পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

w)38 অথচ অতি প্রিয় ও নিকটতম, যাহা অতি অবহেলায় সহজ দৃষ্টির অগোচরে পড়িয়া আছে অথচ যাহা অতি স্বাভাবিক, যাহা প্রতিদিনের প্রতিমুহূর্তের এবং তাই বলিয়া মানুষের বুদ্ধি ও দৃষ্টিকে চমকাইয় দেয় ন— তাহারই মধ্যে অনন্তরস ও সৌন্দৰ্য্য-স্থধার উৎস আত্মগোপন করিয়া আছে। রদ্যার শিল্প প্রচেষ্টায় ইহারাই নবরূপে ফুটিয়া নবচ্ছন্দে লীলায়িত হইয়া উঠিল। সৌন্দর্য্য যে ব্যাকরণের স্বত্রের মধ্যেই লুকাইয়া নাই, একথা তিনি প্রথম হইতেই বুঝিয়াছিলেন এবং বুঝিতে পারিয়াছিলেন বলিয়াই প্রথম হইতেই তাহাদিগকে অতিক্রম করিয়াও যাইতে পারিয়াছিলেন। জানিয়া শুনিয়াই নয়, নিজের কবিচিত্তের স্বজনী শক্তির প্রেরণাতেই র্তাহার অনুভূতি অভিনব সৌম্বর্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করিতে আরম্ভ করিল। এ হিসাবে রদ্যাকে অতীত মিশর, ভারত, গ্রীক ও চীনদেশের শিল্পীদের সঙ্গে একাসনে স্থান দিতে পারা যায় । ভগবানের স্বষ্টি-লীলা নানাভাবে, নানাদিকে বিচিত্ররূপে আত্মপ্রকাশ করিতেছে ; তাহার স্থষ্টি প্রকাশ ত আমরা প্রতিনিয়তই প্রত্যক্ষ করিতেছি কিন্তু তাহার স্বষ্টি হস্তটি আমরা দেখিয়াছি কি ? রদ্যা তাহার কল্পনা দৃষ্টিতে সেই অপরূপ হস্তটি দেখিয়াছেন এবং তাহাকে শিল্পরূপ দিয়া ইন্দ্রি জগতে অভিষিক্ত করিয়াছেন। সে হস্ত কোনো অতীন্দ্রিয় জ্যোতিতে জ্যোতিৰ্ম্ময় নয়, কোনো অপার্থিব রহস্য দ্বারা তার ইন্দ্ৰিয়রূপ আবৃত নয়, এর রূপ ও সৌন্দৰ্য্য, এর অর্থ ও অমৃভূতি, দেখিবামাত্রই আঁখির ভিতর দিয়া মৰ্ম্মে গিয়া সাড়া জাগায়, অধি নিবিষ্ট করিয়া দেখিবার মত বিশেষ কিছুই নাই ; একটি বন্ধুর কর্কশ প্রস্তরখণ্ড, তাহারই মধ্য হইতে যেন একটি স্বপুষ্ট, স্বল্বগু সবল জীবস্ত হস্ত ফুটিয়া বাহির হইয়াছে ; কোমল অথচ দৃঢ়, রূপে উজ্জল এবং সুস্পষ্ট রেখায় স্বভৌল গড়নে ও স্বষ্টিলীলায় লীলাময় এই হগুটি । এর সঙ্গে যেন বন্ধুর পাথরটির একটা প্রাণের যোগ অাছে, রূপে ও অরূপে, হন্দরে ও বন্ধুরে যেন নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হইয়া আছে। ভগবানের এই করবিধৃত যে লীলাপদ্মটি ফুটিয়া কুহিয়াছে ইহারই মধ্যে যাবতীয় সৃষ্টির প্রবাসী—জাষাঢ়, ১se৪ [ २१* छां★, >म षe মূল স্বরটি অপূৰ্ব্ব রাগিনীতে অনাদিকাল হইতে অনন্ত রূপে ধ্বনিত হইতেছে। মনে হইতেছে, স্বনীর হাতটির মধ্যে আর একটি প্রস্তরখণ্ড ; তাহারই মধ্য হইতে ফুটিয়াছে একটি সন্তোজাত ফুলের মত শুভ্র স্বকোমল শিশু-প্রত্যেকটি অঙ্গ যেন তার নবনী ছানিয়া’ গড়া হইয়াছে। ভ্রণান্ধকারের মধ্যে যে কুঁড়ি এত tাল স্বপ্ত ছিল, ভগবানের স্বষ্টি-হস্তষ্টি তাহাকেই আজ এতদিন পরে সুর্ধ্যালোকের মধ্যে বাহির করিয়া আনিয়াছে। নবারুণালোকে শিশুর আঁখি ঝলসাইয়া গিয়াছে, দুই হাত দিয়া সে তাই সমস্ত মুখপদ্মটিকে আবরিয়া রাথিয়াছে; ধরণীর বায়ুম্পর্শে তার জীবন চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে, পা দুটি সে তাই এদিক ওদিক ছুড়িতেছে। এই ত সহজ বিষয়টি কিন্তু সমস্ত শিল্পবস্তুটি কি অপরূপ রূপে মণ্ডিত ; ভাবে ও রূপে ইহার প্রত্যেকটি অণু প্রাণবান। একদিকে রূদ্যা যেমন করিয়া রূপাতীত বস্তুকে রূপ দিলেন এবং তাহা অতি সহজেই আমাদের চিত্তকে আকৃষ্ট করিল, তেমনি আর একদিকে এই জীবজগতের প্রতিদিনের একটি সংগ্রাম এমন স্বকৌশলে অথচ এত সহজে রদ্যার শিল্পীহস্তে রূপলাভ করিয়াছে যে তাঁহাকে দেখিবামাত্র প্রত্যেকটি মানবের প্রতিদিনের স্বরাহুর সংগ্রামের চিত্রটি চিত্তপটে ভাসিয়া উঠে। মাচুষের মধ্যে এই যে দেবাসুরের সংগ্রাম-মানুষের যে আত্ম সে চাহে সংসারের সকল পঙ্কিলত হইতে মুক্ত। অসীমের দিকে তার যাত্রা, সে চাহে ইন্দ্ৰিয়াতীতকে লাভ করিতে। যাহা সত্য, যাহা শিব, যাহা স্বন্দর তাহারই উদেখে সে আপনাকে উৰ্দ্ধমুখীন করিয়া রাখে। আর রক্তমাংসের যে দেহ সে চাহে তার পঙ্কিলতার মধ্যে আত্মাকে টানিয়া ডুবাইয়া রাখিতে, সে নিজেও চাহে ইন্দ্রিয়-ভোগের পশুত্বের মধ্যে ডুবিয়া থাকিতে—এই যে সংগ্রাম ইহা চলিয়াছে অনাদি কাল হইতে। কত কবি, কত শিল্পী ত ইহাকে লইয়া শিল্পস্থষ্টি করিয়াছেন, কিন্তু এত সহজে, এমন স্বস্বর করিয়া কেহ বলিতে পারিয়াছে কি ? রদ্যার এই শিল্প স্বষ্টিটিতে মানুষের ষে উৰ্দ্ধমুখীন আত্মা তাহা রূপ লইয়াছে মামুষেরই দেহের রূপে এবং