পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] প্রাচীন ভারতীয় রাজকোষের আয়-ব্যয় 8\ులి চেষ্টা করিতে ক্রটি করা হইত না। প্রাচীন ভারতের চার প্রথা যে কিরূপ পাকাভাগে গঠিত ছিল— অর্থকৃচ্ছে অর্থলাভ জন্য উদ্ভাবিত উপায়ের প্রসঙ্গেও তাহার দুই একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া যাইতে পারে। গৃঢ়পুরুষ বা গুপ্তচরদিগের সাহায্য দ্বারাও রাজা ও রাজামাত্যগণ অনেক অসাধু উপায়ে টাকা উঠাইরা লইতেন। তবে এই উপায়গুলি দূৰ্য্য অর্থাৎ রাজদ্বেষী ও অধাৰ্ম্মিক ব্যক্তিদের উপরই প্রযুক্ত হইত—ধাৰ্ম্মিক বা সাধুপ্রকৃতিক ব্যক্তিদের উপর নহে। কখন সিদ্ধ পুরুধের বেশধারী চর জন্তুকবিদ্যা বা মায়াবিদ্যার বলে লোককে ধনাঢ্য করিয়া দিবার ক্ষমতা রাখে বলিয়ু প্রকাশ করিয়া রাজদ্বেষীকে কৌশলে সৰ্ব্বস্ব-হরণের পথে আনয়ন করিত। কখন বণিকের বেশধারী চর বৃহদাকার কোন বাণিজ্যের ছলে অন্যের মনে বিশ্বাস উৎপাদন করিয়া নগদ টাকা ঋণস্বরূপ লইয়। পরে সেই উত্তমর্ণের অর্থশোষণের উপায় করিয়া লইত। কখনও সাধ্বী নারীর বেশধারিণী দুশ্চরিত্র স্ত্রীলোক দ্বারা দুষ্যজনকে উন্মাদিত করিয়া গুপ্তচরেরা সেই স্ত্রীলোকের বাড়ীতেই সেই ব্যক্তিকে ধরাইয়া দিয়া রাজদ্বারে তাহার সর্বশ্ব-হরণের ব্যবস্থা করাইতে পারিত। এইরূপ মাতুব্যঞ্জন স্ত্রীলোকদ্বারা ও ভৃত্যব্যঞ্জন, কৰ্ম্মকরব্যঞ্জন, চিকিৎসকব্যঞ্জন প্রভৃতি গৃঢ়পুরুষ দ্বারা—পুত্ৰমারণ বেতন দানে কূট মুদ্রাদান, কুটমূদ্র নির্মাণার্থ যন্ত্রাদি উপকরণ প্রাপ্তি, ঔষধছলে বিষ প্রয়োগ প্রভৃতি নানাপ্রকার ছল প্রযুক্ত দোষের উদ্ভাবন করিয়া দুষ্ট লোকদের সৰ্ব্বস্ব হরণ করাইয়া রাজা অর্থঙ্কচ্ছ-সমরে কোবসঞ্চয়ের ব্যবস্থা করিতে পারিতেন। রাজনীতি-ক্ষেত্রের কার্য্যবশতঃ এইরূপ অন্যধ্য রীতিদ্বারা অর্থসংগ্রহ অনেকেই সমর্থন করিতে পারেন। মহাভারতের একস্থানে উল্লিখিত আছে—“ন কোশ শুদ্ধশোঁচেন ন নৃশংসেন জাতুচিৎ। মধ্যমং পদমাস্থায় কোশ-সংগ্রহণং চরেৎ ।” সুতরাং কেবল পবিত্র উপায়ে সৰ্ব্বা কোষসঞ্চয় সম্ভাবিত নহে। শুক্রাচার্ঘ্যের মতেও বিপদ উপস্থিত হইলে রাজা দগুগন্ধ ও ভূমিলব্ধ করের ও বাণিজ্যলব্ধ শুঙ্কের বৃদ্ধিদ্বারা অর্থাগমের উপায় করিয়া লইতে পারিতেন ; এমন-কি তীর্থভূমি ও দেবদর্শনজনিত কয়ও গ্রহণ করিতে পারিতেন। তাই তিনি লিখিয়াছেন—“দণ্ডভূভাগ শুস্কানামাধিক্যাৎ কোশবৰ্দ্ধনম্। অনাপদি ন কুৰ্ব্বীত তীর্থদেবকরগ্রহাৎ ॥” শত্রুর বিনাশ জন্য সৈন্ত সংরক্ষণে উদ্যত নৃপতির বিশিষ্ট দও ও শুল্কাদির গ্রহণ তিনি অমুমোদন করেন। রাজকোষ-সম্পৰ্কীয় রাজকৰ্ম্মচারী—সন্নিধাত সমাহৰ্ত্ত প্রভৃতি রাজকোব-সম্পৰ্কীয় রাজভৃত্যগণের মধ্যে সৰ্ব্বপ্রধান হইলেন “সন্নিধাতা”। কোষে প্রবেশু সৰ্ব্ববিধি দ্রব্য ও নগদ টাকা তিনি সম্যগ ভাবে নিধান করেন বলিয়া তাহার নাম “সন্নিধাতা।” নানা শ্রেণীর নিম্নস্থ কৰ্ম্মচারী সহায়রূপে লইয়। নিচয় কৰ্ম্ম অর্থাৎ দ্রব্য-হিরণ্যরূপ রাজস্ব সংগ্ৰহ করাই তাহার কাজ ছিল । তিনি অষ্টাদশ "তার্থের” একতম,—মহামাত্য বা মহামাত্র পর্য্যায়-ভুক্ত রাজ*Stål i ozos &festo “Chancellor of the Exchequer” বলা যাইতে পারে। রাজার কোষ-গৃহ (স্বর্ণরত্নাদি নিধানস্থান) পণ্যগৃহ (বিক্রেয় দ্রব্য সন্নিবেশ স্থান), কোষ্ঠাগার (উরোপযোগী তৈল-ঘূতাদি-নিক্ষেপস্থান) কুপ্যগৃহ (সারদারু বেণু প্রভৃতি রক্ষণস্থান), আয়ুধাগার ও বন্ধনাগার এই ছয়টি বিভাগের উপর অবেক্ষণ-ভার তাহার উপর সমৰ্পিত থাকিত। স্বতরাং কোষাধ্যক্ষ প্রভৃতি ছয়টি অধ্যক্ষের উপরেও র্তাহার অধিকার বিস্তৃত ছিল। তাহাকে রূপ-দর্শকের পরীক্ষিত রত্ব ও হিরণ্য এবং মাপ-বিষয়ে অনূ্যন ও নূতন ধান্য, পণ্য, কুপ্য ও আয়ুধ সংগ্ৰহ করিতে হইত। এই ধনের অtহরণ ব্যাপারে কোনও প্রকারের বিপর্যয় ঘটিলে তিনি অপরাধীকে দণ্ড-বিধি আইন অমুসারে দণ্ড দেওয়াইতে পারিতেন। সন্নিধ্যতার আরও একটি চমৎকার কৰ্ত্তব্য ছিল। বিগত এক শত বৎসরের জনপদোখিত ও নগরোখিত আয়ের হিসাব র্তfহাকে জানিয়া রাখিতে হইত। জিজ্ঞাসা মাত্র তাহা তিনি বলিয়া দিতে পারিতেন। কোষের ব্যয়িতাবশিষ্ট ( balance) তাহার জানা থাক! চাই। নানাভাবে উৎপন্ন রাজশ্বের পারিভাষিক নাম সমুদয় (Revenue ) । এই সমুদ্রন্থের প্রবর্তনকারী উচ্চপদস্থ মহামাত্যের নাম সমাহর্তা। ঘুর্ণাদি পূৰ্ব্বোল্লিখিত লাতটি