পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] সম্পাদকের চিঠি 8ళి లి সহিত আমাদের প্রতিযোগিতা করা সোজা নয়, যদিও অসাধ্যও মোটেই নয়। কবিকে র্তাহার কোন ইউরোপীয় কৃতী সম্পাদক বন্ধু বলেন, যে, ভারতবর্ষের সমসাময়িক ঘটনা ও সমস্যাদি বিষয়ে কোন ভারতীয় লেখককে যদি তিনি পৃথিবীর ঘটনাস্রোত ও অবস্থাচক্রের সহিত সম্বন্ধ রাখিয়া প্রবন্ধাদি লিখাইয় পাঠান, তাহা হইলে তাহা মুদ্রিত হইবে, এবং ভারতবর্ষের ঠিক অবস্থা বুঝিতে পাশ্চাত্যদের স্ববিধা হইবে। টেনে কবির সহিত কথা হইতেছিল, আমাদের দেশের কাহার কাহার দ্বারা এই রকমের প্রবন্ধ লিখিত হইতে পারে। কাহারও নাম করিয়া আমরা কোন আলোচনা করি নাই। অন্যান্ত কথার মধ্যে আমি একটা কথা যাহা যলিয়াছিলাম, তাহার উল্লেখ করিতেছি । আমি বলিয়াছিলাম, আমরা নিজেদের পরাধীনতা ও নানা দুঃখদৈন্তে এমন অভিভূত, কিম্ব যাহারা অভিভূত নহেন, তাহারাও তৎসমুদ্ৰায়ের প্রতিকার-চিস্তায় ও প্রতিকারের উপায় অবলম্বনে এত ব্যাপৃত, যে, পৃথিবীর সমস্তাসকলের জ্ঞানলাভের এবং আমাদের সমস্তাগুলিকে তৎসমুদ্ৰায়েরই একটা অংশ মনে করিয়া সমগ্র সমস্যার আলোচনা করিবার আমাদের অনেকেরই প্রবৃত্ত, অবসর ও অভ্যাস নাই । এইজন্য ইউরোপীয় সম্পাদক ঠিক যে ভাবের প্রবন্ধ চাহিয়াছেন, তাহ। লিখিবার বহু লোক অনায়াসেই পাওয়া যাইবে, মনে হয় না। কবি আমার কথা সায় দিয়াছিলেন। বার্লিন স্বভাবতঃ বালুকাস্তীর্ণ অতুচ্চ এক ভূখণ্ডের উপর নিৰ্ম্মিত ; বাf টক সাগরের পৃষ্ঠদেশ হইতে উহ। কেবলমাত্র একশত ফুট উচু। স্বতরাং বালিনের স্বাভাবিক দৃশ্বের অহঙ্কার করিবার কিছুই নাই। কিন্তু মাছুষের যতট। সাধ্যায়ত্ত, বার্লিনের জন্ত তাহ করা হইয়াছে । ইহার কলকারখানা, পণ্যশিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষালয়, চিত্তবিনোদনের নান স্থান ও উপায়, সভ্যতার উৎকর্ষসাধনের নানা ব্যবস্থা, ইহাকে জগতের নগরসমুহের মধ্যে উচ্চস্থান দিয়াছে। ইহার লোকসংখ্যাও খুৰ বাড়িয়া চলিয়াছে। ১৮৯৪ ঈশাদে ইহা ১,৮২,১৫৭ জন মাছুবের বাসস্থান ছিল। ১৯১৯ সালে লোক সংখ্যা বাড়িয়া ১৯,৭২,৫৯৯ হয়। ১৯২৩ সালে সহরতলীর কতকগুলি স্থান ইহার সহিত যুক্ত হওয়ায় ইহার লোক সংখ্যা ৩৮,০৩,৯৪১ হয়। সহরের মাঝখানটা এখন প্রায় কেবল বাণিজ্যের জন্যই ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ বাড়ী ইষ্টকনিৰ্ম্মিত। অনেক বড় বড় অট্টালিকা আছে বটে, তবে স্থাপত্য একঘেয়ে রকমের । সহরের সকলের চেয়ে ভাল রাস্তার নাম উন্টের ডেন লিগুেন, অর্থাৎ "লেবু বৗখিকা”—যদিও লেবু ছাড়া অন্য গাছও এই রাস্তার ধীরে আছে। বালিনের বৃহত্তম লাইব্রেরীতে ১৭,৫০,• • • মুদ্রিত পুস্তক এবং ৫,•••হস্তলিপি আছে। সহরটি জাতীয় নানাবিখ্যাত ব্যক্তির মূৰ্ত্তিতে শোভিত। নানা প্রকার স্কুলের ংখ্যা খুব বেশী। বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্যতম না হইলেও, উহা ১৮০৯ সালে স্থাপিত হইয়া থাকিলেও, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় সকলের মধ্যে উহার স্থান উচ্চ। স্ববিখ্যাত বহু অধ্যাপক এখানে শিক্ষণ দিয়াছেন ও দিতেছেন । বর্তমানে ইহার অধ্যাপক সংখ্যা মোটামুটি ৬e e এবং ছাত্র সংথ্যা ১২• • • । নুভ ত্ববিষয়ক ও অন্ত নানাবিধ মিউজিয়ম এখানে আছে। চিত্রশালাও অনেকগুলি । পণ্যশিল্প শিক্ষণ দিবার উচ্চতম ও বৃহত্তম বিদ্যালয় শালটেনবুর্গে স্থিত। ইহা বাহির হইতে দেথিয়ছিলাম। কাইজার হোফ হোটেলে দেশী বিদেশী কয়েকজন অপরিচিত ও পূৰ্ব্বপরিচিত ব্যক্তির সহিত সাক্ষাৎ হয়। টলষ্টয়ের বন্ধু ও চরিত্যখ্যায়ুক পল ৰিক্লকফ কে এখানে দেখি । তিনি অতি বুদ্ধ, ভ্ৰ পৰ্য্যস্ত শাদী হইয়। গিয়াছে ; কিন্তু অথৰ্ব্ব নহেন । তিনি সস্ত্রাস্তবংশজাত, কিন্তু শ্রমিক দলে ধোগ দিয়াছেন। বলিলেন, অধ্যাপক কালিদাস নাগ বিশ্বভারতীর জন্য রুশিয়ায় প্রকাশিত যে সব সংস্কৃত গ্রন্থ চাহিয়াছিলেন, তাহ একত্ব করিয়া রাখা হইয়াছে ; কি উপায়ে পাঠাইতে হইবে, জানিতে পারিলেই প্রেরিত হইবে । বিরুকফ মহাশয়ের মুখে রুশিয়ার অবস্থা শুনিয়া আমাদের ঐ দেশ দেখিবার ইচ্ছা প্রবলতর হয়। হোটেলে নরওয়ের অধ্যাপক ষ্টেন কোনো ও র্তাহার পত্নীর সহিত দেখা হইল। শাস্তিনিকেতনে ইহাদের প্রতিবেশী ছিলাম বলিয়৷ ইহাদের সহিত আগে হইতে পরিচয় ছিল। ইহার শ্বশুর বাড়ী বালিনে। সেখানে অধ্যাপক কোনে রবীন্দ্র