পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రి8R [ २१* छांभ, »म थe সন্ধান পাইয়া তাহাকে নষ্ট করিয়া নিজেদের ধৰ্ম্ম ও সমাজকে বঁাচাইয়া থাকে। বাঙ্গলা দেশের আর কোথাও এ কাহিনী প্রচলিত আছে কি না জানি না। আমার বাল্যে শ্ৰীহটে ইহা খুবই প্রচলিত ছিল। আর এও একটু একটু যেন মনে পড়ে, হিন্দুর শিবকে এই "উন লাখ পীর” সাহজালালই মক্কায় নিয়া বন্দী করিয়া রাখেন, একথাও তখন শুনিয়াছিলাম। গাঞ্জার সিন্নি ও মন্ত্রের সঙ্গে ইহার কোনও নিগুঢ় যোগ আছে কি ? ( २७ ) শ্ৰীহট্ট সহরে বহুদিন হইতে একটা মণিপুরী উপনিবেশ গড়িয়া উঠিয়াছিল। প্রথম মণিপুর যুদ্ধের পরে ইংরেজ মণিপুরের পরাজিত রাজা গম্ভীর সিংহকে শ্রীহট্টে আনিয়া রাজবন্দী করিয়া রাখেন। গম্ভীর সিংহ যে-বাড়ীতে ছিলেন আমার বাল্যকালে শ্ৰীহট্টের লোকেরা তাহাকে মণিপুরী রাজবাড়ী কহিত । গম্ভীর সিংহকে আমি দেখি নাই। তাহার কোন ছেলেপিলে ছিল কি না তাহাও জানি না। তবে আমার বাল্যকালে সহরে অনেকগুলি মণিপুরী বাস করিতেন। সহরের পূর্বপ্রান্তে নদীর ধারেও একট। বড় মণিপুরী পাড়া ছিল । সহরের প্রায় মাঝখানেই মণিপুরী রাজবাড়ী ছিল। ইহার আশেপাশেও অনেকগুলি মণিপুরী বাস করিতেন। মণিপুরীরা বোধ হয় একসময়ে বৌদ্ধমতাবলম্বী ছিলেন। পরে বৈষ্ণব হইয়া যান । সমগ্র মণিপুর এখন বৈষ্ণব, রাধা-কৃষ্ণের উপাসক-ঐগেীরাজমহাপ্রভুর পন্থাবলম্বী । শান্তিপুর ও নবদ্বীপের গোসাইরের মণিপুরীদিগের গুরু, নবদ্বীপ ইহাদের প্রধান তীর্থস্থান। মহাপ্রভুর জন্মতিথি, দোলপূর্ণিমায় বিস্তুর মণিপুরী যাত্রী প্রতি বৎসর নবদ্বীপে আসিয়া থাকেন। অন্যাস্ত বৈষ্ণব পৰ্ব্বাহেও আসেন । মণিপুরের আধুনিক সামাজিক ইতিহাস হিন্দু সমাজের এবং হিন্দু ধর্শের প্রচার-প্রচেষ্টার একটা বিশেষ দৃষ্টাস্তস্থল। বৈষ্ণব গোস্বামীপাদের সমগ্ৰ মণিপুর সমাজকে নিজের মন্ত্র-শিয্য এবং বৈষ্ণব-আচারে প্রবর্তিত ও বৈষ্ণব সাধনে দীক্ষিত করিয়া হিন্দু সমাজের গণ্ডীর ভিতরে আনিয়াছিলেন। মণিপুরের প্রাচীন কথা কিছুই জানি না। তবে তাহাদের বর্তমান স্বভাব, প্রকৃতি ও রীতি-নীতি দেখিয়া মনে হয় যে, ইহাদের ভিতরে এমন কতকগুলি বিশেষেত্ব পুরুষ-পরম্পরায় ফুটিয়া উঠিয়াছিল যাহাতে মহাপ্রভূর “অনর্পিতচরী” উন্নতোজ্জল রসঐ ভক্তিলাভে ইহাদের বিশেষ অধিকার ছিল। রসের অনুশীলন মণিপুরীদিগের সহজসিদ্ধ। মনে হয় ইহার চিরদিন, এমনই সহজ সৌন্দর্ষ্যের উপাসক ছিল । মণিপুরদিগের বাড়ী দেখিলে দেবালয় বলিয়া মনে হইত এমনই পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন। গাছপালা এমনই সযত্বে রক্ষিত, তৈজসাদি এমনই ঘসা মাজ ও যা সামান্ত আসবাব থাকিত তাহা এমনই পরিপাট করিয়া বারাওয়ি ও ঘরের ভিতরে সর্বদা সাজান থাকিত যে দেখিলে চক্ষু জুড়াইয়া যাইত। যেমন ইহারা ইহাদের ঘরবাড়ী পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করিয়া রাথিত, সেইরূপ কি স্ত্রী,কি পুরুষ সকলেই নিজেদের এই দেহপুরীকেও সৰ্ব্বনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখিত। আমার বাল্যকালে কখনও নোংরা মণিপুরী দেখিয়াছি বলিয়া মনে পড়ে না। স্ত্রী পুরুষ সকলেই ফুল দিয়া নিজের অঙ্গ সাজাইয়া রাধিত। স্ত্রী পুরুষ উভয়েই কাণে ফুলের দোল পরিত। পুরুষের কখনও কখনো ফুলের এবং কচি পল্লবের মালা ধারণ করিত। আর রমণীদের ললাটে চন্দন-তিলক এবং পুরুষদিগের ললাটে চন্দনের ছাপ ত থাকিতই—ইহা ছাড়া বাহু এবং বক্ষও প্রায় সৰ্ব্বদাই চন্দনচর্চিত থাকিত। মণিপুরীরা দেখিতে গৌরবর্ণ, কেহবা উজ্জল শুiমবর্ণ। কৃষ্ণবর্ণ মণিপুরী পূৰ্ব্বে কখনএ দেখি নাই । ইহাদের দেহ স্বগোল স্থঠাম, চোথ কোমল ও স্নিগ্ধ বলিয়া বোধ হইত। মুখের গঠন মঙ্গোলিয়া জাতিদিগের ছাচে গড়া। চক্ষু আকর্ণায়ত হইলেও নাক খাদা, কিন্তু ইহাতে মণিপুরীদিগের সহজরূপকে নষ্ট করিত না। মণিপুরীদিগের সমাজে—এখন কিরূপ জানি না—ঘাট সত্তর বৎসর পূৰ্ব্বে বাল্য বিবাহ ছিল না। চৌদ-পনেরর ত কথাই নাই,আঠার-উনিশ বছর পর্য্যস্ত মণিপুরী বালিকরা অনূঢ় থাকিত। এ অবস্থায় মণিপুরী সমাজে বরকস্তার পছন্দ অপছন্দ উপেক্ষা করিয়া বিবাহ সম্বন্ধ হওয়া সম্ভব ছিল না। বোধ হয় ইহঁাদের মধ্যে একপ্রকারের গান্ধৰ্ব্ববিবাহ প্রচলিত ছিল। মণিপুরী সমাজে স্ত্রীলোকেরা সম্পূর্ণ