পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏԳ8 প্রবাসী -আষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড পালাতেন। আমার ইস্কুল একটুও ভালো লাগে না,— যেন খানিকট। কুইনিন। * x গায়ে থাকি সার্ট, পরনে ফিন্‌ফিনে কাপড়, কুচকুচে কালো পাড়,—খালি পা-চোখের পাতার ওপরে বড় একটা তিল । অমর জিজ্ঞাসা করলে—তোমার নাম কি ভাই ? —কিশলয় । বড়দি রেখেছিল । বড়দিই ত আমাকে কবিতা লিখতে শিখিয়েছিল । ওঁর মরার পর আমি একটা লিখেও ছিলাম,-দেখবেন সেটা ? উনি দেখে গেলে কত স্বর্থী হতেন যে, অন্ত নেই। —তুমি কি আজ পড়বে না ? —রোজই ত পড়ি —দেখুন ছেলেবেলায় একটা কবিতা পড়েছিলাম,—তারার বিষয়, ইংরিজিতে। আমার তালে। লাগেনি । তারাকে আমার কি মনে হয় জানেন ? যেন কার অনেকগুলি বাতি জালিয়ে নীচের মানুষদের খুঁজছে, যারা বড়দির মতো কেঁদে কেঁদে ম'রে গেল। আমার এক এক সময় মনে হয় ঐ বড় তারাট। যেন বড়দি । এখান থেকে একজন যায়, আর আকাশে একটি ক’রে বাড়ে। আমি ঐ তারাটাকে নিয়ে কতদিন একটা কবিতা লিখব ভাবছি, পারি না । হয় না। অমর অঙ্কের খাতাটা মুড়ে রেখে বল্লে—নিয়ে এস ত ভাই তোমার কবিতার খাতাটা । - পূরে মাস গুজরানো হয়নি,–দিন বারো পড়ানো হয়েছে মাত্র । পয়লা তারিখ অমর হাত পাতলে মাইনের छम्न । কর্তা বল্লে--সাত তারিখের আগে হবে না । হ’তে হ’তে সতেরো তারিখে এসে ঠেকূল । অমর অবাক হ’য়ে বললে—বারে দিনের মাইনে এই তিনটাকা সাড়ে তিন আন ? কৰ্ত্ত ঘাড় বেঁকিয়ে বলে—কেন হিসেবের এক চুলও ভুল বার করতে পারবে না। নিয়ে এসে ত কাগজ, একটা কল অফ খি ক’যে ফেল। দু’দিন আসনি,—তা ছাড়া একদিন সাত মিনিট আর দু’দিন সাড়ে চার মিনিট লেট করে এসেছিলে— অমরের ইচ্ছা হ’ল মারে ছুড়ে টাকা তিনট। কিন্তু মার পরনের কাপড়ট। একেবারে ছিড়ে গেছে—পুরোনো বইয়ের দোকানে সস্তায় একটা খুব ভালো বই দেখেছিল, যাবার সময় সেটাও কিনে নিয়ে যেতে পারে। সকাল বেলাতেই ইiপানি উঠেছিল সেদিন । তবুও’ কুঁজে হ’য়ে চিকোতে টিকোতে পড়াতে চলল। কিশলয় বল্লে—আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে ? বুকে হাত বুলিয়ে দেব । —Wis - কতগুলি বই গাদ ক’রে তার ওপর মাথাটা রেখে অমর শোয় আর কিশয়ল বুকে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে গল্প শোনে— শেলিকে কলেজ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল, বায়ুরণকে দেশ থেকে । নৃটি হামস্থন ট্রাম-কণ্ডাক্টারি করত। ডষ্টয়ভস্কিকে ফাসি কাঠে তুলে নামিয়ে দিয়েছিল,—গোর্কি থাকৃত উপোস ক’রে,—মুসোলিনি ভিক্ষা করুত পুলের তলায় ব’সে — কিশলয় উৎকর্ণ হ’য়ে শুনতে শুনতে বুকের অারে। অনেক কাছে এগিয়ে আসে । অমর ঐ স্থকোমল সুচারু বুদ্ধিদীপ্ত মুখখানির পানে চেয়ে চেয়ে অনেক কথা ভাবে,—হয়ত এর মধ্যে ভবিষ্যতের ঋষি কবি তন্ময় হ’য়ে আছেন । হঠাৎ দু’জনে শিউরে আঁৎকে উঠল—জানালায় কার পকোনো ঝাঝালো দুই চক্ষু দেখে । কৰ্ত্ত বন্ধ দরজায় পা দিয়ে ধাক্কা মেরে বল্পেন-খোল দরজা শিগগির— কিশলয় ভয়েভয়ে দরজা খুলে দিলে । কৰ্ত্ত এক ঝাকানিতে অমরের হাতটা টেনে শোয়৷ থেকে তুলে দিয়ে দাতে দাত ঘ’যে ব’লে উঠলেন, না পড়িয়ে শুয়ে শুয়ে উনি কবিতা শোনাচ্ছেন। গরচা পয়সা দেওয়া হয় কিসের জন্য শুনি ? নবাবজাদার মতো তক্তপোষে গা ছড়িয়ে জিরোবার জন্য নয়। যাও বেরিয়ে এক্ষুনি— অমর বল্লে—তবে বাকি মাইনেট দিয়ে দিন— —মাইনে দেবে না, আরো ৰি ছু। যা বাকি ছিল,