পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা | ] অনেক কম। । ইহাতে সহজে অনুভূত হয় যে, যুবতী বিধবাগণের প্রায়ই:পুনর্বিবাহ হইয়া যায়। কিন্তু সেই বয়সের বিপত্নীকগণের কথা দূরে থাকুক, চল্লিশোৰ্দ্ধ যে যে ৭২৫ জন মৃতদার পুরুষের সংবাদ পাওয়া গেল, জরাপীড়া বা সাংসারিক অসচ্ছলতা প্রভৃতি বিশেষ অসুবিধায় না পড়িলে তাহাদিগেরওঁ অনেকে পত্নীবিরহিত হইয়া অধিক দিন থাকিবে না । - ইহাদিগের মধ্যে, পিতৃকুল লইয়া “গোষ্ঠী”* এবং বাসস্থান ভেদে “গোছ" আখ্যাত হয়। সেই হেতু “গোছা” এক হইলে বিবাহে কোন বাধা থাকে না। অথচ "সগোষ্ঠীতে” বিবাহ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ বলিয়াই সমাজের ব্যবস্থা ছিল। এত দিন এই বিধি নিৰ্ব্বিবাদে চলিয়া মাসিয়াছে। একমাত্র সেই দিন কুমার রমণীমোহনের বিবাহে ব্যতিক্রম ঘটিল। তিনি সগোষ্ঠী হইতে পত্নীগ্রহণ করিয়াছেন। সমাজবন্ধন এই যে শিথিল হইল, এখন হষ্টতে বোধ হয় ইহা অবাধে চলিবে । মামাত ভগ্নী, পিস্তুত ভগ্নী প্রভৃতির পাণিগ্রহণও যথেষ্ট্রক্ট প্রচলিত, বরং সেইগুলি যেন প্রকৃষ্ট মুম্বন্ধ বলিয়াই বিবেচিত হয়। কিন্তু ভাগিনেয়ী, বড়শালী প্রভৃতির সহিত বিবাহ কদাচ পরিদৃষ্ট হয় না। পরিত্যক্ত ও বিধবা স্ত্রীলোকদিগকে দেবরেরাও বিবাহ করিতে পারে। কিন্তু তজ্জন্ত তাহারা বাধ্য নহে । চাক্মাজাতির বিবাহ । • সচরাচর বিবাহ পঞ্চবিধ যথা— অভিভাবকগণের প্রস্তাবানুসারে (১) পাত্রী তুলিয়া আনিয়া ও (২) পাত্ৰ তুলিয়া আনিয়া বিবাহ, এবং (৩) বড় বিবাহ (৪) গৃহজামাতা আনয়ন ও (৫) মনোমিলনে পরিণয়। এতন্মধ্যে প্রথম ও শেষোক্ত শ্রেণীর বিবাহই সমধিক প্রচলিত। বিশেষতঃ ধনবান-সন্ত্রান্ত পরিবারে ভিন্ন “বড় বিবাহ” হয় না। দ্বিতীয় ও চতুর্থ প্রকারের, বিবাহকেও সমাজ ঘৃণার চক্ষে দেখে, এজন্ত অবস্থা ভাল হইলে কেহই ইহাতে স্বীকৃত হয় না। এতদ্ভিন্ন বিধবা এবং পরিত্যক্ত মহিলাদিগের বিবাহও আছে। পুনৰ্ব্বার বলিয়া রাখি, যে চাক্মাজাতির সংস্কার কৰ্ম্ম । 参

  • “গোষ্ঠী”-গোত্র । f "গোছ”—সংস্থত গুচ্ছ শব্দ হইতে উৎপন্ন। সমগ্র চাক্ম-সমাজ একজিংশ "গোছ” অর্থাৎ দলে বিভাজিত ।

8¢ዓ বিবাহেই "লাংশ পূজা প্রয়ােজন, নতুবা স্ত্রী পুরুষের কাহারও বিবাহ ভাঙিতে কোন আপত্তি কুইতে পারে না । - অভিভাবকগণের এস্তাবসিদ্ধ বিবাহ । পুত্র বিবাহের উপযুক্ত হইয়াছে দেখিলে পিতামাতা অপরাপর নিকট আত্মীয়দিগের সহিত “তাইনমাং” (পরামর্শ) করিয়া পাত্রী অনুসন্ধান করিতে থাকে। তাহদের মনোমত কন্যার সমাচার পাইলে কোন কোন সময় পুত্রকেও প্রকারাস্তরে তাহার মত জিজ্ঞাসা করা হয়। অনন্তর প্রস্তাবনার নিমিত্ত অভিপ্রেত কন্যার পিত্রালয়ে বরের পিতার যাওয়া একান্ত অপরিহার্য্য। তদভাবে মূল অভিভাবককেই যাইতে হয়। প্রথম বারে—মদ, পান সুপারী এবং কয়েকবিধ মিষ্টান্ন লইয়া যাওয়াই বিধি। বিবাহের প্রস্তাব প্রথমে উঠাইতে অতিশয় সতর্কত গ্রহণ করা গিয়া থাকে। পাত্রের পিতা বলে—“তোমার ঘরের নিকট একটি মাহাহর বৃক্ষ জন্মিয়াছে, আমি তাহার ছায়াতে একটি চার রোপণ করিয়া কৃতার্থম্মন্ত হইতে চাহি ।” ইহা হইতেই কন্যার পিতা মূল কথা বুঝিয়া লয়। যাতায়াতের সময় উভয় পক্ষই অতি সাবধানে শুভাশুভ লক্ষণের প্রতি দৃষ্টি রাখে। কেন না, সম্পূর্ণরূপে স্থিরীকৃত এমন অনেক বিবাহ কুলক্ষণ দ্বারা ভাঙিয়া গিয়াছে। যদি স্ত্রী কিম্বা পুরুষ, মোরগ, জল বা দুগ্ধ লইয়া দক্ষিণপাশ্বে যাইতে দেখা যায়, তবে লক্ষণ-গুভ। কিন্তু চিল কি শকুনি দেখা গেলে অথবা কোন কাক যদি বাম পাশ্বে বসিয়া ডাকিতে থাকে, তাহ অশুভ লক্ষণ বলিয়াই কথিত হয়। যদি তাহারা পথে আসিতে কোনও জীবজন্তুর মৃতদেহ দেখিতে পায়, তবে আর পদৈকমাত্র অগ্রসর হয় না, এবং সঙ্গে সঙ্গে যাবতীয় আয়োজনও বন্ধ করিয়া দেয়। বৃদ্ধদিগের মুখে এমন বহু উদাহরণ শুনা যায় যে, এই সমস্ত শুভাশুভ লক্ষণের প্রতি অবহেলা পক্ষান্তরে প্রভূত অমুখের কারণ হইয়াছে। এস্থলে ইহাও বলিয়া রাখা উচিত, “ছাদং”এর সময় অর্থাৎ আষাঢ়পুর্ণিমা হইতে আশ্বিনের পূর্ণিমা

  • ইহা দেবী পরমেশ্বরীর পুজ। চাক্ম-সমাজে ইহা একটি অতি পবিত্র অশ্বগু করণীয় অমুষ্ঠান। আশ্বিন কীৰ্ত্তিক ( ১৩১৩ ) সংখ্যার ' "বৌদ্ধবন্ধু"তে ইহার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যাইবে ।