পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38e সম্পাদকড অধিক স্থলে করেন । প্রত্যেক প্রদেশের লোক যদি নিজেদের সব রকম কাজ নিজেরাই করিতে পারেন, তাহাই সাধারণতঃ সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট অবস্থা ও ব্যবস্থা। কিন্তু যদি কোন প্রদেশের লোককে কোন কাজের জন্য অন্য কোন প্রদেশের লোক আমদানী করিতে হয়, তাহা হইলে যেপ্রদেশ নিকটতর, তাহা উল্লঙ্ঘন করিয়া যদি দূৰতর প্রদেশ হইতে লোক আনিতে হয়, তবে বুঝিতে হইবে নিকটতর প্রদেশের লোকের অযোগ্যতা বা অন্য বোন দোষ ঘটিয়াছে। বর্তমান সময়ে দেখিতে পাই, আগ্র-অযোধ্যা, দিল্পী ও পঞ্জাবে, হয়ত বিহারেও, বাংলা ডিঙাষ্টয়া মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সী হইতে সাংবাদিকরা গিয়া কাজ করিতেছেন। অন্য যে-কোন প্রদেশের লোক যত উন্নতি করিতে পারেন করুন, তাহাতে সস্তোব ভিন্ন অসন্তোষের কোন কারণ নাই । কিন্তু যখন আমরা দেখিতেছি, যে, যে-কারণেই হউক, উত্তর ভারতে বাঙালী সাংবাদিকের স্থান না হইয়া অন্ত প্রদেশের সাংবাদিকের স্থান হইতেছে, এমন কি বাংলাদেশেই একজন মাম্রাজী সাংবাদিক পঞ্চাশ টাকার রিপোর্টারী হইতে আরম্ভ করিয়া একখানি প্রাচীন ইংরেজী দৈনিকের অন্যতর সম্পাদক ও মালিক পর্ষ্যস্ত হুইয়াছিলেন, তখন বাঙালীকে ভাবিয়া দেখিতে হইবে, কেন এরূপ হইতেছে । কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতকগুলি প্রধান অধ্যাপকের পদে কয়েকজন অবাঙালী অধিষ্ঠিত আছেন । র্তাহারা যোগ্য কি অধোগ্য, তাহ বলিবার বা প্রমাণ করিবার আমাদের প্রয়োজন নাই। আমরা কেবল ইহাই জিজ্ঞাসা করিতে চাই, যে, বাঙালী নিজের বাড়ীতে কেন পরাজিত হইলেন ? সাংবাদিকের কাজেও তেমনি বাঙাষ্ঠীদের পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান ও নির্ণয় করা আবশুক । আমরা সম্প্রতি এলাহাবাদ গিয়াছিলাম। সেখানে শিক্ষাদানকার্ষ্যে ব্রত স্ববিখ্যাত কোন অধ্যাপকের মুখে শুনিয়া আসিলাম, এলাহাবাদে যে সিবিলসার্বিসাদির জন্তু সমগ্রভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা গৃহীত হয়, তাঙ্কার কোন ইংরেজ পরীক্ষক বলিয়াছেন, বাঙালী পরীক্ষার্থী ছেলেদিগকে দেখিয় বেশ বুদ্ধিমান বলিয়া ধারণা হয় ; কিন্তু তাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য পুস্তকের প্রবাণী—বৈশাখ, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড বাহিরের অনেক জ্ঞাতব্য জিনিষ পড়ে নাই, জানে না, সমসাময়িক নানা জাগতিক ব্যাপারের বিষয় অবগত নহে। ইহা সত্য হইতে পারে । কারণ, আমাদিগকে একজন ভারতীয় পুস্তক প্রকাশক একবার বলিয়াছিলেন, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তক ছাড়া অন্ত জ্ঞানগর্ভ ইংরেজী বহি ( অবশু বাজে উপন্যাসের কথা তিনি বগেন নাই ) বাংলা দেশে সকলের চেয়ে কম বিক্ৰী হয়। ইংরেজী পুস্তক প্রকাশ ও বিক্ৰী হইতে আমাদের নিজের যাহা অভিজ্ঞতা জন্মিয়াছে, তাহাও ঐরূপ। আমরা যে মডার্ন রিভিউ নামক মাসিক কাগজ বাহির করি, তাহার গ্রাহকও বাংলা দেশেই সবচেয়ে কম, যদিও ভারতবর্ষের দেশী সব ইংরেজী মাসিকের মধ্যে ইহারই কাটুতি বেশী । ইহার সম্পাদকীয় লেখার অপকর্ষ বা উৎকর্ষের বিচারক আমরা নহি ; কিন্তু ইহার প্রধান প্রধান লেখকদের যে-সব প্রবন্ধ মুদ্রিত হয়, এবং ইহাতে যত নিৰ্ব্বাচিত প্রবন্ধাংশ ছাপা হয়, তাহা পড়িলে পৃথিবীর নানাবিষয়ে যত জ্ঞান জন্মে, অন্য কোন ভারতীয় মাসিক পড়িলে তত জ্ঞান জন্মে না বলিলে সত্য কথাই বলা হইবে । আমরা ইহা সম্ভব মনে করি, যে, বাঙালীর ছেলেরা মডার্ন রিভিউ ও অন্যান্ত ভাল ইংরেজী মাসিক পত্র কম পড়েন, হমভ প্রধানতঃ গল্প প্রধান বিলাতী বা দেশী মাসিক পড়েন, ইহা তাহাদের জাগতিক সমসাময়িক বিষয়ে অদ্য কোন কোন প্রদেশের ছেলেদের চেয়ে কম জ্ঞানের অন্যতম কারণ। যাহা হউক, কারণ সম্বন্ধে আমাদের হয় ত কিছু ভ্রম হইতে পারে, বিশেষতঃ মডার্ন রিভিউ প্রভৃতি মাসিক পত্র সম্বন্ধে আমাদের ধারণ হয় ত কতকটা প্রাস্ত হইতে পারে; কিন্তু ইহাতে কোন সন্দেহ নাই, যে, বাঙালীর ছেলেদের বুদ্ধি যেরূপ, জাগতিক নানা বিষয়ের জ্ঞান সেরূপ নহে । সম্ভবতঃ তাহদের জ্ঞানের এই অল্পতার জন্ত তাহারা বুদ্ধিমত্তা সত্বেও অনেক স্থলে প্রতিযোগিতায় পরান্ত হয়, এবং নানা বিবয়ে ওয়াকিফ-হাল না হওয়ায় তাহারা উৎকৃষ্ট সাংবাদিক হইতেও পারে না । আগে ভারতবর্ষের কোন প্রদেশেই ইংরেজী বিজ্ঞালয়ের জন্য শিক্ষক প্রস্তুত করিবার নিমিত্ত কলেজ ছিল ন। এখন সকল প্রদেশেই এইরূপ কলেজ স্থাপিত