পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পাবনা জেলার ইতিহাস-ত্রয়ধারমণ সাহা, বি-এল প্রকৃত । সরস্বতী লাইব্রেরী, পাখনা হইতে গ্রন্থকার কর্তৃক প্রকাশিত । ছয় খণ্ডে প্রায় আটশত পৃষ্ঠায় সমাপ্ত। মূল্য ৮৮° । ভারতবর্ষে ইংরেজ বণিক সম্প্রদায়ের অধিকার বিস্তার মঙ্গলময় বিধাতার অভিপ্রেত কিনা বলিতে পারি না, তবে ইংরেজের অধীনতা স্বীকার করাতে ভারতবর্ষে কতকগুলি বৃহৎ পরিবর্তন সংসাধিত হইয়াছে বাস্থ। চোখে দেখা যায়। পরিবর্তনের সকলগুলিই যে মন্দের দিকে তাহা নহে, তবে মন্দের ভাগ বেশী তাঁহাতে সন্দেহ নাই। সকল ধ্বনিষ্টের মধ্যে সব-চেয়ে মারাত্মক হইতেছে বৈদেশিক শিক্ষা-দীক্ষণআচার-আচরণ, আহার-বিহার, বিলাস-বাসন, বেশ-ভূষা প্রভৃতির প্রতি একট। প্রবল মোহ । আফিমের নেশার মত এই মোক তিলে তিলে জামাদের অধিকার করিতেছিল এবং এখনও হয়ত করিতেছে । ফলে আমরা ভারতবধেয় জল-মাটি হাওয়ার মধ্যে মানুষ হইয়াও প্রকৃতিতে অভারতবর্ষার হইয়। উঠিতেছি । ইংরেজ তাছাদের দুৰ্ব্বহ শাসনভার আমাদের স্বন্ধে চাপাইয়াই ক্ষান্ত নহে, আমাদের মানসচিত্তও তাছাদের কবলিত । আঙ্গুল কাটিয়া ভারতীয় শিল্পের বিনাশ সাধন, বৎসরে বৎসরে ভারতবর্ষের রক্তশোষণ এইগুলিই ভারতবর্ষে ইংরেজ ইতিহাসের বড় কথা নহে, সবচেয়ে কুফল দেখা দিয়াছে ভারতবর্ষের চিত্তবিকৃতিতে। এই বৈদেশিক প্রভাব এমনই ভয়ঙ্কর যে, গত ছুইশত বৎসরের মধ্যেই আমাদের সহস্ৰ সহস্ৰ বৎসরের সংস্কর ভুলিয়া আমরা মনে প্রণে বিদেশী হইতে বসিয়াছি । ইংলণ্ড ও ইংলণ্ডবাসীরা আমাদের নিকট যতটা সত্য ভারতবর্ষ ততটা সভা নহে, এবং এখন হইতে সাবধান মা হইলে যে অদূর ভবিষ্যতে ভারতবর্ষের জনসাধারণ কেবলমাত্র আকৃতিতেই ইংরেঞ্জ হইতে পৃথক থাকিবে, ভাবে-ভঙ্গিমায় চিন্তায় মনে কোন পার্থক্য ইংরেঞ্জের সহিত থাকিবে না, কেহ কেহ এরূপ আশঙ্ক৷ করেন । আমাদের দুর্ভাগ্য এই ধে, যৰ্ত্তমানে ভারতবর্ষে এই বৈদেশিক প্রভাব ভারতীয় সভ্যতার পরাজয়ই ঘোষণা করিতেছে, দুৰ্ব্বল, হীন সস্থ্যত ধেন প্রবল সভাতীয় নিকট পরাজিত হইয়। উtহাকে আপনার আসল ছাড়িয়া দিয়াছে। এবং এইজগুই আমাদের আপনাদের প্রতি ধিক্কার জন্সিয়াছে । কিন্তু আসলে এই মনোভাব সত্য নহে, আমরা নিজেরাই দেহে ও মনে হীন হইয়াছিলাম, ভারতীর সভ্যতার তাহ! অপরাধ নহে। আমাদিগকে সবল হইয় পুনরায় দেশকে. দেশের সভ্যতাকে বরণ করিয়া লইতে হইবে । প্রত্যেকে যেন দেশকে চিনিতে পারে তাহার ব্যবস্থা করিতে হইবে। থণ্ড খণ্ড গ্রাম, জিলা প্রদেশ ইত্যাদি মিলিয়। আমাদের প্রখ ও তারতবর্ষ। প্রত্যেক গ্রাম জিলা প্রদেশ খালবিল নদনদী ইত্যাদির সহিত দেশের লোকের পরিচয় সাধন করাইয়া, গ্রামভেদে দেশভেদে আচার বিচার রুচি সংস্কার শিক্ষাদীক্ষা শিল্পবিজ্ঞান প্রভৃতির বৈচিত্র প্রদর্শন করিয়া আমাদিগকে সম্পূর্ণ ভারতবর্ষকে টিনিন্তে হইবে । বাড়ীর পাশে আস্তাকুড় অপরিস্কৃত রাথির মদনকাননের স্বপ্নে বিভোর হইয়া থাকিলেও ম্যালেরিয়ায় ভুগিতে হয় এষ্ট সত্য আমাদের শিখিতে হইষে। স্কুল কলেজের ছাত্রদের, এমন কি, শিক্ষিত ভদ্রলোকদের সহিত দেশের সম্বন্ধে আলোচনা করিলে আমাদের শিক্ষার দৈন্ত প্রকট হইয় পড়ে। র্তাহারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রর উথানপত্তন,নায়গার জলপ্রপাত,অষ্ট্রেলিয়ার পশুপালন, ডেনমার্কের সমবায়, ম্যানচেষ্টারের কোন মিলের জন্মইতিহাস, হেমূী ফোর্ডের কুলজীকৃষ্ঠ কিম্বা ইউজিন চেনের ধৰ্ম্মসংস্কার সম্বন্ধে ঘণ্টার পর ঘণ্ট ধরিয়া বক্ততা করিতে পারিখেন, কিন্তু মালদহ মুর্শিদাবাদ বীরভূম বাঁকুড়ার রেশমশিল্প, সিরাজগঞ্জের পাটের কলগুলি কিভাবে পরিচালিত ఫt-గా) পুস্তক-পরিচয় a Bసి হয়, চলন বিলের অবস্থ{ কিরূপ, বাখরগঞ্জে কি পরিমাণ চাল উৎপন্ন হয় এসম্বন্ধে একটি মাত্র কথা বলিতে পারবেন না। ইহাদিগকে মাদারিপুর DBB D DBB BB BBB BB D kBB BDD DDDS পান না। দেশের সম্বন্ধে ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল ব্যাপারেই দেশবাসীর এইরূপ জ্ঞান । দেশের প্রাণশক্তি যেখানে সেখানকায় সম্বন্ধে, মাটি জল হাওয়া मत्रtक ठोभांशग्न थांब्र१ नाझे गलिग्नई सामगिक &लांtव पक्षांभञ्च १७ সহজে অভিভূত হইয় পড়ি । দেশকে ভালমত চিনিতে পারিলে এই বিপদ হইতে উদ্ধার পাওয়া কঠিন হইবে না। সৌভাগ্যের বিষয়, আমরা কিছুকাল হইতে দেখিতেছি, বাঙঙ্গ দেশে করেকজন দেশ-হিতৈষী ধ্যক্তি স্বদেশবাসীকে স্বদেশ সম্বন্ধে অভিজ্ঞ করিয়া তুলিবার জন্ত সবিশেষ চেষ্টিত আছেন। কেহ বা প্রাচীন ভারতবর্ষের, বৃহত্তর ভারতবর্ষের সহিত আমাদের যথার্থ পরিচয় করাইভেছেন, কেহ প্রাচীন ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনীতি সমাজনীতি অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা করির গবেষণার ফলাফল আমাদের গোচর করিতেছেন, আবার কেহবা কোন একটি জিলা গ্রাম বা বিভাগ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করিয়া দেশের অংশবিশেষের সহিত আমাদের সত্য পরিচয় করাইয়া দেশের অক্ষাগু অংশ সম্বন্ধেও আমাদের অমুসন্ধিৎসা জাগাইয়৷ তুলিয়া দেশ সম্বন্ধে আমাদিগকে সচেতন করিয়া তুলিতেছেন। ঐযুক্ত রাধারমণ সাহা এই শে{যাক্ত শ্রেণীর দেশহিতৈষীদের দলে । তিনি আপনার সকল চেষ্ট ও অধ্যবসায় পাবনাজেলার প্রাচীন ও নুতন ইতিহাস সঙ্কলনে ব্যয়িত করিয়া দেশবাসীর কৃতজ্ঞতাভাজন হইয়াছেন। অনেকে মনে করিতে পারেন. এই ভাবের জিলা বা বিভাগের ইতিহাস কেবলমাত্র স্থানীয় অধিবাসীদের পক্ষেই প্রয়োজনীয়, বাহিরের লোকের কাছে এই সকলের মুল্য অধিক নহে । কিন্তু আমাদের মতে এ ধারণা সত্য লহে ! এই ধরণের এক-একটি ইতিহাস জ্যামিতির এক-একটি প্রতিপাদ্যের মত, একটি সবিশেৰ আয়ত্ত হইলে অস্তগুলি আয়ত্ত কর। সহজ হয়। রাধারমণ-বাবুর পাবনা জিলার ইতিহাস যে শুধু পাবনাবাসীরই পক্ষে অবগু পাঠ্য তাহা নহে এইরূপ সুলিখিত ইতিহাসের সঙ্গে পরিচর খাকিলে বাঙলার অথ্যাঙ্ক জিলা সম্বন্ধেও যথেষ্ট জ্ঞান লাভ কর। যায় । অনেকে ইহাও মনে করিতে পারেন যে, জেলা-বিশেবের ইতিহাস সংগ্রহ করা খুব গুরুতর কার্য্য নহে । অল্প পরিশ্রমে অল্পকালেই ইহ। করা সম্ভব, কিন্তু রাধারমণবাবু যে ইতিহাসখানি লিথিয়াছেন তাহ ক্ষুদ্র পাবনা জিলার ইতিহাস হইলেও এতগুলি জ্ঞাতব কথা তিনি ইহার মধ্যে সন্নিবেশিত বরিয়াছেন যে, তাহ। বস্তুতই একজনের এক জীবনের সাধনায় কাজ বলিয়া স্বীকার করিয়া লইতে অসুবিধা হয় না। রাধারমণ-বাবুও দীর্ঘ সপ্তদশবর্ষের পরিশ্রম ও সাধনার ফলে বহু ত্যাগস্বীকার করিয়া, বহু অর্থব্যয় ও শারীরিক কষ্ট সহ করি এই পুস্তকের মালমশলা সংগ্ৰহ করিয়াছেন এবং এত করিয়াও তিনি ৰে পুস্তকখানিকে সম্পূর্ণ মনে করেন, তাই মহে । অনেক কথা হয়ভ এখনও তাহার বলা হয় নাই। বস্তুতঃ, এরূপ একখানি সৰ্ব্বাস্থায়ন ইতিহাস সঙ্কলন করিয়া গ্রন্থকার নিজের পরিশ্রম ও সাধনাকে সাধক মনে করিতে পারেন । রাধারমণবাবু পাৰম। জিলা সম্বন্ধে কোন বিবরকেই বাদ निः। চলেন নাই। উহার পুস্তকের ছয়টি খণ্ডের নিম্নলিখিত সামান্ত পরিচয় হইতেই ইহ স্পষ্ট প্রমাণিত হইবে।