পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা । ] কুইনাইনের খ্যাতি সৰ্ব্বজনবিদিত হইয় পড়ে। ১৮২০ সালে পেরুভিয়ন-ত্বক হইতে প্রকৃত কুইনিয়ন বহিষ্কৃত করা হয় । অধুনাতন কালে জীবাণুবিদ্যা ও অণুবীক্ষণের উন্নতিদ্বারা ইহা নিশ্চিত প্রমাণ হইয়াছে যে ম্যালেরিয়া বিষ মশকসংক্রামিত জীবাণু ভিন্ন আর কিছু নহে। উহারা মনুষ্যরক্তে মিশ্রিত হইয়া দাহ উপস্থিত করে। তাহাই ম্যালেরিয়া জর । অন্যান্য বহু রোগ, যেমন যক্ষ্মা, কলেরা, টাইফয়েড জর, কুষ্ঠ প্রভূতি, জীবাণু হইতে উৎপন্ন হয়; কিন্তু ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রাণীজ এবং অন্তান্ত রোগের উদ্ভিজ্জ । ম্যালেরিয়ার জীবাণু রক্তের মধ্যে গিয়া দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। যখন জীবাণুকোষ পূর্ণ-পরিণত হইয়া ফাটির অসংখ্য বংশে ছড়াষ্টয়া পড়ে, তথনষ্ট জর আসে, আবার সকল জীবাণু পরিণত হইয়া উঠিলে জর বন্ধ হয় ; পরিণতির শেষাবস্থায় যখন আবার বংশবিস্তার হয়, তখন আবার জর ভয়, এষ্টরূপে কোন কোন জীবাণু ২৪ ঘণ্টায় একবার, কোন কোন বা ৪৮ ঘণ্টা বা ৭২ ঘণ্টায় একবার বংশ বিস্তার করে । একই শরীরে ত্ৰিবিধ জীবাণুই থাকিতে পারে, কিন্তু সচরাচর সেরূপ দেখা যায় না । o ৫ সময় ম্যালেরিয়া জীবাণু রক্তের মধ্যে বংশ বিস্তার করে সেই সময় রোগীর শীত বা কম্প, গা বমি বমি, এবং দহ হয় । অল্পক্ষণ পরে শরীর প্রাকৃতিক চেষ্টায় বহির্বিষকে স্নায়ত্ত করিয়া লয়, এবং কতক বিষ ঘামের সঙ্গে বাছির ইষ্টয়া যায়, তখন জর ছাড়ে। কিন্তু রক্তের মধ্যে যাহারা থাকে তাহারা আবার বংশ বিস্তার করে, আবার জর হয় । যে পৰ্য্যন্ত না নিঃশেষে জীবাণু ধ্বংস হয়, সে পৰ্য্যন্ত থাকিয়া থাকিয়া জর আসে। সমস্ত জীবাণু ধ্বংস হইয়া গেলেও সামান্য অনিয়ম, যেমন রৌদ্র বা অগ্নিতাপ, পরিশ্রম, ঠাণ্ড প্রভৃতি মৃত জীবাণুকে পুনরুজ্জীবিত করিয়া তুলে.এবং পালটিয়া জর হয়। এই জন্য খুব সাবধানে থাকিয়া বহুদিন ধরিয়া জীবাণুর সঙ্গে প্রতিষেধক ঔষধ সাহায্যে যুদ্ধ চালান দরকার, জ দিখেদ নিশ্চিন্ত হওয়া উচিত নয়, "মরিয়া না মরে রাম এ কেমন বৈরি’ ! ম্যালেরিয়ার দেশে ছেলের অধিক আক্রান্ত হইয়া মারা পড়ে। যদি কোনমতে ম্যালেরিয়ার আক্রমণ এড়াইয়া বড় ংগ্ৰহ । 83లt হয়, তবে আর তাহাদের বড় একটা জর জালা হয় না। ইহার কারণ, ম্যালেরিয়ার দেশে এমন বালক নাই যাহার রক্তে ম্যালেরিয়াবিষ নাই ; যদি বিষ অল্পে অল্পে রক্তে মিশে তবে টীকা দেওয়ার মত তাহ শরীরে সহিয়া যায়, অথচ বাহিরের বিষকে আর রক্তের মধ্যে আমল দেয় না। ম্যালেরিয়ার অল্পবিষাক্ত বালক বড় হইলেও ম্যালেরিয়ার আক্রমণ হইতে অব্যাহতি পাষ্টয়া থাকে। প্রথমে অনুমিত হক্টত যে এই ম্যালেরিয়া বিষ বন্ধ পচ জলাশয়ে জন্মে এবং বাতাসের সঙ্গে শ্বাস গ্রহণের সময় শরীরমধ্যে প্রবেশ করিয়া অনর্থ ঘটায় বা সেই জল পান । করিলে শরীরে প্রবেশ করে । কিন্তু পরীক্ষা দ্বারা ইহার সত্যতা প্রমাণিত হয় নাই । তৎপরে মশক-উপপত্তি প্রচারিত হয় । এবং ইহা সত্য কারণ বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। মশক ত সৰ্ব্বকালে সৰ্ব্বদেশে আছে, কিন্তু ম্যালেরিয়া সৰ্ব্বত্র হয় না কেন ? ডাক্তার সার প্যাটিক ম্যানসন প্রমাণ করিয়াছেন যে ম্যালেরিয়া বিষ এক জাতীয় বিশেষ মশকের দ্বারা মনুষ্য শরীরে নিষিক্ত হয়, সকল মশকই অপরাধী নহে। ম্যালেরিয়ার প্রতিকার কল্পে ডাক্তার রস ম্যালেরিয়ামশক উৎপাদক জলা বিল পরিস্কার করিবার ব্যবস্থা দিয়াছেন । আমরা দল বাধিস্থা নিজীবভাবে মরিতে জানি, প্রতিকার করিতে জানি না । পরাধীন জাতির উদ্যমও থাকে না, এবং এ সব কাজ ব্যক্তিগত নছে ; পূৰ্ব্বে সমাজসাপেক্ষ ছিল, এখন রাষ্ট্ৰসাপেক্ষ হইয়াছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র ন হইলে অকৰ্ম্মণ্য জীবের চুপিচুপি মরণের প্রতি পরকীয় রাষ্ট্র কখনই লক্ষ্য করিবে না। পুরাতত্ত্ব-আবিষ্কার । আমেরিকার ক্যালিফৰ্ণিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যত্নে মিশর দেশের নাগা-এডু-ডার নামক স্থান খনন করিয়া মিশরের আদিম নিবাসীদিগের সম্বন্ধে বহুতত্ত্ব আবিষ্কৃত হইয়াছে। আদিম অসভ্য অধিবাসী হইতে সুসভ্য মিশরবাসীদিগের ৯১০ হাজার বৎসরের ক্রমোন্নতি ও পুনরবনতির ইতিহাস নির্ণীত হইয়াছে। গোরস্থান হইতে মসলারক্ষিত নরশরীর আবিষ্কৃত হইয়াছে। যে স্থানে নরকঙ্কাল বাহির হইয়াছে । তাহা কায়রো সহরের ৩০০ মাইল দক্ষিণপুৰ্ব্ব মরুময় স্থান ;