পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ) সত্তর বৎসর や電> স্ত্রীলোকদিগকে-ভদ্র ভদ্র নিৰ্ব্বিশেষে-পান স্বপারী এবং ভীড়ে করিয়া তৈল উপহার দিয়া থাকেন। পুরুষেরাও নিমন্ত্রিত হইয়া তাম্বুলাদির দ্বারা অভ্যর্থত হন—ব্রাহ্মণ এবং জ্ঞাতি ভোজনও হইয় থাকে। বাবা এই অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন করিয়াছিলেন। বোধ হয় গ্রামের সামাজিকের যথারীতি আমন্ত্রিতও হইয়াছিলেন। প্রাতঃকালে নহবং বসিয়াছিল। অন্তঃপুরে পুরস্ত্রীরা আসিয়া জড় হইয়াছিলেন। বর-পক্ষের লোকের অপেক্ষায় আমরা পথ চাহিয়াছিলাম। এমন সময় বরের পিতার নিকট হইতে একটি লোক একথানি পত্র লইয়া আসিল । তিনি পূৰ্ব্বকার অঙ্গীকৃত টাকা অপেক্ষা আরও দুই শত টাকা বেশী—বর-পণের হিসাবেই হউক বা কুলমৰ্য্যাদার হিসাবেই হউক-চাহিয়া বসিলেন । দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি আমার বাবাকে ভাল করিয়া চিনেন নাই। চাপ দিয়া টাকা লইবার আশা করিয়াছিলেন। কিন্তু বাবার প্রকৃতি এরূপ ছিল যে, তিনি কখনও এরূপ ছল-চাতুরী বা কলকৌশল সহ করিতে পারিতেন না। বাবা ক্ষণমাত্র দ্বিধা না করিয়া তখনই এই সম্বন্ধু ভাঙ্গিয় দিলেন । বরের পিতাকে লিখিলেন যে, পূৰ্ব্বে যদি তিনি চাহিতেন, তাহ। হইলে আরও দু’শ কেন হয়ত তার চাইতে বেশী টাকাও দিতে রাজী হইতে পারিতেন ; কিন্তু বিবাহের দিন ধাৰ্য্য করিয়া, সম্বন্ধ স্থির হইয়াছে—দেশময় এ কথা রাষ্ট্র করাইয়। এরূপ চাপ দেওয়াতে তিনি এক পয়সাও দিতে রাজী নন। উৎসবের আয়োজন সকগই বন্ধ হইয়। গেল। আমাদের বাড়ীতে যেন একটা বিষাদের ছায়া আসিয়া ঘেরিল । পর দিবস বাবা সঙ্কল্প করিয়া বসিলেন যে, এই অগ্রহায়ণ মাসেই যেরূপ করিয়া হউক কস্তার বিবাহ দিবেন। সে-সময়ে আট দশ বৎসরের মধ্যেই সচরাচর ভদ্র পরিবারের বালিকাদিগের বিবাহ হইত। কিন্তু আমার বাবা আমার ভগিনীকে যেমন তৎকালোচিত বাংলা লেখা-পড়া শিথাইয়াছিলেন, সেইরূপ একটু বেশী বয়স পৰ্যন্ত তাহাকে অনূঢ়াও রাখিয়াছিলেন । আমাদের অঞ্চলে সে-কালে বালিকাদের বিবাহ অল্প বয়সে হইলেও রুষেরা বেশীদিন পৰ্যন্ত অবিবাহিত থাকিতেন। ২৪২৫ণু বৎসর পর্য্যন্ত কেহই প্রায় বিবাহ করিতেন না। ২৪২৫ বৎসরের বর ও ৮, ১ • বৎসরের কম্বা বড়ই বেমানান হইত। বোধ হয় এইজন্যই বাবা আমার ভগ্নীকে ১২ বৎসর পর্য্যস্ত-বোধ হয় তার চাইতেও আরেকটু বেশী অনুঢ়। রাখিয়াছিলেন। আর বেশী দিন তাহাকে ঘরে রাখা যায় না। বিশেষতঃ আদালত হইতে কন্যার বিবাহের জন্য ছুটি লইয়া আসিয়াছিলেন। বিবাহ না দিয়া সহরে ফিরিয়া যাইতে চাহিলেন না। এই সম্বন্ধের পূৰ্ব্বেও আরও অনেক সম্বন্ধের কথা আসিয়াছিল । সে কালের লোকের প্রজাপতির নিৰ্ব্বন্ধেই মামুবের বিবাহ হয় বিশ্বাস করিতেন। কার ভাগ্যে বিধাভা কোন বর লিথিয়াছেন বলা যায় না। এইজন্য ভাল মদ ষেসম্বন্ধই আস্থক না কেন তাহারা কোনটাই খোলাখুলি প্রত্যাখ্যান করিতেন না । এই সম্বন্ধ ভাঙ্গিয় গেলে পূৰ্ব্বে যে-সকল প্রস্তাব আসিয়াছিল তাঁহারই মধ্য হইতে একটি বাছিয়া সেইখানেই কন্যার বিবাহ দিবার সঙ্কল্প করিলেন। বরের বয়স ২৫৷২৬ হইবে । নিকটবর্তী কাছাড় জেলায় পুলিশে কৰ্ম্ম করিতেন—ইনস্পেক্টার ছিলেন। বংশ-মধ্যাদায় আমাদেরই সমকক্ষ । বরের খুল্লতাত বাচিয়াছিলেন। তিনিই বিবাহের প্রস্তাব করেন । বাবা এইখানেই কন্যার বিবাহ দিবেন মনে মনে স্থির করিলেন । কিন্তু আমি তথন বড় হইয়াছি । পুত্র যে-বয়সে মিত্রের মর্য্যাদা লাভ করে সেই বয়সে আসিয়া পেীছিয়াছি । আমার বড় মাম তখন আমাদের বাড়ীতে। আমার এক জ্ঞাতি জেঠ তুত ভাই বাবার কাজ-কৰ্ম্ম করিতেন। আর বাবার পরিবারভুক্ত দাসীপুত্র দাগু সিং ইহারা সকলেই তাহার অমাত্যের মত ছিলেন। পারিবারিক কোন ব্যাপারে বাবা ইহাদের অমুমতি না লইয়া কেবল নিজের রায়ের উপরে কখনও কোন কাজ করিতেন না। নিজের মনে নূতন সম্বন্ড করা স্থির করিয়া সকলের আগে মাকে যাইয়। কহিলেন, এবং মার সম্মতি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করিলেন। মা সম্মতি দিলেন। তারপর আমার বড় মামাকে যাইয়। জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনিও অনিচ্ছ। প্রকাশ করিলেন না । আমার জ্যেঠ তুত ভাই, "দাদা” ( দাগু সিং ) এবং আমি