পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] চণ্ডীদাস-গণ 8&6: কিন্তু কোষসম্বন্ধীয় জায়ব্যয়ব্যাপারে মূল ক্ষমতা মন্ত্রিপরিষদের হস্তেই পৰ্য্যবসিত ছিল, কারণ রাজা মন্ত্রিপরিষদের সহিত পরামর্শ না করিয়। রাজকোষ-সম্বন্ধে কোন নীতিই অবলম্বন করিতে পারিতেন না। মসুর মতও এই বিষয়ে স্পষ্ট। তিনি বলেন ( মনুসংহিতা, ৭৫৬ ইত্যাদি ) সমুদয়-নিরূপণ (রাজস্ব-নিরূপণ ) ও লস্কপ্রশমন অর্থাৎ লন্ধকোবের সৎকার্ধ্যে বিনিয়োগ এই উভয় কার্ষ্যে রাজা সচিবগণের সহিত চিত্ত-পরামর্শ করিষেন। তদীয় অর্থশাস্ত্রে রাজতন্ত্র রাজ্যেরই প্রাধান্য স্বীকার করিয়া মহামতি কৌটিল্য পূৰ্ব্বাচাৰ্যদিগের মত উত্থাপন করিয়া ইহাও প্রতিপন্ন করিতে চেষ্টা করিয়াছেন যে, যেসমস্ত গুরুতর বিষয়ের জন্য রাজাকে অমাত্যবর্গের পরামর্শের উপরই নির্ভর করিতে হইত তন্মধ্যে রাজ্যের আয়-ব্যয় কৰ্ম্ম একতম। স্বতরাং প্রাচীন কালে করাদিদ্বারা রাজকোঁধে হিরণ্যাদির উৎপাদন ও উৎপাদিত হিরণ্যাদির প্রয়োজনীয় কার্ধ্যে বিনিয়োগ এই উভয় কাৰ্য্যই মন্ত্রি-পরিবদের উপরই মূলতঃ অর্পিত ও পর্য্যবসিত ছিল। অন্য ভাবে দেখিতেগেলে ইহা ৪ বলা যায় যে, রাজস্ব সেকালে প্রজার আয়ত্ত ছিল, কারণ রাজা অত্যুৎপীড়ক হইলে প্রজাবৰ্গ রাজদেয় কর রূপ ভূতি বদ্ধ করিয়া দিয়া নূতন রাজ নিৰ্ব্বাচনের উদ্যোগী হইয়া উঠিত। প্রাচীন রাজনীতি-শাস্ত্রে এরূপ ঘটনার দৃষ্টান্ত দেখিতে পাওয়া ६iध्र । ভারতীয় নৃপতিগণ রাজকোষ কি প্রকারে রাজপুরুষদের লোলুপ দৃষ্টি হইতে রক্ষিত হইতে পারে, কি উপায়ে রাজপ্রাপ্য শস্য ও পণ্য-সম্পৎ বৃদ্ধি পায়, কিসে দৈব-জনিত উপসৰ্গাদি নিবারিত থাকে, কিসে পরিহার-ভূমির হ্রাস পায়, কি রকমে বা নগদ মুদ্রার সঞ্চয় ঘটে ইত্যাদি বিষয়ে সৰ্ব্বদা অবহিত থাকিতেন এবং কোন নিযুক্ত রাজভৃত্য রাজকোষস্থিত ধন-সম্পত্তি গোপনে নিজলাভের লোভে বৃদ্ধি বা স্বদে প্রয়োগ না করেন, রাজ-পণ্য দ্বারা নিজে বাণিজ্য ব্যবসায় না করেন, উৎকোচাদি লোভে আদায়ের নিয়মিত সময়ে রাজস্ব আদায় না করেন, নির্দিষ্ট আয়ের পরিহানি না ঘটfন ও ব্যয়বৃদ্ধি না করেন, অথবা রাজদ্রব্যের ভোগ স্বয়ং না করেন, রাজার প্রাপ্য উত্তম দ্রব্যাদির পরিবর্তে রাজকোষের জন্য আসার বস্তু গ্রহণ না করেন, কিম্বা উৎপন্ন সম্পূর্ণ আয় নিবন্ধ-পুস্তকে আরোপিত না করেন বা পুস্তকারোপিত ব্যয় জন্য চিহ্নিত অর্থ খরচ করিতে না দেন এবং আয়-ব্যয়ের পর অবশিষ্ট নীবী নামক শুদ্ধ আয় রাজকোষে প্রবেশ না করেন তৎপ্রতিও তাহারা সৰ্ব্বদা জাগ্রত থাকিতেন । যেখানে প্রজার মধ্যে সৰ্ব্ববিবয়ে সভ্যতা প্রবিষ্ট, ষেধানে জাতির বিদ্যাবুদ্ধিজনিত গৌরব অক্ষুন্ন—সেখানে,কি প্রাচীনকালে, কি মধ্যযুগে, কি বর্তমানে সৰ্ব্ব সময়েই রাজগণকে প্রায় একই উদ্দেশ্বে-প্রজার হিতের জন্যই—রাজ্য পরিচালন উপসংহার করিতে হইয়াছে ও হয়, তবে বিভিন্ন, সময়ের কার্য্যউপসংহারে এই বল। যাইতে পারে যে, পূৰ্ব্বকালের প্রণালীর পার্থক্য মাত্র লক্ষিত হয়—এই বিশেষ। চণ্ডীদাস-গণ শ্ৰী মণীন্দ্রমোহন বসু প্রাচীন কবিগণের ভণিত পর্য্যালোচনা করিলে, নানাপ্রকার গরমিলের মধ্যেও, অনেক কবির ভণিতা দেওয়ার যে এক-একটা নির্দিষ্ট ধারা ছিল তাহ বেশ বুঝা যাইতে পারে। যেমন কাশীরাম দাসের বিশেষত্ব ছিল এই যে, سیستمهای তিমি "অমৃত-সমান মহাভারতের কথা পুণ্যবান ব্যক্তিগণকে শুনাইয়াছেন। কৃত্তিবাস নিজেকে “পণ্ডিত” “বিচক্ষণ" প্রভৃতি জাখ্যায় বিভূষিত করিয়াছেন, মালাধর বস্তু "গুণরাজ খান”-ভণিতায় আত্মপ্রকাশ করিয়াছেন ;