পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(సిరి প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৫৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ছিল। শ্ৰীযুক্ত প্রশাস্তচন্দ্র মহলানবিশ আগে ভিয়েনা দেখিয়াছিলেন ; তিনি আমাকে দুই এক দিনে যতটা দেখা যায় দেখাইলেন। ভিয়েনার প্রধান রাস্ত সিংষ্ট্রাসে খুব প্রশস্ত ও সুন্দর। ইহা পাদচারী পথিকদের জন্য চারিটি ও মোটর আদি স্থানের জন্য তিনটি পথে বিভক্ত । মাঝখানের পাদপথ দুটির প্রত্যেকের দুই পাশে গাছের সারি এবং এক-একটি গাছ ঘিরিয়া ফুলের কেয়ারী আছে । আলোকস্তম্ভগুলির লন্ঠনের কিছু নীচে ফুলগাছ ঝুলান আছে। অষ্ট্ৰীয়ার সম্রাটের ঐতিহাসিক পুরাতন প্রাসাদের বাগান সাম্রাজ্যের সময়ও সৰ্ব্বসাধারণের জন্য মুক্তদ্বার ছিল । তাহার পাশে যুবরাজের জন্য স্থশোভন ও বৃহৎ প্রাসাদ নিৰ্ম্মিত হয়। কিন্তু তাহাতে বাস করিবার স্বযোগ তাহার হয় নাই। এখন অষ্ট্রিয়া সাধারণতন্ত্র। ইহার প্রাসাদগুলি মিউজিয়ম ও চিত্মশালারূপে ব্যবহৃত হইতেছে। বেলভেডিয়্যার নামক প্রাসাদের ভিতর আমি গিয়াছিলাম। অট্টালিকাটি চমৎকার । তাহাতে রক্ষিত বড় বড় তৈলচিত্র, আসবাব প্রভৃতি খুব সুন্দর। বাগানে সরোবর, ফোয়ার প্রভৃতি এখনও স্বরক্ষিত অবস্থায় আছে । চিত্রশালাগুলির ভিতর ও বাহির অতি স্বন্দর। যুদ্ধে অখ্রিয়। পরাজিত হওয়ায়, শুনিলাম, অনেক ছবি অন্য কোন কোন দেশ দাবী করিয়া লইয়া গিয়াছে। তথাপি, যাহা আছে, তাহাও দেখিয়া মোহিত হইতে হয়। চিত্রশালাগুলির অভ্যস্তর মূল্যবান প্রস্তরে নিৰ্ম্মিত। ভিয়েনার পালেমেণ্ট গৃহের সম্মুখভাগ দেখিলে মনে সন্ত্রমের উদয় হয়। . আমি ভিয়েনার সব দ্রষ্টব্য হৰ্ম্ম্য, প্রতিষ্ঠান, ও স্থান দেখি নাই । যাহা দেখিয়াছি, তাহারও একটি একটি করিয়া বর্ণনা করা অামার উদ্দেশু নহে । তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলিতেই হইবে। এখানে শিক্ষা ভাগই হয়—বিশেষতঃ চিকিৎসা বিদ্যার। কতকগুলি ভারতীয় ছাত্রের ভিয়েন যাওয়া উচিত। আমি যে জাহাজে বোম্বাই হইতে ভেনিস যাই, তাহাতে একজন ভারতীয় আই-এম্এস ডাক্তার ছুটি লইয়া যাইতেছিলেন। তিনি আমাকে বলিয়াছিলেন, বে, গলা-নাক-কানের রোগ চিকিৎসা সম্বন্ধে বিশেষ জ্ঞান লাভ করিবার জগু তিনি ভিয়েন যাইবেন । সেখানে আমি যাহা দেখিলাম, তাহাতেও আমার এই ধারণা হয়, যে, ঐসব ইঞ্জিয়ের রোগের চিকিৎসা ভিয়েনায় ভাল শিক্ষা করা যায়। সেখানে থাকিতে হিসাব করিয়াছিলাম, মাসিক ১২-১৫০ টাকা খরচে ভারতীয় ছাত্রেরা ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করিতে পারেন । জানি না, অন্তর্জাতিক মুদ্রাবিনিময়ের হারের পরিবর্তন বশতঃ এখনও ঐ টাকায় চলিতে পারে কি না । ভিয়েনায় শিক্ষা লাভ করিতে হইলে অবহু জামান শিখিতে হুইবে । কিন্তু বিজ্ঞান শিখিবার মত জাম্যান কয়েক মাসেই শিথিয়৷ ফেলা যায় । আমরা একদিন ভিয়েনার কয়েকটি বড় গির্জা দেখিতে গিয়াছিলাম। জামান না জানায় উপাসনায় যোগ দিবার সম্ভাবনা আমাদের ছিল না ; আমরা কেবল গির্জার বাহির ও ভিতর দেখিলাম, এবং কত লোক উপাসনার জন্য আসিয়াছে দেখিলাম । সবগুলিরই অভ্যস্তরে বড় বড় খৃষ্টীয় ছবি আছে। উপাসনার সময় খুব মোট ও লম্ব মোম বাতি জালা হয় এবং পাদরী মহাশয় সম্রমোৎপাদক পরিচ্ছদ পরিধান করেন। কোন গির্জাতেই লোক বেশী দেখিলাম না, যদিও সে দিন রবিবার ছিল। একদিন আমরা চারজন বাঙালী হোটেলে বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদের বিরুদ্ধে ও স্বদেশীর অমুকুলে বাংলা দেশের আন্দোলনের প্রথম সময়কার কথা বলিতেছিলাম। সেসময়ে আমি এলাহাবাদে থাকিতাম। এইজন্ত অনেক কথা আমার নূতন লাগিতেছিল। বিশেষতঃ রবীন্দ্রনাথ ইহার সহুিত কিভাবে যুক্ত ছিলেন, তাহার খাটি খবর তাহার মুখ হইতে শুনিতে খুব ভাল লাগিতেছিল। ইহা তখনকার অলিখিত ইতিহাসের এক অধ্যায়। আমরা বে দিন হোটেলে এইসব কথা বলিতেছিলাম, সেটা ধে ৩৯ শে আশ্বিন, ১৬ই অক্টোবর, রাখীবন্ধনের দিন, তাহা আমাদের মনে ছিল না ; পরে তাহা আমার মনে পড়ে । একদিন হাঙ্গেরীর লোকদের একজন প্রতিনিধি ইস্পীরিয়্যাল হোটেলে উপস্থিত ; উদ্দেশু রবীন্দ্রনাথের সহিত দেখা করিয়া তিনি কবে হাঙ্গেরী ষাইবেন তাহার প্রতিশ্রুতি লণ্ডয়া । কবি অমুস্থ থাকায় ডাক্তার ওরেস্কেব্যাক কোন মতেই তাহাকে কবির সহিত দেখ1