পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86.8 . t r স্বতন্ত্র . সত্তা বা স্বাধীনতা নাই। এইজন্য অনেক স্থলে ইহাকে ‘কল্পিত শব্দেও উল্লেখ করা হইয়াছে। নতুবা, এ শক্তি যে কিছুই নহে,—এপ্রকার অর্থ নহে। “মায়ায়াঃ আত্ম-তাদাত্মোন স্বতন্ত্রত্ননিরাসঃ।” স্বতন্ত্রতা নাই বলিয়াই এই শক্তি সত্ত্বেও, ব্রহ্মের অদ্বিতীয়ত্বের হানি হয় না। শঙ্করাচার্য্য এই মায়াশক্তির যেখানেই উল্লেখ করিয়াছেন, সেই স্থানেই ইহাকে “তত্ত্বান্তত্বাভ্যামনিৰ্ব্বচনীয়ে”—বলিয়াছেন। এ কথাটার অর্থ কি ? এই বিশেষণটী বিশেষরূপে লক্ষ্য করা কৰ্ত্তব্য । তাহা হইলে, শঙ্করাচার্য্যের প্রকৃত অভিপ্রায় বুঝা যাইবে । আনন্দগিরি এই বিশেষণটর অর্থ করিয়া দিয়াছেন। পাঠক সেই অর্থটা দেখুন —“চিদাত্মনি লীনে নামরূপে এব বীজং. নামরূপয়োরীশ্বরত্বং বক্তমশক্যং জড়ত্বাং, নাপি ঈশ্বরাদন্তত্বং কল্পিতন্ত পৃথক সন্তাষ্ণু র্ত্যোরভাবাত ” এই মায়াশক্তি জড় । সুতরাং ব্রহ্ম ও এই শক্তি এক ও অভিন্ন হইতে পারে না। আবার, এই শক্তিকে ব্রহ্ম হইতে ভিন্নও বলা যায় না ; কেন না, ব্রহ্ম হইতে এই শক্তির স্বতন্ত্র সত্তা ও স্বতন্ত্র ক্রিয়া নাই । ব্রহ্মসত্তাতেই ইহার সত্তা। এইজন্তই, সৃষ্টির পূৰ্ব্বে এই শক্তিকে ‘আত্মা’ বলিয়াই ঐতরেয় উপনিষদে উক্ত হইয়াছে। এই জন্তই আবার অনেক স্থলে ইহাকে ‘মিথ্যা’ বলিয়াও কথিত হইয়াছে । তাহার তাৎপৰ্য্য এরূপ নহে যে, শক্তি একেবারেই অসৎ বা শক্তির অস্তিত্বই নাই । সে কথার অর্থ এই যে, ব্রহ্মবাতিরেকে ইহার স্বতন্ত্রতা নাই। অথচ অনেক অল্পধী ব্যক্তি, একেবারে মিথ্যা বলিয়াই শক্তিকে গ্রহণ করিয়াছেন। শঙ্করের ভাষ্য ন বুঝিয়া,—টীকাকারগণের ব্যাখ্যা না পড়িয়া, শঙ্করকে অসদ্বাদী প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ প্রভৃতি বলিয়া উপহাস করিয়াছেন * । যাহাহউক, আমরা এ প্রবন্ধে শক্তি সম্বন্ধে যে সকল ভাষাংশ উদ্ধত করিয়া দেখাইলাম, তদ্বারা শঙ্করের উপরে যে অবিচার করা হইয়াছে, তাহ যে নিতান্ত ভ্ৰমপূর্ণ ও অসঙ্গত, তাহা বুদ্ধিমান পাঠক মাত্রেই বুঝিতে পরিবেন কলিয়া আশা করি । • মৎপ্রণীত “উপনিষদের উপদেশ” নামক গ্রন্থে অতি বিস্তৃতভাবে, জামর শঙ্করাচার্য্যের অভিপ্রায় ও ভাষ্য ব্যাখ্যা করিয়াছি । প্রবাসী । বন্ধেই আত্মত্ত-ইহা বন্ধই ব্ৰহ্ম হইতে এই শক্তির শঙ্করের উপরে অন্ত যে সকল অবিচার । [ १भ छांश । করা হইয়াছে, তাহ অন্ত প্রবন্ধে উল্লেখ করিবার ইচ্ছ। আছে । 會 r শ্ৰীকোকিলেশ্বর ভট্টাচাৰ্য্য, বিস্তারত্ন, এম এ। চাক্মাজাতির সংস্কার কৰ্ম্ম । [ চট্টগ্রাম, পাৰ্ব্বত্য চট্টগ্রাম এবং পাৰ্ব্বত্য ত্রিপুরায় চাক্মা নামক জাতিবিশেষের বাস । ইহাদের সংখ্য প্রায় অৰ্দ্ধলক্ষ হইবে । শারীরিক গঠনপ্রণালী অনেকট। মঘfএপুরাদি অপরাপর পাৰ্ব্বতাঞ্জাতির অনুরূপ। পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের মতে ইহরাও "লোহিত" অর্থাৎ ব্রহ্মপুত্র ( যারকিও সাংপো ) নদের তীরভূমি হইতে আগত। এগুৎসম্বন্ধে নানাবিধ জনশ্রুতি আছে। তন্মধ্যে ইহাদিগের দুইটী মাত্র প্রাচীন নিদর্শন সৰ্ব্বপেক্ষ। প্রামাণ্য । বস্তুত "ধনপতি রাধামোহনের উপাখ্যান” এবং "চাটিগ ছড়" আথায়িকার সাক্ষ্য স্বীকার করিলেও প্রাগুক্ত মত অগ্রাহ্য করা যায় ন। সুতরাং ইহারাও "লোঠিতিক” অর্থাৎ "তিব্বতীব্রহ্ম।” শ্রেণীর অন্তর্গত হইবে * তবে অনেক দিন তাহার হিন্দুধৰ্ম্মে ছিল, সম্প্রতি বৌদ্ধদলভুক্ত হইয়াছে ! + ] যদিও চাকুমারা এক সময়ে হিন্দুধৰ্ম্মের অধিকারে ছিল, কিন্তু গত কয়েক বৎসর ধরিয়া বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রবল সংঘর্ষণে দশাচারের অনেকগুলি পরিত্যাগ করিয়াছে, আবার বিভিন্নধৰ্ম্মের সাহচর্য্যে দু’একটি অভিনব অনুষ্ঠানও এই সমাজে সংক্রামিত হইয়াছে। কৰ্ম্মসংখ্যা নিতান্ত বহুল না হইলেও অতিশয় বিশৃঙ্খল। এমন কি, সাধারণ এবং সন্ত্রান্ত পরিবারের মধ্যেও যথেষ্ট বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এই সকল পার্থক্যের প্রকৃতি নির্দেশ করিলে স্কুলতঃ বলা যায়, সন্ত্রান্ত অর্থাৎ উন্নত সম্প্রদায় আপনাদের ক্রিয়াকৰ্ম্মে যথাসাধ্যরূপে হিন্দুদিগের অনুকরণ আরম্ভ করিয়াছেন, সাধারণ দল এ যাবত ততদূর অগ্রসর হইতে পারে নাই। ফলে তাহাদিগের মধ্যে নানা উচ্ছৃঙ্খলাচার প্রচলিত রহিয়াছে । বস্তুতঃ সামাজিক ক্রিয়াকৰ্ম্মাদি যে প্রধান ভিত্তির উপর অনুষ্ঠিত হয়, যতদিন পর্য্যন্ত সেই ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে কোন এক মূল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া না যায়, তত দিন ইতাদের মধ্যে এক অভিন্ন-আচার চলিবার আশা নাই। বর্তমানে উন্নত সম্প্রদায় সমাজের মধ্যে একটা ‘সংস্কার’ আনয়ন করিবার চেষ্টা করেন, আর সাধারণ সকলের তাহ

  • ইতাদের জাতীয় পরিচয় এবং প্রাচীন কাহিনী লইয়া জাষাঢ় এবং 'মাঘ' ( ১৩১৩ ) সংখ্যার “ভারতী’তে বিস্তারিত আলোচনা করা হইয়াছে ।

এতৎসম্বন্ধেও "বৌদ্ধবন্ধু"র বৈশাখ হইতে কাৰ্ত্তিক সংখ্যার ( ১৩১৩ ) বিস্তৃত বিবরণী বাহির হইয়াছে।