পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্য। ] বিবিধ প্রসঙ্গ—নারীরক্ষা ৬২৩ সুশিক্ষা দিতে হইলে অনেকগুলি অtশ্রম চাই এবং অনেক টাক চাই। কিন্তু বৃহত্তম ও কঠিনতম ৰাধেরও আরম্ভ ক্ষুদ্র ভাবেই হইয়া থাকে। অন্ততঃ একটি আশ্রমও আপাততঃ স্বপ্রতিষ্ঠিত হইলে আশান্বিত হইতে পার। যাইবে । আশ্রমে পালিতা ও শিক্ষিত বালিকাদের ভবিষ্যৎ কি হইবে, তাহাও চিন্তনীয় । কেহ কেহ শিক্ষা পাইয়া অবিবাহিত থাকিয় শিক্ষ, শুশ্রাব, ডাক্তারী প্রভৃতি কাজ করিতে পারে বটে। কিন্তু নরনারী উভয়ের অধিকাংশের পক্ষে যfহা সাধারণ ব্যবস্থা—বিবাহ—তাহা ইহাদের জন্যও না করিতে পারিলে সামাজিক কল্যাণ সাধিত হইবে না। সমাজে এরূপ বালিকার বিবাহে বিশেষ কোন বাধা নাই। হিন্দুসমাজে বাধা রহিয়াছে। তাহার কোন জা’তের মেয়ে প্রথমত তাহ ঠিক্ করিতে হুইবে । তাহা স্থির হইলে সেই জাতের পাত্র স্থির করিতে হইবে । কিন্তু এখন ভিন্ন ভিন্ন জা'তের ( caste এর ) বরকস্তার বিবাহ বৈধ করিবার আইন হইয়াছে ; তাহারা হিন্দু থাকিয়াই বিবাহ করিতে পারে । তাহী স্বসাধ্য করিবার জন্য অবশু সামাজিক মত অমুকুল হওয়া দরকার। তাহা গঠিত করিবার জন্ত সমাজনেতা ও সাংবাদিকগণ চেষ্ট করুন । যাহারা প্রাচীন সংস্কৃত নাটক মৃচ্ছকটিকের গল্পটি জানেন, তাহার অবগত আছেন, যে, সমাজের ব্রাহ্মণক্ষত্রিয়াদি কোন জাতিভুক্ত নহেন অথচ শিক্ষিতা ও স্বভাবগুণে শ্রদ্ধেয়া বসন্তসেনার সহিত শ্রদ্ধেয় ব্রাহ্মণ চারুলত্তের বিবাহ হইয়াছিল । সুতরাং সেকালে, যখন হিন্দুর এখনকার চেয়ে হিন্দুনামের অধিকতর যোগ্য ছিলেন, এইরূপ বিবাহ হইতে পারিত। stmist নারীরক্ষা বাংলা দেশে যে সকল বালিকা ও প্রাপ্তবয়স্ক নারী ধবিতা হন, এবং এখনও যেরূপ অত্যাচারের সংবাদ প্রত্যহ খবরের কাগজে দেখা যাইতেছে, তাহার সম্বন্ধে কলিকাতার - মেয়র মৃতীজমোহন সেনগুপ্তের আগে কি মত ছিল, তাহার পুনরুল্লেখ অনাবশুক । খৃষ্টিয়ান সমাজে ও মুসলমান । গণিকালয় হইতে উদ্ধৃত বালিকাদের আশ্রমের জন্ত টাকা তুলিবার নিমিত্ত টাউন হলের সভায় তাহার বক্তৃতায় দেখিতেছি, নারীনিগ্রহের প্রকৃত স্বরূপ এখন তিনি স্বীকার করিতেছেন, এবং তাহ দমনের জন্য বঙ্গের লাটের সাহায্য চাহিতেছেন । মেয়র নারীধর্ষক নরপিশাচদের সশ্রম কারাদণ্ডে সন্তুষ্ট নহুেন, অধিকন্তু প্রকাশ্বাস্থানে তাহীদের বেত্ৰাঘাত দণ্ডের ব্যবস্থা চান। সশ্রম কারাদণ্ডের উপর, নারীধর্ষকদিগের নৈতিক উন্নতির জন্য আমরা তাহাদের ভাসেক্টেমি (Wasectomy) নামক অস্ত্রচিকিৎসার সমর্থন করি । আমেরিকার কোন কোন রাষ্ট্রে আইন অনুসারে ইহার ব্যবস্থা আছে। স্যার প্রভাসচন্দ্র মিত্র,টাউন হলের সভায়, ধর্ষিত নারীদিগকে গবন্মেণ্ট হইতে উকীল ব্যারিষ্টারের সাহায্য দিবীর যে প্রস্তাব করিয়াছেন, তাহী অতি উত্তম । নারীহরণ, নারীধর্ষণ প্রভৃতি নানা প্রকার নারীনিগ্ৰহ মুসলমানদের দ্বারা বেশী হয় বটে ; কিন্তু অনেক হিন্দুও নারীধর্ষণ করে। মুসলমান নারীর উপর অত্যাচার অনেক হয়। হিন্দুর দ্বারা মুসলমান নারীর উপর অত্যাচার একটিও হয় না, এমন নয়। খৃষ্টিয়ান ফিরিঙ্গী ও ইংরেজের দ্বারাও এইরূপ দুষ্কার্য্য হয়। ইহা দমন করিবার জন্য সকল জাতির ও ধর্শ্বের সৎ লোকদের সম্মিলিত চেষ্টা আবশ্যক । সকল মুসলমান এরূপ কাজের সমর্থন করে, মনে করা ঠিক নয়। কুষ্টিয়ার কুপ্রসিদ্ধ নারীনিগ্রহব্যাপারে নারীদের রক্ষার জন্ত সফল চেষ্টা কোন হিন্দু করে নাই, মধু শেখ নামক একজন মুসলমান করিয়াছিল। ঢাকায় একজন হিন্দু জমীদারের পত্নীকে অত্যাচার হইতে রক্ষার জন্ত এক মুসলমান যুবক নিজেকে বিপন্ন করিয়া চেষ্টা করিয়াছিল ; তাহার নামটি ভুলিয়া গিয়াছি। নারী রক্ষার চেষ্টা অন্যত্রও মুসলমানের কোথাও কোথাও করিয়াছে। মুসলমানের, সম্ভব হইলে, ধর্ষিতা হিন্দুনারীকে বিবাহ করিয়া বা বিবাহ দিয়া নিজেদের সমাজে স্থান দেয়, এবং তাঁহাতে তাহদের সংখ্যা বাড়ে, ইহা নারীধর্ষণের পক্ষে মুসলমান সম্প্রদায়ের দুৰ্বত্ত লোকদের প্রলুব্ধ হইবার ও প্রশ্ৰয় পাইবার একটা কারণ। অন্ত দিকে হিন্দুমাৰে ধৰিত নারীর