়ে ছিলেন । তোমার কাছে কোনো অপরাধ করিনি । অয়ে কি ? ডেকে বল্লা, “দেখ দাদামশায়, কত বড় মালা , এই দাদামশায়ের কাছেও ত কোনো দোষ হয়নি। তৰে বি পুরলে আমার পা পৰ্যন্ত পড়ে । আমার মায়ের তা হয়েছে ! সেই খবরটা আমাকে দোয় তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, “পরের আড়ালে জলে দাদামশায় অত করে আমায় প্ৰস্তুত কছিলেন। লুকিয়ে গেলিৱে ! একেবারে দেবী সরস্বতী ! এত ফুল সেই কোন শিশুকালে মাকে দেখেছি, মায়ের সেই অঞ্চ সজল মুখ মনে পড়ল, কিন্তু আজ ভ সেই সেদিনের তোমার নাতি শঙ্কর প্রসাদ দুই চোখ বেয়ে জল নেমে এল না। আমার আয় আপনার মনে হ’ল দাদামশাধের রক্তহীন মুখ যেন আরো বলতে কেউ নেই মনে করে দুঃখ হ’ল বটে, কিন্তু সেটা বিবৰ্ণ হয়ে গেল। তবু তিনি হেসে আগে তেৰে-চিন্ত দেখবার পর বেদিন চোখেয় জলে ছন্দা দিদি, তোমরা যে হেসে খেলেই দিনগুলো মাকে বিদায় দিয়েছিলাম, সে দিনকাণকথা মনে পড়ল । করলে দেখছি। তা প্ৰতিদিনই সকাল সন্ধো মা ত অামাকে লোককে দিয়ে দিয়েছে, সে মায়ের জে হাসি খেলা কি ভাল ? এর পর, বড় হচ্ছে, তাতো বাদতে যাৰ কেন ? কেন, গরীবের ঘরে কি আধা ভাৰনা চিন্তা আছে, সুখ দুঃখ আছে, সেদিকেও ত এক মুঠো অম্বুও জটত না ? যায় যা খুী হোক, আমি ইতে হবে ? পৃথিবীটা ত শুধু হাসি দিয়ে গড়া নয় ; কিছুতেই কঁাদৰ না । শত হয়ে বসে আমি দাদামশায়ে জিনিবেরও সেখানে অভাব নেই। হেসেই যদি ভয় দেখানো কথাগুলো মন থেকে দূর কয়ে দিলা । কাটে, তবে কায়ার দিনে দুঃখ বড় কঠিনৱপে দেখা তার পরদিন থেকেই আমাদের অজস্ৰ আনন্দের লোতে বেদনার সে আঘাত সইতে পারবে কি না বলা শক্ত মন্দা পড়ে গেল। আমিই সব-তাতে গাচিলে দিতে কে দিদি তোমায় দেখে কথাগুলো মনে হ’ল তাই বল্লাম । করলাম। যেন এককোণে বসে আপন মনে কাজক । কঙ্গন, তোমার যেন দুঃখের দিন না আসে। তবু করাই আমার চিরদিনের অভ্যাস, এমনি ভাবে না। হওয়া ভাল যা তা নিয়ে সারা দিন কাটিয়ে দিতাম। তুমি ভাষা আমি ফুলের মালাটা দেয়ালে টাঙিয়ে দিয়ে চলে এলাম কাও দেখে অবাক হয়ে ফিরে যেতে ; কখনো যদি বা কিছু আমাদের প্রতি-অঙ্গই তার কাছে আমাদের আনন্দ বলতে, আমি এক মুখ হেসেই উত্তর দিতাম , কিন্তু আগে কথা জানিয়ে দিয়েছে। ভাৱ কোণের ঘরটিতেও মত তেমন সহজ আনন্দের উদাস আর বইল না হাসিব চেষ্ট বাতাসের সঙ্গে ভেসে গিয়েছে। কিন্তু কদিন ধরে আমার ব্যবহার লক্ষ্য কয়ে ; যেদিন বালি আনন্দ তাকে সুখ দেয়নি, বেদনাই দিয়েছে। তার সকাল বেলা তুমি গিয়ে সারা সকালটাই দাদামশায়ে স্বয়ে