পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সত্তর বৎসর ( ১৮৫৭–১৯২৭ ) ঐ বিপিনচন্দ্র পাল ঐহটে পঠদ্দশায় –১৮৬৬-১৮৭৪ ( পূৰ্ব্বাহুবৃত্তি ) ( ১১ ) এই প্রথম লেমনেড খাওয়ার প্রসঙ্গে আর একটা ঘটনা মনে পড়িল । সেই বছরেই বোধ হয়, কিংবা তার পরের বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে একদিন হঠাৎ অতি প্রতৃষি হইতে আমার পখিলা দাস্ত আরম্ভ হয় । বাবা এ সকল বিষয়ে সৰ্ব্বদা পুস্থায়ুপুঙ্খরূপে পরিবারবর্গের খবর রাখিতেন । কাহারও অতি সামান্ত অস্থখও প্রায় র্তাহার চক্ষু এড়াইতে পারিত না । এ সময়েও মা শ্রীহট্রের বাসায় ছিলেন না । আমি বাবার কাছেই শুষ্টতাম । অত ভোরে পায়খানায় যাইতেছি দেখিয়া বাবা শশব্যস্ত হইয়া আমার সঙ্গে উঠিয়া আসিলেন। চৈত্র-বৈশাখ মাসে শ্ৰীহট্টে প্রায় সৰ্ব্বদাই বিস্তুচিকার উপদ্রব হইত। এ বছরও সহরে কলেরা দেখা দিয়াছে । আমার সামান্ত পেটের অমুখেই বাবা অত্যন্ত ভয় পাইলেন । সেদিন কাছারীতে গেলেন না। এই জন্য আমার অসুখের কথা সহরময় ছড়াইয়া পড়িল । অপরাহ্লে আদালতের যত উকীল, হাকিম, ও অন্যান্য কৰ্ম্মচারী আমাকে দেখিতে আসিলেন । লোকে বাড়ী ভরিয়া গেল । আমার দাস্ত তখন প্রায় বন্ধ হইয়া আসিয়াছে। কিন্তু বেশ পিপাসা আছে। এই পিপাসার উপশমের জন্য ডাক্তার আমাকে লেমনেড দিতে বলিলেন । অমনি বাজার হইতে লেমনেড আসিল । অবশু মুসলমানের কলে, মুসলমানেরই তৈয়ারী, মুসলমানের ছোয় লেমনেড । বাবা কিন্তু নিজের হাতেই সেই লেমনেড গ্লাশে ঢালিয়া আমার মুখে ধরিলেন। এই লেমনেড খাইয়া যে মার খাইয়াছিলাম, তখনও সে-কথা ভূলি নাই। এবার বাবার উপরে তারই শোধ তুলিবার জন্ত সেই ঘর ভরা লোকের মাঝখানে, মুসলমানের ছোয়া

জল কিছুতেই মুখে লইব না বলিয়া মুখ ফিরাষ্টয়া রহিলাম। বাবা কহিলেন, “এ’তে দোষ নাই। ঔষধেতে এসকল আচার বিচার চলে না। ঔষধ সকল অবস্থাতেই নারায়ণের প্রসাদ বা চরণামৃতের মতন—ঔষধরূপে নারায়ণ ।” এইরূপে অনেক সাধ্য-সাধনার পরে আমি অনেক কেঁড়েলি করিয়া শেষে বাবার নিজের হাতে মুসলমানের লেমনেড খাইলাম । ( s२ ) বাবা এদিকে আমার জাতকুল রাখিবার জন্য ইংরেজী পড় বন্ধ করিতে চাহিয়াছিলেন । আবার অন্যদিকে এই লেমনেড ধাওয়ার কিছু দিন পূৰ্ব্বে বা পরে, পুত্র-স্নেহপরবশ হুইয়া অজ্ঞাতসারে আমাকে নিজের হাতে সাহেবীয়ানায় দীক্ষিত করিয়াছিলেন। এই সময়ে শ-সাহেব নামে এক ইংরেজ ঐ ট্টের জজ ছিলেন । তিনি সপরিবারে কিছু দিন শ্রীঃtট বাস করিয়াছিলেন। বোধ হয় শ্ৰী:ট্র হইডেই অবসর লইয়া বিলাতে চলিয়া যান । শ্ৰী টু ছাড়িয়া যাইবার সময় তাহার “বাংলার” যাবতীয় ভারী ভারী আসবাব নীলাম হয় । বোধ হয় শ’ সাহেবের এগারে বার বছরের একটি বালক ছিল । জজ সাহেবের আস্বাবের মধ্যে এই বালকের ব্যবহারের উপযোগী ছোট চেয়ার, টেবিল, আলনা, টেপয় বা ত্ৰিপদী প্রভৃতি ছিল । বাবা এই নীলামে সাহেব বালকের এই আসবাংগুলি আমার জন্ত কিনিয়া আনেন । ইহার ফলে আমি এগারে বার বছর বয়স হইতেই চেয়ার টেবিল প্রভৃতি ব্যবহার করিতে অভ্যস্ত হই। মানুষের নিত্য ব্যবহার্ষ্য জাস্বাবের ও বাহিরের পোষাক পরিচ্ছদের সঙ্গে তাছার মনের সম্বন্ধ যে কত ঘনিষ্ঠ বাবা