পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8eb” প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রাগের একটি ইস্কুল আমার বড় ভাল লাগিয়াছিল। এখানে রাস্তায় স্কুড়ান অনাথ-ও বিকলাঙ্গ ছেলেমেয়েদিগকে শিক্ষা দেওয়া হয়। তাহাদের গান ও নৃত্য বড় সুন্দর। নানারকম সুন্দয় কারুকার্ষ্য দ্বারা তাহার। রোজগারও করে। জন্মাবধি উভয়হস্তহীন একটি ১৮১৯ বৎসরের ছেলে কেবল পায়ের সাহায্যেই স্বন্দয় কারুকার্ধ্য ৰরিতেছে দেখিলাম। কৌতুক দেখাইবার জন্ত সে পায়ের দ্বারাই দিয়াশলাইয়ের বাক্স ধরিল, কাঠি বাহির করিল, বাক্ষর পাশে ঘৰিয়া জালিল, মুখে চুরুট তুলিল, এবং তাহাতে আগুন ধরাইল । আমাদের দেশে এইরূপ অঙ্গহীন অনাথ ছেলেদের কি দশ হয় ? প্রাগ খুব পুরাতন ও সুন্দর সহর । ৭২২ ঈশাবো উহ! প্রতিষ্ঠিত হয় বলিয়া জনশ্রুতি অাছে । আমি কিন্তু উহ! ভাল করিয়া দেখিতে পারি নাই। নানাকারণে মন ভাল ছিল না। তা ছাড়া, কতকটা অধ্যাপক ঙ্গেজনীর উপর নির্ভর করিয়াছিলাম ; কিন্তু তিনি একদিন ঠিক সময় নির্দেশ করিয়াও আসিতে ও কিছু দেখাইতে পারেন নাই । যখন জেনীভায় ছিলাম, তখন তিনি আমাকে স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া প্রাগে আসিতে নিমন্ত্রণ করিয়াছিলেন, এবং জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, “আমাদের স্বন্দর প্রাহ দেখিবেন না কি ?” প্রাগে অামার কোন সাহায্য করিতে পারিলে তিনি সন্মানিত ও আহলাদিত হইবেন লিখিয়াছিলেন । কিন্তু কাৰ্য্যতঃ তিনি কিছু করিতে পারেন নাই । ভারতবর্যের লোকসংখ্যার আত্যস্তিক বৃদ্ধি ইহার দারিদ্র্যের প্রধান কারণ বলিয়া ইংরেজরা বর্ণনা করেন । কিন্তু অন্যান্ত দেশে ত লোকসংখ্যা খুব বাড়িলেও দারিদ্র্য হয় না । আগে বার্লিনের লোকসংখ্যা বৃদ্ধির কথা লিথিয়াছি। প্রাগের কথাও বলি । ১৮৮০ সালে উহার লোকসংখ্যা ছিল ২,৯৩,৮২২ ; ১৯২১ সালে উহ্য হয় ৬,৭৬,৬৫৭ । যখন গত (১৯২৬) অক্টোবর মাসে সেখানে ধাই, তখন অধ্যাপক লেজনীর মুখে শুনিলাম লোকসংখ্য। আট লাখের উপর হইয়াছে। কিন্তু দারিদ্র্যের চিহ্ন : কোথাও দেখিলাম না। রাস্তায় একটাও ভিখারী নাই । অবশ্য এত তাড়াতাড়ি অধিবাসীর সংখ্যা বাড়িলে ७iशरमव्र छछ रु८९छे घब्रदाफ़ी ७iफ़ॉऊांफ़ि 8उग्रौ कब्र কঠিন । এইজন্য দূর হইতে দেখিলাম কতকগুলা পুরাতন রেলগাড়ী বাসগৃহ রূপে ব্যবহৃত হইতেছে। নানারকম কল, রাসায়নিক দ্রব্য, চামড়া ও কাপাসের নানাবিধ জিনিষ, দস্তান প্রভৃতি প্রাগে তৈরী হয়। চেকোশ্লোভাকিয়া ভারতবর্ষে চিনি এনামেলের জিনিব, কাঠের জিনিব, কাপড় প্রভৃতি চালান করে । আমরা ইউরোপের কোন দেশে কি জিনিব তৈরী করিয়৷ পাঠাই ? প্রাগের একখানি প্রধান চেক্ সংবাদপত্রের দুজন প্রতিনিধি ভারতবর্ষের অবস্থা জানিবার জন্ত আমার সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন । আমি তাহাদিগকে অনেক কথা বলিয়াছিলাম। কিন্তু তাহারা কি টুকিয়া লইলেন, কিই বা ছাপিলেন, বলিতে পারি না। রাত্রে ঘাম হওয়ায় ও অন্যান্য কারণে আমি প্রাগ হইতে জেনীভায় ফিরিয়া আসয় সেখানে কিছুদিন বিশ্রাম করিয়া দেশে ফরিতে ইচ্ছা করিয়াছিলাম । কিন্তু অধিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় খুব ভাল ডাক্তার আছেন, এই কারণ দেখাইয়। ক্রমান প্রশাস্তচন্দ্র মহলানবীশ আমাকে ভিয়েন পর্যস্ত যাইতে বলিলেন । সুতরাং ভিয়েন পৰ্য্যস্ত যাওয়াই স্থির করিলাম। ট্রেনে রবিবাবু অবস্থ হন। ইমান প্রশান্ত, শ্ৰীমতী নিৰ্ম্মলকুমারী দেবী ও আমি খাইবার গাড়ীতে বসিয়াছি, এমন সময় সেই গাড়ীতেই উপবিষ্ট এক জাপানী ভদ্র লোক উঠিয়৷ আসিয়া আমাকে বলিলেন, “আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিন, জিজ্ঞাসিতে পারি কি ?” আমি বলিলাম, “আমি রবীন্দ্রনাথ নহি । তিনি এই গাড়ীতেই নিজের কামরায় আছেন।” তখন জাপানীটি ফিরিয়া গিয়া নিজের জায়গায় বসিলেন ।