পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] সত্তর বৎসর we3? তখন মুসলমানের পর্ব উপলক্ষে এসকল আমোদ-প্রমোদে হিন্দুরা নিৰ্ব্বিঘ্নে যোগদান করিতেন। আর মুসলমানেরাও হিন্দুদিগের পঞ্চাহে তাহাদের আমোদ-প্রমোদে অকুষ্ঠা সহকারে প্রাণ খুলিয়া যোগ দিতেন। ( २२ ) শ্ৰীহট্ট বহুশতাব্দী হইতে মুসলমানদিগের একটা পীঠস্থান হইয়া আছে। সত্বরের উপকণ্ঠে স্বপ্রসিদ্ধ মুসলমান সাধু সাহজালালের সমাধি আছে। এই সমাধির সংস্রবে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। স্থানীয় লোকেরা, হিন্দু ও মুসলমান সকলেই ইহাকে সাহ জালালের দরগা বলিয়া জানেন । সাহ জালাল চিরকুমার ছিলেন। জীবনে নাকি কখনও তাহার এই কঠোর ব্রহ্মচর্ষ্য ভঙ্গ হয় নাই। তিনি বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া রমণীমুখ দর্শন করেন লাই। এইজন্য র্তাহার মরণের শতাধিক বর্ষ পরেও র্তাহার কবরের নিকটে কিংবা কবরসংলগ্ন মসজিদের চত্বরে স্ত্রীলোকদিগের প্রবেশঅধিকার নাই। স্ত্রীলোকের মসজিদের নীচে, দরগার চতুর্দিক প্রদক্ষিণ করিয়া পীর সাহেবের উদ্দেশে নিজেদের ভক্তি-অঞ্জলি অর্পণ করেন এবং দরগায় সিন্নি দেন। মুসলমান এবং হিন্দু মহিলা উভয়েই সমভাবে সাহজালালের মসজিদ দেখিতে যাইয়া এইরূপে এই দরগা পরিক্রমণ করিয়া থাকেন। শ্ৰীংtট্রর সাহজালালের দরগা যেমন একট। মুসলমনেদিগের পীঠস্থান, দুর্গাবাড়ী সেইরূপ হিন্দুদিগেরও একটি ছোটখাট পীঠস্থান। কেহ কেহ কহেন যে, তন্ত্রোক্ত ৫২ পীঠের মধ্যে শ্ৰীহট্ট একটা পীঠ। সতীদেহ থও থগু হইয়া চারিদিকে পড়িয়া এসকল পীঠস্থানের হষ্টি করিয়াছে। শ্রীহট্রে সতীর হাত পড়িয়াছিল। ঐ হস্ত হইতেই শ্রীহট্ট নাম হইয়াছে। অনুমান সত্য কি মিথ্যা জানি না। তবে আমার বাল্যকালে কথাটা শোনা ছিল। আর এইজন্তই শ্ৰীহট্টের দূর্গাবাড়ী সে-অঞ্চলে হিন্দুদিগের নিকটে একটা পীঠস্থান হইয়াছিল। হিন্দু যাত্রীরা গ্ৰহটে যাইয়া একদিকে ধেমন দুর্গাৰাড়ীতে পূজা দিতেন, জগুলিকে সেইরূপ সাহ জালালের মসজিদ সহজালালের মসজিদ পরিক্রমণ না করিয়া এবং সাহজালালের দরগাতে সিদ্ধি না দিয়া ফিরিতেন না । ফলতঃ সে অঞ্চলের হিন্দুর সাহ জালালকে নিজেদের দেবতার আসনে না তুলিয়া ছাড়েন নাই। সাহ জালালকে তাহারা মহাদেবের অবতার বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলেন, এবং হিন্দু সন্ন্যাসী এবং মুসলমান ফকির মিলিয়৷ গাজা দিয়া সাহজালালের সিন্নি দিতেন । এই গাজার সিন্ধি দিবার সময়ে একটা পদ গান করা হইত। ' “হে!! বিশ্বেশ্বর লাল ! তিনলাখ পীর সাহ জালাল !” হিন্দু দেবতা মহাদেবের সঙ্গে শাহ জালালের সম্পর্ক থাকুক আর না থাকুক, আমার বাল্যকালে শ্ৰীহট্টের সাধারণ হিন্দুদের মধ্যে একটা কাহিনী প্রচলিত ছিল, যাহাতে মুসলমান তীর্থ-স্থান মক্কার সঙ্গে শিবের भूवहे ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। এক মহাশক্তিশালী শিব-লিঙ্গ নাকি কা’বার মন্দিরে বন্দী হইয়া আছেন। কিন্তু মহাপ্রলয়ের শক্তি রাখিলেও এই শিব-লিঙ্গ মৃত । তবে ইহার মাথায় যদি কোনও নিষ্ঠাবান হিন্দু একটি বিম্বপত্র দিতে পারে, তাহা হইলে ইনি অমনি প্রলয়হুঙ্কারে জাগিয়া উঠিয়া দুনিয়ার সমুদায় মুসলমানকে নিঃশেষে নষ্ট করিবেন। কিন্তু মুসলমানের দেবতাও শিবের ভয়ে সৰ্ব্বদা সম্বন্ত থাকেন। কোনও উপায়ে কোনও শিবোপাসক হিন্দু মক্কার চতুঃসীমানার মধ্যে যাইবা মাত্র কা’বার মন্দির চারিদিকে ঘুরিতে থাকে। তখন মুসলমানের চারিদিক জন্বেষণ করিয়া সেই হিন্দুর '