পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] দেখাইত, *আচ্ছ, তোর পুতুলের হারছড়া একজন স্কুলের মেয়ে কুড়িয়ে পেলে তুই জানতে পারলে কি করিস }” নেলী স্বচ্ছদে উত্তর দিত—“সেই মেয়ের কাছ থেকে তখ খনি সেই পুতিরমাল ছিনিয়ে নেই ।” তখন হিরন্ময় হাসিয়া *নিজের হারানো জিনিষ দেখিতে পাইবামাত্র কাড়িয়া লইবার” দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করিতে গেলেই কিন্তু বিপদ ঘটিত। অর্থাৎ চোরাই মাল উদ্ধার করিবার জন্তই তাহাকে কিছু যুব দিতে হইত। যাহা হউক, অতঃপর একদা দ্বিপ্রহরে নেলীর অনুপস্থিতিতে হিরন্ময় তাহার হারানো কলমটি খুজিতে গিয়া নেলীর বাদামীরঙের খাত হাত ড়াইয়। কলমের পরিবর্তে সেই দুইছত্র কবিতা আবিষ্কার করিয়া বসিল এবং চোখেমুখে কৌতুকের এক ঝলক আভা লইয়া খাতা হাতে তখনকার মত নিজেরই পাঠগৃহে ফিরিয়া গেল । সেদিন ছিল হিরন্ময়ের শনিবারের পুরা ছুটি। বেলা দু’টার সময় ঝির সহিত আরো কতকগুলি সঙ্গিনীপরিবেষ্টিতা নেলী গল্প-হাস্তে রাজপথ মুখরিত করিয়া বাড়ী ফিরিতেছিল। হিংয়ের বিধবা পিসিমা এতক্ষণে ঘর-গৃহস্থাগার সমস্ত কাজকৰ্ম্ম সমাধা করিয়া জপতপ-অস্তে আহারে বসিয়াছিলেন ; হিরন্ময় নেপথ্যের সাড়া পাইয়া তৎক্ষণাং নিজের “মিণ্টন” বন্ধ রাখিয়া নেলীর সেই থাত লইয়া বসিল ; এবং খুব ঝুকিয়া-পড়িয়া মনোযোগী ছাত্রের স্থায় টানাস্বরে জোরে জোরে আবৃত্তি করিতে লাগিল – কুকুর সে জলে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে, ফেলে দিল মাংসখণ্ড যা ছিল তার মুখে । “শুগে তোমাদের নেগীকে পৌছে দিয়ে গেম্বু"— বাড়ীর বাহির হইতে অভিভাবকের উদ্দেশে এই বার্তা ঘোষণা করিয়া মেয়ের মূল লইয়। ঝি চলিরা গেল । নেলী লাফাইতে-লাফাইতে বাড়ীর উঠানে পা দিয়াই যেমন তার দাদার কণ্ঠের আবৃত্তি শুনিতে পাইল অমনি—"া-ম।—ই—ই।” করিতে করিতে দাদার ঘরে ঢুকিয়া দাদার সহিত কাড়াকড়ি স্বরু করিয়া দিল । অবগু শারীরিক বলের অভাব পুখুণ করিয়া ফেলিল কণ্ঠের প্রবল অমুনাসিক ধ্বনির দ্বারা। পিসিমা চীৎকার করিয়া উঠিলেন—“বলি হ্যারে হিরন্ময়, এই وف سے at প্রকাশকের বিড়ম্বন

  • సెరి

তিন’পর বেলা, এতক্ষণে যদি দুটো পিণ্ডির জোগাড়ে বস্লাম, তাও কি তোরা থিৱ হ’য়ে গিলতে দিবিনি ? তুই বুড়ো খোকা ঐ একরত্তি মেয়ের সঙ্গে লেগেচিস্ কিসের জন্যে ? অ সেজবেী, তোকে আর ছেলে নিয়ে ঘুম পাড়াতে হবে না, এলে নিজের বুড়ে খোকাথুকিদের সামাল দে । আমার এখন ওঠার জো নেই।” সেজবেীর-ওরফে হিরন্ময়ের মাতার কোনো সাড়া পাওয়া গেল না ; তিনি তখন খোকাকে ঘুম পাড়াইবার অজুহাতে নিজেই ঘুমে অচেতন । যাহা হউক, পিলিমার চীৎকারের ফল ফলিতে বিলম্ব হইল না। হিরন্ময় বিদ্রোহের সম্ভাবনায়ু ভীত হইয়া সহজেই সন্ধির প্রস্তাব স্বরু করিল। সে বলিল, “আচ্ছ, সত্যি বল দেখি নেলী, আমার হাড়ের কলমটা তুই নিয়েছিলি কি না । খুব সত্যি কথা বল, এই আমার চোখে চোখ রেখে । চোখের পলক পড়লেই বুঝ ব মিথ্যে বলছিস ।” ঠিক্‌ এইসময় হিরন্ময়ের সহপাঠী স্থধেন্দু দ্বার ঠেলিধা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিয়া উঠিল,—“ইস, কিসের জেরা চলছে ?” হিরন্ময় বলিল,—“যা চ’লে থাকে মাঝে মাঝে, অর্থাৎ আমার হাড়ের কলমটি থোয় গেছে।” স্বধেন্দু বলিল, “আর অম্নি তুমি নেলীকে ধ’রে পীড়ন স্বরু ক’রে দিয়েচ, এ তোমার ভারি অন্যায়। ও ছেলেমাহব, বোঝে না তাই। আমরা হ’লে.মানহানির মোকझध कद्रूङाभ ” স্বধেন্দুর ওকালতিতে অনেক সময় নেলী খুব সহজেই অব্যাহতি পাইত ; সেজন্য স্থধেন্দুকে সে প্রীতির চক্ষেই দেখিত । এখনও সে তার ভাতচকিত আঁখির দৃষ্টি স্বধেন্দুর মুখের উপর ধরিয়া সহজেই তার কুপাভিক্ষা করিল। স্বধেন্দু নেগীর হাত-দুটি ধরিয়া তাহাকে কোলের কাছে টানিয়া লইয়া সক্ষেহে জিজ্ঞাসা করিল —“নেলী, সত্যি কথা বল, কলম নিয়েছ, কি না ; তোমায়ু কালই আমি একটা হাড়ের কলম এনে দেব ।” নেলী মাথা হেলাইয়া স্বীকার করিল লইয়াছে। স্বধেন্দু কহিল, “কোথায় পেয়েছিলে ?” । নেলী কহিল, "স্নানের ঘরে ।”