পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

<য় সংখ্যা ] সঙ্গীতের পরিবর্তন ులి) আসিয়াছেন, কিন্তু আমাকে গানগুলি শুনান ত দূরের কথা, আমার সহিত দেখা পৰ্য্যম্ভ করেন নাই। তিনি স্থখন ঐ গানগুলি ৪৫ দিন ধরিয়া আমার নিকট শিক্ষা করিয়াছিলেন তখন তাহার মনের ভাব “বিদ্যা প্রচার’ ছিঙ্গ, পরে যখন প্রচার-কাৰ্য্য কিরূপ হইবে জিজ্ঞাসা করায় “পরে হইবে” উত্তর পাওয়া গেল তখনই বুঝা গেন্স ষে ইনিও পুথি বোঝাই করিতে চাহেন এবং গুরুর নাম করিতে না হয় তাহারই চেষ্টায় আছেন। কয়েক বৎসর পরে উক্ত সম্মেলন সভা লক্ষেী মহানগরীতে বসিবার কথা শুনা গেল। চারিদিকে হুলস্থূল পড়িয়া গেল, কোথায় কার কাছে ভাল গান আছে, কোথায় কে ভাল ঠুংরী গাহিতে পারে ইত্যাদি প্রকারের canvassing আরম্ভ হইল। আমার নিকট তিন চারিখানি পত্র আসিল , তন্মধ্যে একখানির উল্লেখ কর কৰ্ত্তব্য মনে করি । পত্র-লেখক লক্ষ্মেীএর একজন জমিদার এবং সঙ্গীতজ্ঞ, নাম ঠাকুর নবাবআলি খী। তিনি আমাকে লেখেন, “শুনিয়াছি আপনার নিকট উৎকৃষ্ট ধ্রুপদ অাছে। আপনি অঙ্গু গ্ৰহ করিয়া সমস্ত ধ্রুপদগুলি যদি পাঠান তবে উপকৃত হইব । আমি অনেক ধ্রুপদ ছাপাইয়াছি { স্বরলিপি করিয়া ) তন্মধ্যে যদি আপনার ধ্রুপদগুলি থাকে তবে সেগুলি বাদে অযুগুলি লইব এবং বাকী ফেরৎ দিব।”—এই ভাব। র্তাহার উত্তরে আমি জানাইলাম যে, আমি সমস্ত ধ্রুপদ গান এবং সরগম যাহা শিক্ষা করিয়াছি পুস্তকাকাবে ছাপাইতেছি এবং ছাপা হইলেই পাঠাইয়া দিব । সময়স্তরে আমি ঠাকুর সাহেবকে বইগুলি পাঠাই এবং তন্মধ্য হইতে কিয়দংশ সভায় পঠিত হুইবার জন্ত তাহাকে অনুরোধ করি। তাহা ত হয়ই নাই ; পুস্তকের প্রাপ্তি সংবাদ পৰ্য্যস্ত তিনি দেন নাই । অপিচ একটি বালক চন্দ্রশেখরকে তিনখানি ধ্রুপদ শিখাইয়াছিলাম এবং উক্ত সম্মেলন সভায় যখন সে যায় তখন আমি তাহার মাতুলকে বলিয়া দিয়াছিলাম যেন ঐ তিনখানি গান সেখানে তাহাকে দিয়া গাওয়ান হয়। তাহাও হয় নাই । ইহাতে কি বুঝা যায় ? উক্ত মহা সম্মেলন বসিবার সময় ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত গৌরীপুরের রাজা ত্রযুক্ত ব্রজেন্দ্রকিশোর চৌধুরী মহাশয় কাশীধামে ছিলেন। তাহারও ধারণা—স্বরলিপি প্রথাতে গান শিক্ষা হইতে পারে । উtহার ইচ্ছানুসারে তাহারই আত্মীয় দ্বারা ৮১১ টি ধ্রুপদ আমার নিকট হইতে স্বরলিপি করিয়া লণ্ডয়া হইয়াছিল, কিন্তু সেগুলি আমাকে শুনান হয় নাই। আমার বিশ্বাস যে, ঐ গানগুলি তাহার পুস্তকের কলেবর বৃদ্ধি করিয়া একেবারে মুদ্রিত হইয়া প্রকাশিত হইবে। ঐ ধ্রুপদগুলি আদায় করিতে এবং সাধন দ্বারায় লয়ে স্বরে তৈয়ার করিতে দুই তিন বৎসর লাগে, কিন্তু স্বরলিপি করিতে গেলে ৪৫ দিনেই হয় এবং তাহাই হইয়াছে। পুস্তক মধ্যে বিদ্যা থাকে না। শিক্ষা দ্বারাই উহ। রক্ষিত হয়। স্বরলিপি পুস্তকে বর্ণ অখবা বোল থাকে, স্বর কোথায় ? সাধন ন হইলে সিদ্ধি হইতে পারে না এবং সিদ্ধি লাভ করিতে হইলে একাগ্রতা চাই, পরিশ্রম চাই, একনিষ্ঠত চাই এবং পথ-প্রদর্শক জীবন্ত গুরু চাই। সঙ্গীতের আসল স্বরূপ দেখিতে হইলে কোন প্রকারের ফাকি চলিবে না। তাই যে উবণ পরিবর্তন বিগত ৫• বৎসরে চক্ষের সম্মুখে দেখিলাম তাহার বিরুদ্ধে দুই চারিটি কথা বলিলাম। স্বরলিপি দ্বারা আমাদের সঙ্গীতের স্ব রূপ দেখান যায় না এবং সঙ্গীত শিক্ষা কখনো হইতে পারে না। ইহাই আমার ধারণা । সমাপ্ত