পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭৬ অমর রাগ করে বললে—আর তোমার ছেলেই বা কি গুণধর মা, যে একেবারে পর তার ডানা দুটো সগগে ফেলে রেখে ফাষ্ট ক্লাশ ফিটনে চড়ে তোমার পদ্মবনে এসে দাড়াবেন। শাখ বাজাও মা ! গুণে গুণে হাজারটি নগদা টাকা,—আর দু' বচ্ছর পড়া খরচ । মা অপৰ্য্যাপ্ত খুসি হয়ে গেলেন। বিয়ে হয়ে গেলে কাশী যাবেন, এমন সঙ্কল্পও সম্ভব হ’ল । অমর বললে—তোমার ছেলের এই ত চেহারা,— একটা আবৃহলার চেয়েও অধম । তার ওপর বুকের পাজরায় ঘুন ধরেছে। যা পাও, তাই হাত বাড়িয়ে তুলে নিয়ে । মা বলল্পেন—মেয়ে যদি খোড়া হয় ? —কি যায় আসে তাতে ? তোমার ছেলে যে কুঁজো। টাকাগুলি ত’ চকচকে হবে । সরোজ বললে—কবে প্রেমে পড়লে হঠাৎ ? ফরদ হাওয়ায় পর্দা বেফাঁস হয়ে গেল বুঝি ? লুলী সে ঘরে বসেই পেলাইর কল চালাচ্ছিল, বললে— কবে পড়েছেন উনি পাজি দেখে তারিখ লিখে রেখেছেন কি না । আর জন্মে পড়েছিলেন, এ-জন্মে পেলেন । সরোজ বললে—পড়তে মন যাচ্ছিল না মোটেই, ঘুম পাচ্ছিল । লুসীকে বললাম,—কল চালিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দে দিদি। এবার খামাতে পারিস, আমি অমরের সঙ্গে বেরোচ্ছি। দে ত চাবিট। দুই বন্ধু বেরিয়ে গেল । পিঠের ওপর চুল মেলা, মন্দ্রিাজি মেয়েরা যেমন ক’রে শাড়ী পরে তেমনিই ধরণ শাড়ী পরার, দুটি হাতে সোনার কঙ্কন, স্বচে স্থতো পরাবার সময় চোখের কি তীক্ষ দৃষ্টি। ললাটে আভা । ঘুরে ঘুরে অনেক জিনিষই সওদা করলে দু’জন,—বাক্স বোঝাই ক’রে। টোপর পর্য্যস্ত। তিনটে মুটে । ফেরবার মুখে আরেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা । বয়সে কিছু -३? ! অমরকে জিজ্ঞাসা করলে—কি কবৃছ আজকাল ? প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড —বিয়ে করছি। চূড়ান্ত। আর তুমি ? টিউশানি পেলে ? —পেয়েছি একটা । বৎসামান্য । ঐ গলির বাকের লাল বাড়ীট । —ও ! কত দেয় ? —কিঞ্চিৎ। ল-কলেজের মাইনে সাড়ে সাতটাকা । সরোজ চোখ বড় ক'রে বললে—সাড়ে সাতটাকা ? লজ্জিত না হ’য়েই বললে বন্ধু—ইr, তাই সই। মাইনেট ত’ চ’লে যায়। আর কি বেয়াড়। এ চড়ে-পাকা ছেলেই পড়াতে হয়, ভাই। এইটুকুন বয়েস থেকেই পদ্য মেলাতে শিখেছে। ভাগ্যিস বাপ মা’র ‘নাই নেই এতে, নইলে উচ্ছন্নে যাবার স্থড্রঙ, খোড়া হচ্ছিল আর কি ! মা ব’লে দিয়েছেন, ফের পদ্য মেলালে বেত মারতে । তিনটে থাত প্রায় ভবৃতি ক’রে ফেলেছে ভাই। সব গুলি পুড়িয়ে ফেলেছি কাল । অমর বললে—খুব কাদলে ? —বীপের চড় চাপড়ও ত কম থায়নি । মা তার হাতের শিল নিয়ে পর্য্যস্ত তেড়ে এসেছিল । কবিতা লিখতে গিয়েই না ছেলেট এবার অঙ্কে একেবারে গোল্লা পেলে । অমরের মনে পড়ছিল, সেই থাকি সার্ট, কোমরে কাপড়ের সেই ছোট আলগা বঁধুনিটি,—সেই তরল জ্যোৎস্নার মতো ফুটি চোখ, সেই বালি-কাগজের ছেড়াখোড়া খাতাটা, পেন্সিল দিয়ে লেখা কবিতা, নাম “বড়দি বা বড় তারা",–একদিন ছোট্ট কচি হাতখানি দিয়ে বুকটা আস্তে একটু ড’লে দিয়েছিল। অমর ডাক্তারের কাছে গিয়ে বললে—রোজ শেষ রাত্রেই ইপিানিটা চেগে আসে। একটা ইন্‌জেকৃশান দিয়ে দিন, যাতে অন্ততঃ আজ রাতটা রেহাই পাই। আজ আমার বিয়ে কি ন । ডাক্তার বিস্মিত হলেন বটে। ষাবার সময় অমর টেবিলের ওপর একটা নিমন্ত্রণপত্রও রেখে গেল । বউ-ভাতে ত’ কাউকে খাওয়াতে পারবে না,তাই বার