পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

HIV প্রবাসী—জাষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড বেড়ায় হেলান দিয়া দফাদার ঘুমাইতেছিল। বেণু কিছুক্ষণ কি ভাবিল তাহার পর দফদারের গাজার সরঞ্জামের পুটুলীটি বাহির করিয়া আনিল। কলিকায় আগুন দিয়া সে স্বত্ব স্বরে কহিল, "কিছু মনে করিস্নি, বিরাজ ! তোর শাখা-সিন্ধুর অক্ষয় হোক। আজ এক টান না টানলে আর বঁচিব না। বোম্‌! বোম্ !” অনেক দিনের অনভ্যাস্, কলিকায় বার দুই দম দিতেই বেণুর মাথ। ঘুরিয়া উঠিল, লাইনের দিকে ঠিকুরিয়া পড়িয়া লে চীৎকার করিয়া উঠিল, “মাথায় একটু জল দাও গে, ফাদার দা । সারা পিবৃথিম ঘুরছে।” তাহার আড়ষ্ট-কণ্ঠ হইতে কথাগুলি বাহির হইল অতি ক্ষীণস্বরে, তাহাতে দফাদারের নিদ্রাভঙ্গ হইল না। মধ্য রাত্রি । হিমসিক্ত আচ্ছাদনের নীচে কুণ্ডলী করিয়া তন্ত্রাচ্ছন্ন প্রহরীর দল কঁাপিতেছিল। এমন সময় দূরের কোনো সজাগ প্রাণীর কণ্ঠ শোনা গেল, “লাটের গাড়ী । লাটের গাড়ী !” প্রদীপ্ত আলোক-ফলকে নিশীথের অন্ধকার বিদীর্ণ করিয়া রক্ত-চক্ষু লৌহ দানব চুটিয়া আসিল । চৌকীদারের দল কঁাপিতে কঁাপিতে ধড়ফড়, করিয়া উঠিয়া দাড়াইল । কেবল উঠিল না একজন । যেখানে বেণু সর্দার পাহারায় ছিল সেখীন হইতে অতি ক্ষীণ একটি আৰ্ত্তনাদ শোনা গেল—মুহূর্তের জন্য ; এঞ্জিন কোনও অজ্ঞাত বস্তুতে বাধা পাইয়া একটু দুলিল কিন্তু তাহার গতি মন্থর হইল না। স্পেশাল চলিয়া গেল। পরদিন প্রাতে সংবাদ-পত্রে বিজ্ঞাপিত হইল যে লাটের গাড়ী নিরাপদে সহরে পৌঁছিয়াছে। 響 籌 籌 বেণু সর্দারের নিষ্পাণ দেহপিণ্ড যখন সহরের ‘মগ হইতে শতদীর্ণ হইয়া ফিরিয়া আসিল তাহার পূৰ্ব্বেই বিরাজের সরুচাকৃলি শুখাইয়া কাঠ হইয় গিয়াছে। চম্পায় হিন্দু-উপনিবেশ ঐ ফণীন্দ্রনাথ বসু কলিকাতায় এসিয়াটক সোসাইট স্থাপনের পর থেকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ভারতবর্ষের ইতিহাসের আলোচনা চলছে। তখন থেকেই ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিশেষত্বটি জাম্বার চেষ্ট হচ্ছে। সেই আলোচনীয় ভারতীয় সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞানের অনেক কথা আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু ভারতীয় প্রতিভা ষে সেই সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান ও ধৰ্ম্মকে ভারতের গওঁীর বাইরেও প্রচার করেছিল, সেই কথাটাই সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি। যদিও সময়ে সময়ে যুবৰীপে বা শু্যামে বৌদ্ধ মন্দির লোকচক্ষুর গোচরে পতিত হয়েছে, যদিও জাপান বা চীনে অনেক ভারতীয় বৌদ্ধ মূৰ্ত্তি অনেক সময় দেখা গেছে, যদিও বালিদ্বীপে এখনও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পরিচয় পাওয়া গেছে, তবু সে সব চিহ্নকে ঐতিহাসিকরা অগ্রাহ্য করেছিলেন বহুকাল। র্তার সেই সবকে ভারতের বাইরে ভারতীয় সভ্যতার বিকাশ বলে মানতে চাইলেন না। এ সম্বন্ধে শেষে কাজ আরম্ভ করলেন ফরাসী ও ডাচ পণ্ডিতর। চীন, জাপান, খাম, চম্পা, কাম্বোডিয়ায় যে এক সময়ে “বৃহত্তর ভারত" স্থাপিত হয়েছিল, তার সম্বন্ধে গবেষণা আরম্ভ করলেন ফরাসী পণ্ডিতরা । আর যবদ্বীপ ও বালিদ্বীপ সম্বন্ধে ডাচ পণ্ডিতরা অনুসন্ধান স্বরু করলেন। যখন এইসব দেশে"বৃহত্তর ভারত" সম্বন্ধে নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হচ্ছিল, তখন ভারতবর্ষ সে-বিষয়ে একেবারে নিৰ্ব্বিকার ছিল। তার কারণ হচ্ছে এই যে, সে-বিষয়ের আলোচনা ইংরেজ তখনও