পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা । জীবনদোলা నీలిరి তাদের পায় কে ? কাজেই ভায়েদের যত রাগের চোট এসে পড়ল আমার উপর ।” চঞ্চল বলিল, “বেশ যাহোক, নিস্তারিণী-দি ! তোমাকে কি উপন্যাসের প্লট দিতে কেউ বলেছে ? মাসিমার কাছে কি ক'রে এলে তাই ব’ল না !” নিস্তারিণী গল্পে বাধা পাইয়া বিরক্ত হইয়া বলিল, "তাই ত বলছিলুম। আগের কথাটা না বললে টপ ক’রে ডিঙিয়ে এসে কি শেষের কথা বলা যায় ? আমি বাপু বোকা মামুব, অন্য রকম বলতে জানি না।” গৌরী বলিল, “তুমি ভাই, ওদের ক্ষেপানো শুনে। না । যেমন বলছিলে তেমনি ব’লে যাও।” নিস্তারিণী শ্রাস্ত শরীরটা একটু মোড়া দিয়া হাই তুলিয়া বলিল, “তারপর যা বরাতে ছিল তাই ঘটল । পাড়ার মুদির দোকানে খাত লিথত একট। মা-বাপেখেদানো ছেলে ; তাকেই ধ’রে এনে আমার ভাইরা বিনেপরচায় আমাকে গড়িয়ে দিলে। সেই থেকে যত খোয়ার সুরু হ’ল । আমার একটা কথা একটা কাজ যদি অপছন্ম হ’ত ত অমনি ছাতার বাড়ি লাঠির বাড়ি পিঠে পড়তে থাকৃত। এমনি নিলঞ্জ মানুষটা যে পাশের বাড়ী বাড়ী ছাদে ছাদে মেয়ে-পুরুষ আমার কান্না শুনে জমা হ’য়ে গেলেও খোলা দরজার সাম্নে আমার উপর অত্যাচার করতে তার এতটুকু বাধত না। অত ব্যথার মধ্যে আমি লজ্জায় ম'রে যেভূম, তবু তার লজ্জা হ’ত না । মারধোর করে অতগুলো মানুবের সাম্নে দিয়ে দিব্যি গট, গট করে বেরিরে চলে যেত। পাশের বাড়ী থেকে ছাদের আল্‌সে ডিঙিয়ে মেয়েরা এসে আমার চোখে মুখে জল দিয়ে তুলত । “বোকার মত একদিন বলেছিলুম—স্বামী হয়ে তুমি আমার এমন হেনস্তা কর লোকের কাছে আমি মুখ দেখাতে পারি না। তাতে বললে কি—“বেশত স্বামীর হেনস্তা ভাল না লাগে, আর কারুর হেনস্তায় যদি মুখ খুব উচু হয়ে ওঠে তবে তারির চেষ্টা দেখো। আমার তোমাকে কিছু দরকার নেই।’ "ওমা, সতি সত্যি তার পরদিন সকালে উঠে দেখি । বাড়ীভাড়া মুদির ধার সব ফেলে রেখে কোথায় চলে গেছে। এই আসে, এই জালে, ক’রে সারাদিন পথ চেয়ে وج الإسيسي في ن\ বসে রইলুম, কিন্তু কারুর আর দেখা পাওয়া গেল না। বাড়ীওয়াল খবয় পেয়ে বলে—“এখুনি আমার ভাড়া চুকিয়ে উঠে যাও ; মূদি বলে—“আমার সব পাওনা গণ্ড৷ না পেলে আমি ঘরের ঘটি বাটি উঠিয়ে নিয়ে যাব।’ “আমি ত কেঁদে মরি, কোথায় যাব কি করব ভেবেই পাই ন! * চঞ্চল বলিল, “মাগে, স্বামী নয় ত দুধমন্‌! অমন স্বামী থাকার চেয়ে না থাক ভাল। গৌরী, তুই, ভাই ঢের নিশ্চিন্ত আছিস্ ।” নিস্তারিণী জিভ কাটিয়া বলিল, “ছিঃ, আমন কথা বলতে নেই। আমার যা করেছে, তা করেছে তবু যেখানে আছে বেঁচে-বৰ্ত্তে থাকৃ। মাসিম যতদিন আছেন আমার কোনো ভাবনা নেই। মাসিমার এক মামাতে বোন আর ভগ্নীপতি থাকৃতেন আমাদের পাশের বাড়ীতে। আমার কান্নাকাটি শুনে তারা বললেন, যে, এর একটা ব্যবস্থা কবৃতে হবে। দুপুর রাত্রে খিড়কীর দরজা খুলে তাদের বাড়ী পালিয়ে এলুম, আবার ভোর না হতেই তার দিলেন আমায় কলকাতায় চালান ক’রে! এমনি ক’রে স্বামীর ঋণ আর পরের অপমানের হাত থেকে নিস্কৃতি পেলাম।” * চপল বলিল, “সত্যিই ভাই, তোমার নামে গল্প লেখা যায় দেখছি। আমার দেথ না, একেবারে সোজাস্থঞ্জি ইতিহাস, মা গেল ম’রে, বাপ এনে মাসিমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে নিস্কৃতি পেলেন।” গৌরী বলিল, “আর চঞ্চল, তোমার ইতিহাসট। কি ? আরব্যোপস্তাসের মত সবাই নিজের নিজের কাহিনী ৰ’লে ফেল ।” চঞ্চলার চঞ্চল জিহা হঠাৎ থামিয়া গেল। মুখখানা একবার মুহূৰ্ত্তে রাঙা হইয়া উঠিল। তারপর একটু থামিয়া মুখটা ভার করিয়া সে বলিল, “আমার মা জামাকে বেঁচে থেকেই বিদায় ক’রে দিয়েছে। সে কাহিনী সকলের চেয়েই সংক্ষিপ্ত।” চপল চঞ্চলার ইতিহাস সমস্তই শুনিয়াছিল। চঞ্চলার পিতা বেহারের একজন স্বনামধন্ত আইনজীবী ছিলেন,