পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88e প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড অধিকার লাভ প্রচেষ্টায় যোগ দিয়াছে কিনা, সন্দেহ । যাহারা যোগ দিয়াছে, তাহারা প্রধানত: অমুসলমান, এবং মুসলমানদের ৰোগ দেওয়া না দেওয়ার কথা না ভাবিয়াই তাহার কাজ করিয়াছে। তাহাতেও কিছু ফল ফলিয়াছে। স্বতরাং সব হিন্দুরা যদি চেষ্টা করে, সে চেষ্ট সফল হইবেই । মুসলমানের যোগ দিলে তাল, ন দিলে দুঃখের বিষয় ; কিন্তু তাহারা যোগ না দিলে বিশ্ব রথের চাকা অচল হইয়া থাকিবে না। যাহার। আইনবিরুদ্ধ উপায়ে দেশকে স্বাধীন করিতে গিয়া প্রাণ হারাইয়াছে, দ্বীপান্তরিত হইয়াছে, জেলে গিয়াছে, তাহারা সবাই অমুসলমান । তিন নম্বর রেগুলেগুন ও বেঙ্গল অর্ডিঞ্জান্স অনুসারে যাহারা বিন বিচারে বন্দী হইয়। প্রাণ হারাইয়াছে, স্বাস্থ্য হায়াইয়াছে, স্বাধীনত। হারাইয়াছে, তাহারা সবাই অমুসলমান ৷ "মুসলমানের প্রাণপণ করিতেছে না, অতএব আমর। প্রাণপণ করিব না ; মুসলমানের বঙ্গের শতকরা ৫৪ জন, অতএব ফাসী, ক্ষররোগ আদিতে মৃত্যু, দ্বীপ চালান, বিচারাস্তে কারাদণ্ড, এবং ৰিনাবিচারে স্বাধীনতালোপ যাহাঁদের হইবে তাহীদের শতকরা ৫৪ জন মুসলমান হউক, তবে আমরা দেশের জন্ত নিজেকে বিপন্ন করিব,” এরূপ প্যাকুট বা চুক্তি বেহিসাবী প্রাণখরচ বাঙালী যুবকেরা কেহ চায় নাই । তাহার। বিজ্ঞজনোচিতও ভাল কাজ করিয়াছে কিনা, তাহা এখন বিচাৰ্য্য নহে । এখন বক্তব্য এই, যে, তাহারা যাহাকে অন্যায় অত্যাচার অবিচার মনে করিয়াছিল, তাহাতে প্রাণে তীব্র জাল অনুভব করিয়া কার্ধ্যে প্রবৃত্ত হইয়াছিল, সব সম্প্রদায়ের লোক তাহাদের কার্য্যে যোগ দিতেছে কিন, তাহার। তাহা ভাবে নাই । ভারতবর্ষ অল্প যাহা রাষ্ট্রীয় অধিকার পাইয়াছে, তাহ আইনসঙ্গত ও বেআইনীউভয়বিধ চেষ্টার সাক্ষাৎ ও পরোক্ষ ফলে এবং ঘাতপ্রতিঘাতে পাইয়াছে, এবং মুসলমানরা হিন্দুদের সহিত যোগ না দেওয়া সত্বে ও পাইয়াছে। অতএব,মুসলমান যোগ দিলে ভাল, নতুবা অমুসলমানরাই স্বরাজ স্থাপনের চেষ্ট৷ করিবে, এইরূপ মনোভাব লইয়। কাজ করাই উচিত। স্বরাজ স্থাপনের দায়ট। যদি হিন্দুরই হয়, কিন্তু স্বরাজের ফলভোগ করার অধিকারটা যদি মুসলমানেরও হয়, ত, তাহাই হউক । বৃটিশ-শাসিত ভারতের ২৪,৬৯,৬৩,২• • জন অধিবাসীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হিন্দু, মুসলমান সিকিরও কম । মুসলমানেরও চেষ্টার মুল্য নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু হিন্দুর চেষ্টার কি কোনই মূল্য নাই ? ভারতীয় সকল মুসলমানের মনের ভাব কিরূপ, জানি না, বলিতে পারি না । কিন্তু তাহীদের অনেকে যে ভারতীয় অমুসলমান ও ভারতীয় মুসলমান অপেক্ষা বিদেশী মুসলমানদিগকে অধিকতর আত্মীয় মনে করে, তাহাতে সন্দেহ নাই। তাহার একটা সোজা প্রমাণ এই, যে, যুদ্ধে ব্যাপৃত কিম্ব যুদ্ধে বিপন্ন তুর্কের জন্য ও রিফের জন্য বিস্তর ভারতীয় মুসলমান টাকা দিয়াছে, কিন্তু ফুর্ভিক্ষাদিতে বিপন্ন ভারতীয় হিন্দুর কথা দূরে থাকৃভারতীয় মুসলমানের জন্যও টাকা দেয় না। অথচ বিদেশী মুসলমানর ভারতীয় মুসলমানদের জন্ত একটা কানাকড়িও খরচ করে না, তাহীদের প্রতি কোন দরদ বা শ্রদ্ধা দেখায় না । যাহারা গোলামী করে, এবং স্বাধীনতার চেষ্টায় যোগ দিবার আগে দূরদস্তুর করে, তাহাদিগকে শাসকশোষক- , জাভির ইংরেজ ভিন্ন অন্য কোন স্বাধীন জাতির লোক মৌখিক সম্মানও দেখাইতে পারে না, অস্তরিক শ্রদ্ধ। ত দুরের কথা। কমাল পাশ ভারতীয় মুসলমানদিগকে বলিয়াছিলেন, “তোমর। বেশ বক্তৃত করিতে পার বটে, কিন্তু যুদ্ধের সময় আমাদের জন্য ন লড়িয়া আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের শত্রু ইংরেজদের ফৌজভুক্ত হইয়া লড়িয়াছিলে । আমরা সুলতানকে রাখিব কি না, খলিফা রাখিব কি না, সেটা আমাদেরই ভাবিবার কথা । তোমাদের কথা শুনিবার আমাদের দরকার নাই তোমরা নিজেদের চরথায় তেল দাও গিয়া।” তিনি যাহা বলিয়াছিলেন, তাহার তাৎপৰ্য্য এইরূপ । ভারতবর্যে আর থাকিবেন না বলিয়৷ যে-সব মুসলমান আফগানিস্থানে চলিয়া গিয়াছিলেন, সেই মহাজfরনদিগের কি দশা হইয়াছিল, তাহ। বর্ণনা করা অনাবশ্যক । ইবন সীদের নেতৃত্বে হেজাজে সমগ্র মুসলমান জগতের যে মন্ত্রণা সভা হইয়াছিল, তাহাতে মৌলান মহম্মদ আলির মুরুবিয়ান ত ঘটেই নাই, অধিকন্তু ভারতীয় মুসলমানদের বিশেষ কোন খাতির হয় নাই । দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেস বর্গের “ষ্টার” (The Star) নামক কাগজের জন্য একজন সাংবাদিক রিফদের বন্দী নেতা আবদুল করিমের সহিত রিইউনিয়ন দ্বীপে দেখা করেন । তাহার এই সাক্ষাৎকারের বৃত্তাস্তে, সাক্ষাৎকারের পূর্বে আব্দুল করিমের জেলার যাহা বলিয়াছিলেন, তাহ ছাপা হইয়াছে। যথা— “I don't think Krim will see you, much less talk to you”, said Captain Sagnes, and he went on to say : “He prefers to plough a lonely furrow. So far he has not been interviewed by anybody, and he firmly refused to see or have anything to do with the Moslems who are Indians.” They sent a delegation to interview him, but Krim threw up this hands and said : “Send them away. I will have nothing to say to them or their people.” তাৎপৰ্য্য। জেলার বলিলেন, “করিম তোমার সঙ্গে দেখা করিৰেল