পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bペル・ ইচ্ছে মতো চলে, তার যা যা দরকার এই দেশের মধ্যেই সে পায়। বাইরের জিনিষের দিকে তার লোলুপ দৃষ্টি নেই দেশের মধ্যে তার খালি জায়গাও কিছু কিছু আছে কিন্তু খামক যদি ইউরোপের লোকের তাদের উপরে চরাও হয়ে তাদের ঘরের ভিতরে ঢুকে তাদের উপরে অত্যাচার করে, যেমন আজকাল ইংরেজ আর জাপান আর অন্ত জা’তে মিলে ক’বৃছে, তা হ’লে চীনের আপত্তি করাটাতে দ্যায়বিচার নিয়ে দেখলে কারু রাগ করা চলে না। তবে রুষের মতন কোনও চঞ্চল দুৰ্দ্দান্ত ইউরোপীয় জাতের পরিচালনায় জাপানে-চীনে মিলে গিয়ে বদ্যার মতন সত্যিকারের ইউরোপীয় ধরণের একটা পীত-ভয় স্বষ্টি করা কিছু অসম্ভব নয়। কিন্তু সে রকমটা যে হঠাৎ হবে কবি তা মনে করেন না ( —এখানে কিন্তু অবাস্তর ভাবে ব’লে রাখি, কবি যেভাবে এই চীন-সমস্তাটকে দেখেছেন, আমি নিজে কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক সেভাবে দেখি না—এ সম্বন্ধে যে তথ্য আমার চোখে পড়েছে, তাকে আমি আমার ভারতবর্ষের সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ আশঙ্কাজনক বলেই মনে করি—যাক্ । সিঙ্গাপুরে নেমে মালয় দেশে এ সম্বন্ধে আরও কিছু চোখে দেখে আর কানে শুনে পরে কি মনে হয় লেখা যাবে-- কবির সঙ্গে এবিষয়ে আজ কালের মধ্যে আলোচনাও কিছু ক’রেছি--তিনি কুতকগুলি বিষয়ে আমার তথ্যগুলি যদি সত্য হয় তা হলে আমার আশঙ্কাগুলি অমূলক নয় একথা স্বীকার ক’রেছেন)। এর লেখা একখানি ফরাসী উপন্যাস ইনি কবিকে উপহার দিলেন। মোট কথা, এই ভদ্রলোকটির সঙ্গে মিশে একটি বেশ সুশিক্ষিত হৃদয়বান বিচারশক্তিশালী ফরাসী যুবকের সঙ্গে ভাব-বিনিময়ের সুযোগ হ'ল। এর সঙ্গে এর রেজিমেন্টের আর একটি অফিসার ছিলেন, ইনি ইংরেজি জানেন না। হিন্দুধৰ্ম্মের মূল কথাটা কি, সংক্ষেপে জানতে চাইলেন। আমার অসম্পূর্ণ ফরাসীতে তখন তাকে নিগুৰ্ণ ব্রহ্ম, আত্মা, কৰ্ম্মবাদ সগুণ ব্ৰহ্ম, ব্ৰহ্মা-বিষ্ণু-শিব, নিত্যধৰ্ম্ম, লোকধৰ্ম্ম, প্রতিমা পূজা, হিন্দু সমাজ, জাতিতত্ত্ব জ্ঞান, ভক্তি—প্রভৃতি ভূল কথাগুলি যথাসম্ভব গুছিয়ে বলবার চেষ্টা ক'লুম। ইনি কিছুই জানেন না, মন দিয়ে শুনতে লাগলেন। আমি বল্লুম যে, হিন্দুধৰ্ম্ম ব’ল্লে একটা প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড | system of culture, go for to of সভ্যতাকে বোঝায় যেটা গত তিন হাজার বছর ধ’রে ভারতবর্ষে নানা জাতের ভাব-সম্ভারে পুষ্ট হয়ে বিকশিত হ’য়ে আসছে ; এতে কোনোও dogma বা creed, কোনও ধরাবাধা অবশু স্বীকৃতব্য মতের বালাই নেই। তবে এই সভ্যতার অন্তভূক্ত বেশীর ভাগ লোক খে কতকগুলি ভাবকে সবচেয়ে যুক্তি তর্কানুমোদিত বলে মেনে থাকে, সেগুলি ব্রহ্ম, আত্ম, দেবতাবাদ ইত্যাদি নিয়ে। সেগুলির সংক্ষেপে যথাসাধ্য ব্যাখ্যা দিলুম। আর সব মতবাদের মূলে সব ধৰ্ম্মসাধনের প্রথমিক প্রতিষ্ঠা হিসাবে যে নিত্যধৰ্ম্ম—দম, ত্যাগ, মৈত্রী প্রভৃতি আছে— ব্যক্তিগত চিত্তশুদ্ধি আর সদনুষ্ঠানকে মুখ্যস্থান দেওয়া হয়েছে, কোনও বাদ--জ্ঞান বা ভক্তি প্রভৃতি এগুলি ষে গৌণ, “নাসোঁ মুনির্যন্ত মতং ন ভিন্নং”—“যে যখ, মাং প্ৰপদ্যন্তে তাং স্তথা ভজাম্যহং”—এই কথাটা বুঝোতে চেষ্টা করলুম। “হিন্দুধৰ্ম্ম” যে এতটা উদার, এর মধ্যে যে খৃষ্টোপাসক ভক্তেরও স্থান আছে- এ কথা ভদ্রলোক বিশেষ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। প্রথম শ্রেণীর জন্ত যাত্রীদের মধ্যে আনাম-যাত্রী কতকগুলি ফৌজী অফিসার আর ফরাসী সরকারের কৰ্ম্মচারী, ডাক্তার ব্যবসায়ী । এদের চার পাচজনের সঙ্গে স্ত্রীর আছেন। সকলেই ফরাসী, অন্ত উইরোপীয় যাত্রী কেউ বোধ হয় নেই। এরা এমন কিছু বিশেষত্বসম্পন্ন ব্যক্তি নয়। তবে এদের মধ্যে আভিজাত্যের শিক্ষা আর ভব্যতার দিক থেকে—বেশ একটা তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। একটা যুগল স্বামী-স্ত্রী আছেন—চালচলন সবচেয়ে aristocratic বা অভিজাত বলে মনে হয়। দুজনেই আধাবয়সী লোক । বিশেষ করে স্ত্রীটর মুখ দেখে একেবারে বাঙালীর মেয়ে বলে মনে হয়। স্ত্রীট আবার একখান বাঙালী ধরণের সাদা সাড়ী সরু কালো কল্কাপাড়কে পিন্‌টিন দিয়ে ঘাঘরার মতন ক’রে পরে সকালে ডেকে স্বামীর সঙ্গে ঘোরেন, পিছন থেকে বাঙালীর মেয়ে বলে ধ"ধ লেগে গিয়েছিল। এই মহিলাটী ডেকে চলাফেরার সময়ে কেমন যে একটি সন্ত্রমপুর্ণ চোখে ড়েক-চেয়ারে বসে আমাদের সঙ্গে কথা কইছেন কবির প্রতি নেত্রপাত ক’রে অবিসংবাদিত ভাবে শাস্তুভাবে