পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] সত্তর বৎসর &t নাই। আর এও জম্বুমান হয় যে, গভর্ণমেণ্টের কর্তৃপক্ষের পাদ্রীদের সঙ্গে পরামর্শ না করিয়াই এই নূতন গভর্ণমেণ্ট প্রাচীন সরকারী ইস্কুল-গৃহের পশ্চাদ্ভাগ ইস্কুল স্থাপন করেন নাই। পাদ্রারাও বোধ হয় আর এই ভার বহন করিতে পারিতেছিলেন ন! । বলিয়াছি যে, শ্রীহট্ট সহরের নিকটে অনেকগুলি ছোট ছোট পাহাড় আছে। ইহারি একটির উপরে একটা বড় পাকা কোঠা ছিল । এই কোঠাতে তখন বারিক অফিস বা পাবলিক্ ওয়ার্কসের দপ্তর ছিল । এই বাড়ীতেই গভর্ণমেণ্ট ইস্কুলের প্রতিষ্ঠা হয়। এই পাহাড়কে ‘মনারায়ের টিলা’ কহিত । এখন গভর্ণমেণ্ট ইস্কুল আর সেখানে নাই । সহরের মাঝখানে নদীর ধারে উঠিয়া আসিয়াছে। স্থানটি অতি মনোরম ৷ সহরের কোলাহল হইতে দূরে । একেবারে উত্তর প্রাস্তে বলিলেই হয় । টিলার নীচ হইতে একটা পাকা সিড়ী কোঠার বারাও পৰ্যন্ত গিয়া উঠিয়াছে। ইস্কুলের বারাওয়ে দাড়াইয়া সমস্ত সহরের দৃশুটা আমরা দেখিতে পাইতাম। পাহাড়ের নীচে খানিকটা সমতল ভূমি ছিল । সেটাই আমাদের খেলার মাঠ ছিল । দক্ষিণ দিকে টিলার গ। বাহিয়াও আমরা ইচ্ছা হইলে উপরে উঠিতে পারিতাম । নামিবায় সময় সিড়ি দিয়া না নামিয়৷ অনেকেই পাহাড়ের গা দিয়া ছুটিয়া নামিত। উত্তরদিকে একটা গভীর খাদ ছিল । সেই খাদ দিয়া স্বর্ণার জল কল কল করিয়া দিবানিশি প্রবাহিত হইত। ইহারি পূর্বদিকে আর একটা অপেক্ষাকৃত নীচু টিল ছিল, এখনও আছে। আমার বাল্যকালে এই টিলায় জজ সাহেব থাকিতেন। সুতরাং আমরা বালকের দল সে দিকে বড় বাইতাম না । বোধ হয় ১৮৭৯ কি ১৮৮• ইংরেজীতে গভর্ণমেণ্ট ইস্কুল মনারায়ের টিলা হইতে উঠিয়া সহরের মাঝখানে, লালদিঘী নামে একটা বড় দিঘী আছে তাহার পশ্চিম পাড়ে উঠিয়া আসে। এখান হইতে এখন নদীর ধারে উঠিয়া গিয়াছে। ( 56 ) আমাদের ইস্কুল সহরের এক প্রাস্তে হইলেও আমরা ইটিয়াই ইস্কুলে যাইতাম। সেকালে শ্ৰীহট্টে দুথানা মাত্র গাড়ী ছিল । একথান। টমটম, আর একখানা সাধারণ চার চাকার গাড়ী। দুখানাই দুইজন উকিলের ছিল । একজন নিজেই তাহার টমটম্ ইশকাইয়া আদালতে যাইতেন । ইহঁর বংশধরেরা এখন কে কোথায় আছেন জানিনা। অন্ত গাড়ীখানা ছিল9ব্রজনাথ চৌধুরী মহাশয়ের। ইনি একজন খুব বড় জমীদার ছিলেন । ইহার দ্বিতীয় পুত্র ত্রযুক্ত রায় সুখময় চৌধুরী বাহাদুর এখন সহরের একজন গম্ভমান্ত লোক । অনাররি মেজিষ্ট্রট ও মিউনিসিপ্যাল কমিশনার। ব্ৰজনাথ চৌধুরী মহাশয়ের অন্যতম পৌত্র ঐযুক্ত ব্রজেন্দ্রকুমার চৌধুরী আসাম ব্যবস্থাপক সভায় কিছুদিন পূৰ্ব্বে স্বরাজ্যদলের দলপতি ছিলেন। আমার বাল্যকালে ঐহটে দুর্গাচরণ চৌধুরী ও ব্রজনাথ চৌধুরী এই দুজনের দুখানা গাড়ী ছিল । তবে ইহারাও যে সৰ্ব্বদা গাড়ী চড়িয়া আদালতে যাইতেন, তাহা নহে। সহরের সকল সম্রাস্ত লোকেরাই পায়ে ইটিয়া নিজেদের কৰ্ম্মস্থলে যাইতেন । তবে হাকিম এবং উকিলদের সঙ্গে একজন লোক খুব বড় বীশের ছাতা তাহদের মাথার উপরে ধরিয়া যাইত। এ ছাতার পরিধি সাত আট হাত হুইবে । ইহারাই নথী-পত্রের বেচি কাও পিঠে বাধিয়া লইয়৷ , ঘাইত। এই ছাড়াই সেকালে আমাদের সহরে বড়লোকের নিদর্শন ছিল । এখন যেমন, তখনও সেইরূপ, সাড়ে দশটায় ইস্কুল বসিত ও চারিটায় ছুটী হইত। মাঝখানে দেড়টা হইতে দুইটা পৰ্য্যস্ত জাধ ঘণ্ট। খেলার ছুটী হইত। এই ছুটীর সময়ে এখনকার মত আমার বাল্যকালে ইস্কুলের হাতায় কোন খাবার জিনিব বিক্ৰী হইত না । ছেলেরা বাড়ী হইতে কোন জলপানির পয়সাও পাইত না। ছুটীর