পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] ভারতবর্ষের পরাধীনতার স্বরূপ ২৯৯ সাবিত্রীব্রত করাষ্টতে যান। তাহার পিতাই এসকল স্বত্রত করাইতেন । কিন্তু এদিনে অস্থস্থ হইয়া পড়াতে তিনি ব্রতের পূথি হাতে দিয়া পুত্রকে পৌরোহিত্য করিতে যজমানের বাড়ী পাঠাইয়াছিলেন। পুত্র এই পুথি লইয়া যজমান-বাড়ী যাইয়া ব্রত করাইতে লাগিলেন । সাবিত্রীব্ৰতের অনুষ্ঠানে এক জায়গায় লেখা ছিল “সপ্তস্থত্রেন বেষ্টয়িত্ব।”...ইত্যাদি । অর্থাৎ সাতটা স্বতে দ্বার ব্ৰতের স্থানকে বেষ্টন করিতে হুইবে । পুরোহিত-পুত্র হাতের লেখা পুথিতে ‘স’ ‘কে’ ‘ম’ পড়িয়া বসিলেন । স্বতরাং সপ্ত স্থন্ত্রেন না পড়িয়া সপ্তমূত্রেন বেষ্টম্বিত্বা পড়িলেন। পড়িয়া ব্ৰতকারিণীকে কহিলেন, “ঠাকুরাণী, একটু উঠিতে হইবে এবং এই বেদীর চারিদিকে সাতবার মূত্ৰত্যাগ করা প্রয়োজন। মহিলাটি আরও পূৰ্ব্বে এই ব্ৰত করিয়াছিলেন ।” সুতরাং পুরোহিত-পুত্রের বিদ্যার এই পরিচয় পাইয় তাহার আর এই বার ব্রত-সমাপন করিতে হইল না । (ক্রমশ:) ভারতবর্ষের পরাধীনতার স্বরূপ শ্ৰী প্রবোধচন্দ্র সেন ভারতবর্ষ নিজের স্বাধীনতা রক্ষা করিতে পারিল না কেন, কেন ভারতবর্ষ এই দীর্ঘ সাত শত বৎসর ধরিয়া পরাধীন রহিয়াচে,—দেশের ইতিহাস আলোচনা করিতে গেলে এই প্রশ্ন স্বভাবতই মনে জাগে । কিন্তু আজ পর্যাস্তু এই প্রশ্নের যথোচিত উত্তর পাওয়া গিয়াছে কি ? অনেকেই এসম্বন্ধে অনেক কথা বলিয়াছেন । কিন্তু আজ পর্য্যন্ত এই প্রশ্নের সম্যক্ আলোচনা হইয়াছে বলিয়া বোধ হয় না । এই ক্ষুদ্র প্রবন্ধেও এ-বিষয়ের পুরাপুরি আলোচনা করা সম্ভব নয়। তবে অনেকেই এই সম্বন্ধে অনেক আংশিক সত্য নির্দেশ করিয়াছেন । আমিও আংশিক ভাবেই কয়েকটি তথ্যের আলোচনা করিব । প্রাচীন ভারতের হিন্দু রাজারা যে যুদ্ধ-বিগ্ৰহ করিতে জানিতেন না, অথবা যুদ্ধ-বিগ্ৰহ করিতেন না তাহা নহে। বরং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, প্রাচীনতম কাল হইতেই ভারতের ক্ষত্রিয় রাজার যুদ্ধ-বিগ্রহ করাকেই নিজেদের বিশেষ কৰ্ত্তব্য বলিয়া মনে করিতেন। এমন-কি অহিংসবাদী বৌদ্ধ রাজারাও সমর-ক্ষেত্রে রক্তপাত করিতে ইতস্ততঃ করিতেন না, বরং গৌরবই মনে করিতেন ; বাঙ্গালার বৌদ্ধ পাল রাজাদের ইতিহাসই ইহার জলস্ত দৃষ্টান্ত। ভারতের হিন্দু রাজারা যে কৰ্ত্তব্যবোধেই যুদ্ধ করিয়া নিজ নিজ রাজ্য রক্ষা করিয়াই নিরস্ত হইতেন তাহা নহে । যুদ্ধ করিয়া পরের রাজ্য অধিকার করা ও নিজের রাজ্য বিস্তার করাই ছিল পরম গৌরবের বিষয় ; বহু নরপতিকে পরাভূত করিয়া রাজচক্রবত্তিত্ব লাভ করাই ছিল ভারতীয় রাজাদের পক্ষে চরম আকাজক্ষার বস্তু। ঐন্দ্রমহাভিষেক, অশ্বমেধ, রাজস্বয় প্রভৃতি যজ্ঞছুষ্ঠানের কথা স্মরণ করিলেই এ কথার সত্যত উপলব্ধি হইবে ; সাৰ্ব্বভৌমত্ব লাভ করাই ছিল এইসকল যজ্ঞের উদ্বেত । দৃষ্টান্ত স্বরূপ আমরা সৰ্ব্বক্ষত্ৰীস্তক’ ‘একমাট মহাপদ্মনন্দ এবং ‘সৰ্ব্বরাজোচ্ছেত্তা’ সমুদ্রগুপ্তের কথা শ্বরণ করিতে পারি। তক্ষশিলাবিজয়ী কুরুরাজ "সৰ্ব্বভূমি’ জনমেজয় গুজরাজ পুস্তমিত্র ( দ্বিরশ্বমেধ-যাজী ) এবং সাতবাহনরাজ "দক্ষিণপথপতি’ শতকণি নিজেদের বহু-বিস্তৃত বিজয়-কীৰ্ত্তি স্বপ্রতিষ্ঠিত করার উদেtশুই দুই দুইবার করিয়া অশ্বমেধের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন, সন্দেহ নাই । বস্তুত দি ৰজয়ী হওয়ার জনগুসাধারণ যশোলাভই ছিল প্রাচীন ভারতীয় ক্ষান্ত্রশক্তির চরম জ্বাদশ । কিন্তু