পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] দুই বার রাজা ৩৭৫ সমস্ত এই বেয়াদবির জন্য ফাইন—কিচ্ছ, পাবে না, যাও চ’লে । দেন টাকাটা দিয়ে নিশ্চয় আরেকবার বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে। পশলার বৃষ্টির পর ঘোলা আকাশে চাদ উঠেছে,— মর, মিউনে,—পথের পাককে ঠাট্ট করতে। ইাপানির টানে কাকূড়ার মতে কুঁকুড়ে অমর নিঃশ্বাসের জন্য ফুসফুসের কসরৎ করছিল। চোখ বুজে খালি একটি ছবি আজও দেখছে—বিষন্ন, অথচ একটি সুকোমল ছবি । বন্ধু মৃত্যু শয্যায়। অমর দেখতে গিয়েছিল। শেফালির মতো শাদ। ধবধবে বিছানা,—তার ওপর এলিয়ে আছে ক্লাস্ত তমুর কমনীয় কাস্তি,—ভাটায় জলস্রোত যেন জিরোচ্ছে । চারপাশে রাশি রাশি ফুল স্ত পীকৃত হয়ে আছে,—বাতাস মন্থর হয়ে গেছে তাই। কারে মুখে একটি রা নেই, সবাইর মুথে নম্র বেদনার শীতল একটি ছায়,—সমস্ত গৃহে বিষাদপূর্ণ একটি মহাশাস্তি। শিয়রের ধারে থান কয়েক বই,—আত্মীয়ের মত শুদ্ধ বেদনায় ঘেষাঘেষি ক'রে বসেছে, আর কয়েকখানি পুরোনো চিঠি । নিষ্ঠুর ডাক্তার পর্যন্ত প্রতীক্ষা করে আছে—মৃত্যুর পদধ্বান শুনতে । শুধু, পায়ের ওপর দুটি হাত রেখে একটি দুঃখী মেয়ে বোবার মতো ব’দে অাছে,-যেন বিসর্জনের প্রতিম | মুখখানি ভারি মলিন ও উদাস, তাইতে এত স্বম্বর –ম নয়, বোন নয়, বউ নয়, যেন আর কেউ । অমরের সেদিন মনে হয়েছিল,—মৃত্যুও একট। বিলাসিত। মেয়েটির বুকের ব্যাথাটি যেন এক অমূল্য বিত্ত । এ ত মরা নয়, মিশে যাওয়া । যেমন মিশে যায় ফুলের গন্ধ বাতাসে,-যেমন গ'লে ষায় স্বৰ্য্যাস্তলালিম भछु फtुग्न | - সন্ধ্যায় টানটা ফের পড়লে অমর বালিশের তলা থেকে দ্বিতীয় বিজ্ঞাপনটি বের করে ঠিকানা ঠাহর করতে छग्रूण । ম। প্রশ্ন করলেন—কোথা যাচ্ছিস্ ? —পাত্রীর খোজে। তোমার কতদিনের ইচ্ছ। অপূর্ণ রাখা অঙ্কুচিত মনে হচ্ছে । এককালে অবস্থা ভালো ছিল ; বাড়ীর চেহারা দেখলে বুঝা যায়। এখন একেবারে গঙ্গাযাত্ৰী বুড়ি । এখনো পাত্র জোটেনি। অমরের বেন একটু আসান হ’ল । বহু কথা-বাৰ্ত্তার পর হ্যামাপদবাবু বল্পেন—ছেলেটি কি করেন ? কত চাহিদা ? —বি-এ পড়ে। এতদিন মা’র গয়না বাধা দিয়ে চলছিল—আর চলেন । চাহিদ,—পড়া খরচ দু' বচ্ছর,— আর নগদ হাজার খানেক টাকা । শু্যামাপদবাবু তাতেই স্বীকৃত ছিলেন। তার কারণ আছে,—দরাদরি করতে গিয়ে কেবলই দাও ফসকেছে। তা ছাড়া মেয়ের ইতিহাসও বড় ভালো নয় ; দেখতে ত নিতাস্ত কুরূপাই,—এত কুৎসিত, যে, ঘাটের মড়ার পর্য্যস্ত নাকি দাতকপাটি লাগে । অমর বল্লে—ছেলেটির কিন্তু এক ব্যারাম আছে,— ইপিানি । প্রায়ই ভোগে । শুামাপদ বাবু তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বৃল্পে—এমন আর কি শক্ত ব্যায়ারাম। ওতে ত আর কেউ মরেন । বয়েস কালে সেরেও যেতে পারে । তা, আপনি কি ছেলের বন্ধু, মেয়ে দেখে যাবেন একেবারে ? অমর বললে—আজ্ঞে না, আমিই পাণিপ্রার্থী,—ওটা একেবারে বিয়ের রাতে সেরে ফেললেই চলবে । দিন ঠিক ক’রে খবর দেবেন আমাদের, ঠিকানা রইল। খামাপদ-বাবুর মনে অনেক প্রশ্ন ঘুলিয়ে উঠলেও কোনোটাই আমোল দিলেন না। খালি মেয়ে পার করতে পারবেন,—তাও অবস্তি বাষটি বছরের বুড়োর কাছে নয়,—এই খবর গিরির কানে দিতেই গিরি উলু দিয়ে উঠলেন। বাড়ীতে সোরগোল পড়ে গেল । বাড়ীর এক কোণে একটি কুৎসিত কালে মেয়ে দীপশিখার মতে কেঁপে উঠল খানিক । মা বললেন—জানা শোনা নেই, কেমন না কেমন মেয়ে,—একেবারে কথা দ্বিয়ে এলি ?