পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8や28 ছোয়াচে রোগের শব সপ্ত জ্বালাইলে হুতাশনের প্রায় ঐ রোগ গ্রাম উৎসন্ন করে। হাড়ভাসান । অন্ত্যেষ্টির পরদিন প্রত্যুষে চিতা হইতে কতকগুলি অস্থিমাত্র সংগ্ৰহ করিয়া অবশিষ্ট ভস্মরাশি স্রোতোজলে নিক্ষেপ করে। অনস্তর সংগৃহীত হাড়গুলি একটি ছাড়িতে রাথিয়া তাহার মুখ বন্ধ করত মৃতব্যক্তির জনৈক সগোত্র লইয়া সেই স্রোতস্বতীর জলে নামে । এই ব্যক্তির হস্তের কনিষ্ঠাঙ্গুলীতে একখানি সুদীর্ঘ স্বত্রের একপ্রান্ত বাধিয় দেওয়া হয় ; অপর প্রাস্ত তাহার সম্পর্কে সম্মানিত সেই গোত্রেরই কেহ তীরভূমি হইতে টানিয়া ধরে। এদিকে চাপদ্বারা “ষ্ঠাড়ি’টা জলপূর্ণ হইলে ডুব দিয়া তাহ ঠেলিয়া দিতেই তীরস্থিত ব্যক্তি জলগত ব্যক্তিকে টানিয়া তুলিয়া আনে। অতঃপর রড়ী ও ঠাকুরদিগকে দান-দক্ষিণা উৎসর্গ করা এবং পরিপাটিরূপে খাওয়ান হয়। এই সময়ে শ্মশান ভূমিতে ঘেরা দিবারও ব্যবস্থা আছে। শ্রাদ্ধ | কোন কোন গোষ্ঠীতে অন্তেষ্টির দিন হইতে সাতদিন পরে আবার কেহ কেহ বা মৃত্যু দিবসের সাতদিন পরে সাপ্তাহিক শ্রাদ্ধক্রিয়া সম্পন্ন করে। এই আদ্যশ্ৰাদ্ধকাৰ্য্য শ্মশান ভূমিতেই অনুষ্ঠিত হয় । ইহাতে সাধ্যায়ত্তরূপে ভিক্ষু ও শ্রমণগণকে নিমন্ত্রণ করিয়া তাহাদিগকে ধ্বজ, থটা, শয্যা, নানাবিধ বাসন ও ভোজ্যোপকরণ ও দক্ষিণাদি উৎসর্গ করে ; এবং সপরিবারে কলসী ধরিয়া জল ঢালিয়া থাকে। যদি পরিবারের কাহারও অন্তঃপুর হইতে বাহির হইবার আপত্তি থাকে, তাহা হইলে একখানি সুদীর্ঘ স্থত্রের একপ্রাস্ত ধরিয়া রহে, অপরপ্রান্ত দানভূমিতে আনিয়া উক্ত কলসীগলে জড়ায়। পিতামাতার শ্রাদ্ধে মাথার চুল ফেলিয়া দিতে হয়। এই সময়ে সমাগত আত্মীয় বন্ধুবান্ধবেরাও প্রেতাত্মার উদ্দেশে ধ্বজ প্রতিষ্ঠা এবং ‘দান খয়রাত’ ইত্যাদি যথা ইচ্ছা করিয়া থাকে। কথিত আছে, ‘ধ্বজাদানের এতই ফল যে, তৎ সঞ্চালনে শ্মশানের যতগুলি রেণু চালিত হয়, মৃতব্যক্তি । .তত বৎসর নিৰ্ব্বিঘ্নে স্বৰ্গবাসের অধিকার লাভ করে।’ সুতরাং ধ্বজ সংখ্যায় বেশী হইলে স্বৰ্গবাসের সুবিধাও অধিক প্রবাসী । इं। এতদুপলক্ষে ভোজনাদিদিও যথাসাধ্য পরিপাট হইয়া [ ৭ম ভাগ । থাকে। ইহাদের সমাজে বার্ষিক শ্রাদ্ধ করিবারও রীতি প্রচলিত আছে, কিন্তু ইহা অতি অল্পলোকেই করে । মৃত্যুদিবসের বাঙ্গলা তারিখ ধরিয়াই বার্ষিক শ্রাদ্ধের দিন গণনা করা হয় । ইহাতেও ভিক্ষু এবং শ্রমণদিগকে নানাবিধ দান ও দক্ষিণাদি উৎসর্গ ভিন্ন পূৰ্ব্বোক্তরূপে জল ঢালাও হয়, তাছাড়া অপর কোন বিশেষ বিধি নাই । শ্রীসতীশচন্দ্র ঘোষ । সংগ্ৰহ । ম্যালেরিয়ার ইতিহাস । ডাক্তার মেজর রস, এফ, আর, এস, ম্যালেরিয়ার ইতিহাস সঙ্কলন করিয়াছেন । তাহার সারসংগ্ৰহ ম্যালেরিয়া জর্জরিত বঙ্গীয় পাঠকের মনোরঞ্জক হইবে সন্দেহ নাই । খৃষ্টপূৰ্ব্ব ৪০০ অব্দে হিপোক্রেটিস লিথিয়া গিয়াছেন যে গ্রীক ও রোমকেরা ম্যালেরিয়ার নিদান অনুসন্ধান করিয়া স্থির করিয়াছিলেন যে (১) ম্যালেরিয়া লাগ্নিক ব্যাধি নহে ; তাহার আক্রমণ ছাড়িয়া ছাড়িয়া সময়ে সময়ে ঘটে । ইহা প্রাত্যহিক, দ্ব্যহিক, ত্র্যহিক বা চতুরহিক হইয়া থাকে। অর্থাৎ জর রোজ ছাড়িয়া ছাড়িয়া হয়, এক দিনে দুই বার, প্রতি তৃতীয় দিনে অর্থাৎ এক দিন অন্তর, প্রতি চতুর্থ দিনে অর্থাৎ দুই দিন অন্তর হইয়া থাকে। (২) এই ব্যাধির সহিত স্যাত। স্থান ও জলা প্রভৃতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। র্তাহারা ইহাও স্থির করেন যে ম্যালেরিয়ার বিষ কোন প্রকার জীবাণু দ্বারা মনুষ্য শরীরে নিষিক্ত হয়। উনবিংশ শতাব্দীর মশক-উপপত্তির সহিত ইহার একত্ব দেখিয়া আশ্চর্য্য হইতে হয়। * গ্রীক ও রোমকের পরে দক্ষিণ আমেরিকার সহিত ম্যালেরিয়ার সংশ্রব। ইকোয়েডরের অন্তর্গত ম্যালাকোটস্ নামক গ্রাম হইতে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক কুইনিনের আবিস্কার হয়। ১৬৪০ খৃষ্টাব্দে ইহা যুরোপে বিজ্ঞাত হয়, এবং ফরাসী রাজা চতুর্দশ লুই ইহা ব্যবহার করিয়া স্বরমুক্ত হইলে

  • সিংহলের এক ইংরাজ ডাক্তার প্রাচীন সংস্কৃত চিকিৎসা গ্রন্থ হইতে হিন্দুদিগের মশকবিষে জ্বরোৎপত্তির প্রকৃষ্ট জ্ঞানের পরিচয় প্রচার করিয়াছেন ।