পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] শঙ্করাচার্য্য বলেচেন, অর্থমনথং ভাবয় নিত্যং । অর্থের মধ্যে মানবাত্মার বা বিশ্বজগতের অর্থ পাওয়া যায় না। আজকের দিনে বড়ো বড়ো মুনফার লোভে বড়োবড়ো ব্যবস্থাতন্ত্র পুথিবীর সর্বাঙ্গে ব্রণের মতে ফুলে উঠেচে । কিন্তু এইসকল পৃথুলকায় ব্যবস্থা,এই সকল যন্ত্রবাহিনী ব্যবসা সৰ্ব্বত্রই মাতুর্যের সৌন্দর্য্যবোধকে আচ্ছন্ন ও তার সৃষ্টিশক্তিকে পীড়িত করেচে। অর্থ জিনিষটা বাইরের দিক থেকে সুবিধামাত্র, অন্তরের দিক থেকে সার্থকতা নয়। ধনী দেবমন্দিরে যায় মোটর গাড়ীতে, বাহ সুযোগের দিকে তার দাম, ভক্তিযোগের দিক থেকে কোনো দাম নেই । অতএব মোটরগাড়ীগত সম্পত্তি ভক্তি-অৰ্ঘ্যরচনায় কোনো সৌন্দর্য। দিতে পারে না । “আসল কথাটা এই, বাইরের দিক থেকে মানুষের অধিকার ভেদ ঘুচে গেছে এইটেই এপনকার যুগের প্রধান মামুষের মধ্যে শক্তির স্বাভাবিক পার্থক্য আছে, সেই পার্থক্য অনুসারে তার সিদ্ধির পরিমাণে পার্থক্য, কেউ উপরে ওঠে, কেউ নীচে নামে। কিন্তু সাধনার অধিকার সকলেরই কাছে সমান, সে-সাধনা অর্থেরই তোক্, জ্ঞানেরই | তোকু, কৰ্ম্মেরই তোক্ । বৌদ্ধধৰ্ম্ম মোক্ষের দিকে এই পথষ্ট খুলেছিল । আজ সেই পথ সকল প্রকার ব্যবহারের দিকে । একজন মানুষ যা পেয়েচে আরেকজন মানুষের ত৷ আশা করবার কোনো বাধ নেই, সেই আশা করবার গৌরবে মামুযের প্রধান মূল্য। সেইজন্তে আজ অবিচার স্টুগে মানুষ জোর করে বিচারের আবেদন করে। এইটে .সকলে ছিল ভিক্ষে, একালে হয়েটে দাবী । আইনে যদি পক্ষপাত থাকে তবে আজ জোর ক’রে বলতে পারি এটা অষ্টায়,—ধ’লে সব সময়ে ফল হয় না, কিন্তু যত সামা) লোকই হইনে কেন, আমার কাছে ও আইনের জবাবদিহী আছে । আজকের দিনের সব-চেয়ে বড়ে জ্ঞানসম্পদ হচেচ বিজ্ঞান, সেই বিজ্ঞানের সাধনায় মানুষে মানুষে কোনো ভেদ নেই। “বিজ্ঞানের সাধনা শুধু বে অবাধ তা নয় বিজ্ঞানের জিজ্ঞাসা সৰ্ব্বব্যাপী । বিজ্ঞান যে-তত্ত্ববুদ্ধির সৃষ্টি করে তার কাছে উচু নীচু নেই। নৃতত্বের কাছে এমন মানুষ নেই যে অগ্রাহ । জ্ঞানের সাধনায় মামুযের চিত্ত আজ সমস্ত আলাপ-আলোচনা ፃፃ¢ -* -- ۲۰ ۹ م. ما می میرنی و . » یا ... -بیر বিশ্বকে অধিকার কাচে। জ্ঞানের এই কর্তৃত্বে প্রত্যেক মানুষেরই আজ দাবী আছে যদি তার শক্তি থাকে । শক্তির আন্তরিক পার্থক্য চিরদিন , যেমন ছিল আজও তেমনি আছে, কিন্তু অধিকারের বাহ পার্থক্য আজ প্রায় নেই। যদি থাকে সেট। অপরাধ আকারে, অন্যায় আকারে আছে, তার বিরুদ্ধে সমস্ত মানুষের কাছে নালিশ চলে । “বিজ্ঞানের নিষ্কাম কৌতুহল অপক্ষপাতে বিশ্বের সকল পদার্থেরই অনুধাবন করচে, আমাদের দেশের পারমার্থিক সাধনারই মতো কুকুরে ব্রাহ্মণে চণ্ডালে ভেদ রাখচে না। বিজ্ঞানের এই জানার সঙ্গে অধ্যাত্মতত্ত্বের ঐক্য উপলব্ধির মিল থাকতে পারে, কল-বোধের মিল নেই। বিজ্ঞানের জান নৈব্যক্তিক, আর্টের জান ব্যক্তিগত । বিজ্ঞান বলে, আমি মনে জানলুম ; আর্ট বলে, আমার মনে লাগল। মনে লেগেচে এই কথাট। বল্বার জন্যেই ছবি মুক্তি গান কাব্য। আমার একটি গানের শেষ অংশে আছে ঃ দেখি গে তার মুখের হাসি, ফুলের মালা পরিয়ে আসি, বলে আসি বাশি আমার প্রাণে বেজেছে । ”আটিষ্ট এই কথাটাই বলে, আর ফুলের মালা পরায়, সৰ্ব্ব মানুষের বরণডাঃ সাজাবার ভার তার পরে । “কিন্তু ঐ মনে লাগ বার শক্তিটার সঙ্কোচ ও প্রসার হতে পারে । মানুষের মনে লাগ বার শক্তি আজ তার সীমানা চারদিকে বাড়িয়েটে তার পরিচয় পাওয়া যায়। একসময়ে দেবদেবী, দৈত্যদানব, রাজা ঋষি, বীরপুরুষ মানুষের মনে বেশী ক'রে লাগত, সামান্ত মানুষের সাধারণ জীবযাত্রা চিত্তকে এড়িয়ে যেত । আজ সকল মানুষই আমাদের মনে লীগ বার অধিকার নিজের জোরে দাবী করে। তার গুণা বলে, জ্ঞানী ব’লে, ধনী ব’লে, মানী বলে বা সাধু ব’লে নয়, তারা মানুষ বলেই, মানুষের চিত্তগোচর হবার যোগ্য। চারদিকের অনেক কিছুই সহজেই যার চোখে পড়ে, মনে লাগে সেই এখনকার যুগের যোগ্য আর্টিঃ । চীনদেশে থাকতে সে-দেশের একজন বন্ধু আমার জুটেছিল, তিনি কবি । তার সঙ্গে যখন মোটরে বেড়াতে যেভুম তিনি হঠাৎ আমাকে ঠেলা দিয়ে চেচিয়ে উঠতেন, দেখ দেখ, একটা গাধা—কিম্বা অমনি আর-একটা