পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা l পরভৃতিক రిషిet এসে পড়ব এখন । ভবানী ত রইল, ও প্রায় ধাত্রীর কাজ আমার সমানই জানে ; মা লক্ষ্মীর কোনো অসুবিধা হবেনা।” বাড়ীর ঝি চাকর সবাই শাখের শব্দে উঠিয়া পড়িয়াছিল, দরজার কাছে তখন রীতিমত ভীড় । সবাই খোকা দেখিতে ব্যস্ত। রঘুয়া গাড়ী ডাকিতে চলিল। মহেশবাবু মিসেস মিত্রকে বলিলেন, “আপনার ফিটা ?” মিসেস মিত্রের হাণ্ডব্যাগটি তখন প্রায় পেট ফাটিয়া মরিতেছে। তিনি সেটিকে হাতে করিয়া হাসিয়া বলিলেন, "আহ সে হবে এখন। তার জন্তে তাড়া কিসের ? আমি ত এখনো দশ বারে দিন আস্ব । আচ্ছা, আমি এখন । আপনার চাকরটা একটু চলুক তবে আমার সঙ্গে।” মহেশবাবুও লেডী ভাক্তারের সঙ্গে সঙ্গে নামিয়া গেলেন । পূবের আকাশ ধীরে ধীরে স্বচ্ছ হইয়া আসিল । তার পর ফিক গোলাপী,তারপর ডগ ডগে সিদূরে লাল। রাস্তাঘাট সজীব হইয়া উঠিল। ঘোড়ারগাড়ী চলিল,ফেরীওয়ালার ডাক শোনা গেল। এ বাড়ীর সকলে মাঝরাতে জাগিয়া এখন ঘুমে ক্লাস্ত হইয়া চোখ রগড়াইতে লাগিল। ভবানী সকলকে কাজে লাগাইয়া দিল, তাড়াহুড়া দিয়া। রাধুনী বলিল, “তোমার মুখ চোখ যা হয়েছে দিদি, আয়নায় দেখ গিয়ে । সব ধকল যেন তোমাকেই পোয়াতে হয়েছে।” ভবানী বলিল, “নে নে, উকুনে আঁচ দিগে যা। অামার ভাবনা ভাবতে হবে না। এখুনি ইড়ি হাড়ি গরম জল দিতে হবে।” হঠাৎ সদর দরজার সাম্নে ঘড়ঘড় শব্দ করিয়া প্রকাও এক মোটারকার আসিয়া থামিল। গাড়ীর দরজা খুলিয়া এক লাফে বাহির হইয়া আসিল উদয়, তাহার পিছন পিছন একজন ইংরাজবেশধারী ব্যক্তি, ও একটি কালে মেমসাহেব। দুজনেরই হাতে ব্যাগ । কাহারও অল্পমতির অপেক্ষা না রাখিয়া উদয় এক ধাক্কায় সদর দরজা খুলিয়া সকলকে লইয়া ভিতরে ঢুকিয়া পড়িল। সে যেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়াই আসিয়াছিল যে, কাহারও পরোয় সে আজ করিবে না। সিড়ির মুখের কাছে আসিতেই মহেশবাবুর সঙ্গে তাহার সাক্ষাৎ হইল, তিনি বলিয়া উঠিলেন, “এস বাবা এস, এরা কে ?” উদয় পরম গম্ভীর মুখে বলিল, “ইনি এখানকার এক wa or so midwifery; Specialist, wig of নসর্ণ। জ্যাঠামশায় টেলিগ্রাম করেছেন এদের যেন বৌঠানের জন্যে রাখা হয়। কাল আমার খবর পেতে বড় দেরি হ'ল, ত না হ’লে কালই আসতাম। বৌঠান কোথায়, এখনও কি খুব কষ্ট পাচ্ছেন ?” মহেশবাবু হাসিয়া বলিলেন, “ন। বাবা, এখন ভালই আছে। ভালয় ভালয় কাল রাত্রেই তার ছেলেটি হ’য়ে গেছে, খুব বেশী কষ্ট পায়নি। ধাত্রী যিনি ছিলেন, তিনি খুব বিচক্ষণ মানুষ, কোন বিপদ হয়নি তার হাতে। এস না, খোকাকে দেখবে ?”. খোকাকে দেখিতে উদয়ের বিন্দুমাত্রও ইচ্ছা ছিল না। তাহার মুখে একবারে যেন কে কালি মাড়িয়া দিল। কি করিবে তাহাই যেন সে স্থির করিতে পারিতেছিল না। হতবুদ্ধির মত সিড়ির মুখেই সে দাড়াইয়া রহিল। তাহাকে এক ঠেলা দিয়া সচেতন করিয়া বাঙালী mitoff asso, “We had better get a move on, Our services are not required, it seems,” “toil মেম সাহেবটি খিলখিল্‌ করিয়া হাসিয়া উঠিল। উপর হইতে ভবানী জলস্ত দৃষ্টিতে ইহাদের কাওকারখানা দেখিতেছিল। উদয় যখন দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া ইহাদের লইয়া ফিরিয়া চলিল, তখন সে মনে মনে বলিল, “যাক, তোর এমুখ ষে দেখতে পেলাম, সেও আমার এক সাত্বনা। পাপ যা করবার তাত করলুমই।” সমস্ত দিন ধরিয়া খোকার দরবার চলিতে লাগিল । বুড়ী পিসিমা আসিলেন, বিজনবাল আসিল, বাড়ীর ছেলেরাও আসিল। এমন কি শোভাবর্তী শুদ্ধ আসিয়া জুটিল, শাশুড়ীর অস্থখ এবং গালাগালি উপেক্ষা করিয়া। ছুটির ঘরে ঢুকিয় সে বলিল, “দেখি দেখি, আমাদের রাজপুত্তরকে। ওম, ভান্থর রং মোটেও পায়নি। কি ষে ছাই আমাদের ছেলে মেয়েগুলো হচ্ছে, সব কালে । তা যেটা ছেলে, ওর কিছু ব’য়ে যাবেনা। আমার মেয়েটারই বিয়ে দিতে আমার জিষ বেরিয়ে যাবে। ভবানী, খোকার জন্তে এই ফ্রক, টুপী আর মোজা এনেছি, উঠিয়ে রাখ। টুপী একটু বড়ই হবে বোধ হচ্ছে।"