পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা } সত্তর বৎসর やQ○ কিন্তু এক অতিশয় পানাসক্তিতে সকল গুণ নষ্ট করিয়াছে। ইহাই তাহার অকাল-মৃত্যুরও কারণ হয়। বিবাহের পাচ বৎসর পরে আমার ভগিনী বিধবা হয় । বৈধব্যের চারি পাচ মাস পরে তাহার একটি কন্যাসন্তান হয় । সকলেই তারা এখন ওপারে গিয়া পৌছিয়াছে। પર ইহার বৎসরখানেক পূৰ্ব্বে (১৮৭১ ইংরাজীর নভেম্বর মাসের শেষে ) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় বিলাত হইতে সিভিল সার্তি পরাক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া সহকারী ম্যাজিষ্ট্রেট হইয৷ শ্ৰীহট্টে যান। বিলাত ও ভারতবর্ষ এখন প্রায় "এঘর-ওঘর” হইয়াছে। স্বরেন্দ্রনাথ প্রথম যখন বিলাতে যান তখন এইরূপ ছিল না। রাজা রামমোহনই প্রথম বিলাতযাত্রী বাঙ্গালী । তাহার পরে তাহার বন্ধু প্রিন্স দ্বারকানাথ যুরোপে গিয়াছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরই শিক্ষাথীরূপে বোধ হয় প্রখম বিলাত যান। সত্যেন্দ্রনাথই প্রথম বাঙ্গালী সিভিলিয়ান। তবে তাহার কৰ্ম্মজীবন বোম্বাই প্রদেশেই অতিবাহিত হয়, বাংলায় নহে। ইহার পরে তিনজন বাঙ্গালী এক জাহাজে বিলাতে যাইয়া একইসঙ্গে সিভিলিয়ান হইয়া দেশে ফিরিয়া আসেন—৬/রমেশচন্দ্র, vবিহারীলাল গুপ্ত এবং yস্নরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকালের বিলাত-ফেরত বাঙ্গালীরা পোষাক-পরিচ্ছদে, আহারে বিহারে, চালচলনে—সকল বিষয়েই ইংরাজের অনুকরণ করিয়া চলিতেন। ইহাদিগকে নির্দেশ করিয়াই নবীনচন্দ্র ‘অবকাশরঞ্জিনী’তে লিখিয়াছিলেন :– “সিংহচর্শ্বে তুমি মেব অল্প-প্ৰাণ” স্বরেন্দ্রনাথ শ্রীহট্টে যাইয়া সাহেবী ভাবেই চলিতে ফিরিতে আরম্ভ করেন । দেশের শিক্ষিত ভদ্রলোকদিগের সঙ্গেও বাংলায় কথা কহিতেন কি ন সন্দেহ । ইংরাজ সিভিলিয়ানের। যে ভাবে থাকিতেন, স্বরেন্দ্রনাথও সেইভাবেই চলিতে আরম্ভ করেন । র্তাহার সহধৰ্ম্মিণীও শ্রীহট্রে গিয়াছিলেন। স্বরেন্দ্রনাথ যেরূপ সৰ্ব্বদা সাহেব সাজিয়৷ tళె, র্তাহার ব্রাহ্মণীও সেইরূপ বিবি সাজিয়া বেড়াইতেন। স্বরেন্দ্রনাথ ঘোড়ায় চড়িয়া সহরের সর্বত্র ঘাতায়াত করিতেন। র্তাহার গৃহিণীও সে-যুগের ইংরাজ 8 مساسانی بb wfootto: MS cofaca (Lady's Saddle) to 5soil অশ্বগৃষ্ঠে অপরাহ্লে হাওয়৷ থাইতে বাহির হইতেন । সেসময়ে ম্যাক্কার্টিস (McCartis) নামে একজন আৰ্ম্মেণী ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট শ্রীহট্ট ছিলেন । ইহার সঙ্গে বদ্যোপাধ্যায় দম্পতির বিশেষ আত্মীয়ত। জন্মে । ইহার তিন জনে যখন ঘোড়ায় চড়িয়া বেড়াইতে বাহির হইতেন, তখন আমরা বালকের দল তাহাদিগকে দেখিবার জন্ত প্রায়ই রাস্তার ধারে আলিয়া দাড়াই তাম। সেই সময়ে সাদারল্যাও (Sutherland) নামে একজন ফিরিঙ্গী সিভিলিয়ান শ্রীহট্টের ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন। সাদারল্যাও একজন অতিকায় পুরুষ ছিলেন । এরূপ গল্প শোনা গিয়াছে যে, ইনি যখন প্রথমে শ্রীহট্টে বদলী হইয়া যান, তখন ম্যাজিষ্ট্রেটের দপ্তরে বা এজলাসে এমন চৌকী ছিল ন। যা তাহার বিশাল বপু ধারণ করিতে পারে বা তাহার ভার সহ করিতে পারে। আরও গল্প আছে বে, সাদারল্যাণ্ড সাহেব প্রতিদিন সাক্ষ্য ভোজের সময় একটা আস্ত মিষ্টি কুমড়া নি:শেষ কfরতেন। স্বরেন্দ্রনাথ প্রথমে শ্রীহট্টে গেলে সাদাবুলাও সাহেব উপহার সঙ্গে অতিশয় সস্নেহ ব্যবহার আরম্ভ করেন। স্বরেন্দ্রনাথের ইহা বড় ভাল লাগে নাই। এই স্নেহের আবরণের ভিতর দিয়া একটা অমুকম্পার ভাব উকি মারিত। স্বরেন্দ্রনাথকে সাদারল্যাণ্ড ইংরাজ সিভিলিয়ানদিগের মর্যাদা না দিয়া এইরূপে তাহার প্রতি অনুগ্রহ প্রকাশ করিতে থাকেন। ইহাতে স্বরেন্দ্রনাথের আত্ম-সম্মানে ও স্বাঞ্জাত্যাভিমানে আঘাত লাগে। এইরূপে কিছুদিন ধরিয়া শ্রীহট্টের ইংরাজ সিভিলিয়ানদিগের এবং স্বরেন্দ্রনাথের মধ্যে একটা অসন্তোষ এবং বিরোধ অলক্ষ্যে ঘনাইয়া উঠিতে থাকে। এই সময়ে বম্ব্যোপাধ্যায়-গৃহিণী ঘোড়দৌড়ের মাঠে যাইয়৷ যে-মঞ্চে ইংরাজ বিবির বসিয়াছিলেন সেই মঞ্চে আপনার স্বামীর পদোচিত আসন দথল করিয়া বসেন। এই হইতেই স্বরেন্দ্রনাথের পদচুতির আয়োজন আরম্ভ হয়। স্বরেন্দ্রনাথ এমন কোন গুরুতর অপরাধ করেন নাই যাহার জন্য ন্যায়তঃ ও ধৰ্ম্মতঃ তাহার উপরে এমন কঠোর দও বিহিত হইতে পারিত। মূল ব্যাপারটা কিছুই নহে। একটা ফৌজদারী মামলার নর্থীতে যে-সকল কথা লিখ