পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] afootson, “There is only one 'hen' in Venice” তাহার উত্তরে আরেকজন জিজ্ঞাসা করিলেন—ভেনিসের লোকের তবে ডিম পায় কোথা হইতে । পুস্তকে এরূপ অনেক গল্প আছে। এসকল পড়িতে বড়ই আমোদ হইত। শ্রীহট্টের স্কুলে থাকিতেই এইরূপে দুর্গাকুমার বস্ব মহাশয় আমাদিগকে যে ইংরাজী শিখাইয়াছিলেন সেই ভিত্তির উপরেই পরজীবনে ইংরাজী ভাষার উপরে যা কিছু দখল লাভ করিয়াছি তাহা গড়িয়া উঠে। স্কুলে থাকিতেই বাহিরের ইংরাজী বই কিছু কিছু পড়িয়ছিলাম—আর vবস্ব মহাশয়ের প্রসাদেই শ্রীহট্ট হইতে কলিকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রথম-বার্ষিক শ্রেণীর প্রথম বৎসরের পরীক্ষায় ইংরাজীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করিতে পারিয়াছিলাম । Trencha; আমার ছাত্রাবস্থায় ছেলেদের মধ্যে একটা সংস্কার ছিল যে, ইংরাজীতে যারা একটু ভাল হয়, গণিতে তার কিছুতেই অধিকাংশ সময় ভাল হইতে পারে না । আমার ৭ সেই দশান্ত হইয়াছিল। পাটীগণিত এবং বীজগণিত আমি কিছুতেই ভাল করিয়া পড়িতে পারিতাম না । এসকল অঙ্ক কষিতে হইলে মাথায় যেন বজ্রাঘাত ইহঁত, কিন্তু ইহারই সঙ্গে আবার জ্যামিতি পড়িতে খুবই ভাল লাগিত । কেন এরূপ হইয়াছিল তখন বুঝি নাই । এখন বুঝিয়াছি যে, যাহাতে কোন একটা সাৰ্ব্বজনীন তত্ত্বের সন্ধান পাইতাম তাহাই আমার চিভকে আকর্ষণ করিত । শুষ্ক হিসাব-পত্রে কিছুতেই মন বসিত না। পাটীগণিত এবং বীজগণিতেরও মূল তত্ত্বের সন্ধান পাইলে, বোধ হয়, তাহার প্রতি আমার এত বিতৃষ্ণ জন্মিত না। আজিকালি কিরূপে এসকল শেখান হয় জানি না । কিন্তু আমার মনে হয় যে, প্রথম হইতেই যদি কেবল কতকগুলি বিশিষ্ট নিয়ম (formula) মুখস্থ না করাইয় গণিতের মূল তত্ত্বগুলি শেখান হয় তবে অনেক বালক, যারা গণিত বিদ্যাকে তিক্ত কবায়রপে বর্জন করি চলে, তাহারা তাহাতেও রস পাইতে পারে । ూ8 যেমন ইংরাজী সম্বন্ধে সেইরূপ বাংলা সম্বন্ধেও স্কুলে থাকিতেই আমি অনেক বাহিরের বই পড়িয়াছিলাম। সত্তর বৎসর やQ(。 শ্রীহট্রের স্কুল ডেপুটি ইনস্পেক্টার ৮নবকিশোর সেন মহাশয় আমার পিতৃবন্ধু ছিলেন। তিনি আমাদের বাড়ীর এক অংশে বাস করিতেন, একথা পূৰ্ব্বেই কহিয়াছি। তিনি “স্কুল বুক সোসাইটির” একজন এজেণ্ট ছিলেন। স্কুল বুক সোসাইটি প্রথম বাংলা সাহিত্যের বিশেষ সেবা করিয়াছিলেন । ইহারাই বহু ইংরাজী গ্রন্থের সরল বাংলা অনুবাদ করিয়া দেশময় প্রচার করিয়াছিলেন। মাঝে মাঝে ইহাদের প্রকাশিত গার্হস্থ্য গ্রন্থাবলী বাক্স বোঝাই হইয়া বিক্রয় এবং বিতরণের জন্য সেন মহাশয়ের নিকটে যাইত। এই স্থত্রে অনেক বাহিরের বাংলা বই পড়িতে পাইয়াছিলাম । “চীনদেশীয় রাজকন্যার কথা”, “চীনদেশীয় তত্ত্ববায়ের কথা”, এসকল “স্কুল বুক সোসাইটি”র গার্হস্থ্য গ্রন্থাবলীতে প্রকাশিত হইয়াছিল । এ ছাড়া তখনকার খাটি বাংলা কথা-সাহিত্যের “গুলে বকেয়ালী” এবং “কামিনীকুমার” এই জাতীয় পুস্তকও বালোই পড়িয়ছিলাম । “অন্নদ-মঙ্গল’ এবং “বিদ্যাসুন্দর”ও আদ্যোপাস্ত পড়িয়াছিলাম। স্কুল পাঠ্যে “চারুপাঠ”“পদ্যপাঠ”, কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের “সম্ভাব-শতক”, রঙ্গলালের “পদ্মিনার উপাখ্যান” কিছু কিছু পড়িতে হইয়াছিল। বাংলা বর্ণমালা অভ্যস্ত হইলেই কৃত্তিবাসের রামায়ণ ও কাশীরাম দাসের মহাভারত মোটের উপরে সবটাই বাড়ীতে পড়ি । ৩/মবকিশোর সেন মহাশয় নুতন বাংলা সাহিত্যের বিশেষ অমুরাগী ছিলেন । যখন যে-বহ প্রকাশিত তথনই তিনি তাহা কিনিতেন । এই স্বত্রে, শ্রীহট্টে থাকিতেই মাইকেল মধুসূদনের "মেঘনাদ-বধ”, “ব্ৰeাঙ্গন৷” এবং ‘চতুর্দশ পদাবলী” পড়িতে পাই । বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদর্শনের জন্মাবধি তাহার পরিচয় লাভ করি । সকলটাই যে বুঝি তাম এমন নহে। কিন্তু বুঝি বা না বুঝি, সেকালের বাংলা সাহিত্যের যথন যাহা হাতে পড়িত তখনই তাহা আগ্রহাতিশয্য-সহকারে পড়িতাম। প্রথম সংখ্যার বঙ্গদর্শনের “ব্যাঘ্ৰাচাৰ্য্য বৃহস্লাজুল” সকলের চাইতে ভাল লাগিয়াছিল। ·ථඝ ১৮৭৩ ইংরাজীতেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিক পরীক্ষা দিবার কথা ছিল । সেকালে ১৬ বৎসর পূর্ণ না হইত