পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8१२ .ه& প্রবাসী । দলিত কুসুম। সিন্ধুকূল হতে দূরে নলিনী নীরবে চাহিয়া পথের পানে । মান মুখ-কাস্তি

  • ' দুঃখে আত্মহারা তবু হয়নি বালিকা ।

হেরিল যখন দূরে আসে জন-স্রোত মন্দির হইতে, দেখিল সে বিমলের দুঃখে ভর স্নান মুখ, অশ্রুরাশি আর মানেনাক বাধা চোখে । ছুটিয়া তখন .ধরিয়া দুইটি কর, লুকাইল মুখ বিমলের হৃদি পরে । ভুলি লজ্জা ভয় কহিল সে মৃদু কণ্ঠে “বিমল, বিমল, হোয়োনাক আশাহারা । যদি প্রিয়তম ভালবাসি চিরদিন মোরা পরস্পরে কিছুতেই কোন ক্ষতি হবে না মোদের । যত না দুঃখের ছায় ঘিরে দিক এই আমাদের সুখ রাশি, আমরা দুজনে যদি দুজনার থাকি, কি ক্ষতি তা’হলে সহস্ৰ দুঃখের ঘায় ?” সহসা যখন দেখিল পিতারে তার, কি মলিন মূৰ্ত্তি নাহি সে আশার আলো বৃদ্ধের আননে, নয়নের দীপ্তি যেন নিভে গেছে হায় । আপনার পদ শব্দ যেন হৃদয়েতে প্রতিধ্বনি হইতেছে । নলিনী আসিয়া নীরবে নিঃশ্বাস ফেলি ধরিল গলায়, বলিল হইতে স্থির । হায় সে হৃদয়ে জগতের কোন কথা করে না প্রবেশ । এইরূপে আয়োজন হইল সবার নিৰ্ব্বাসনে যাইবার। সহসা তরণী—- খুলিতে হইল আজ্ঞা। জোয়ারের জল এসেছে সিন্ধুর কুলে, তরণী চঞ্চল । সেনাপতি আজ্ঞা দিল, সৈনিকের দল লইয়া চলিল যত নরনারীগণে । , রমণীরে লয়ে যায় পতি রহে তীরে, [ ৭ম ভাগ কোলশূন্ত নারী যায়, কোলের সন্তান রহিল কুলেতে পড়ি। লয়ে গেল হায় বিমল ও সুমন্তেরে। নলিনী অভাগী রহিল কুলেতে চেয়ে পাষাণপ্রতিমা । নলিনীর পিতা যেন জড়ের সমান । রবি অস্ত চলে গেল, স্নান অন্ধকারে গোধূলি নামিয় এল। জোয়ারের জল যেতেছে সরিয়া ধীরে। ফেনোৰ্ম্মি সকল পড়িছে সমুদ্র তটে । বালুর উপর অদূরে পড়িয়া আছে, গ্রামবাসীদের দ্রব্যজাত, স্তুপাকার, শিবির সমান । সহসা প্রবল এক তরঙ্গ আঘাতে ভাসিয়া যেতেছে তাহা । অন্ত বাকি যত গ্রামবাসী সেই স্থানে রহিল পড়িয় । সারাক্ষণ শুনে সব তরঙ্গগজ্জন । প্রস্তরে পাইয়া বাধা দুরন্ত তরঙ্গ বেলা ভূমি লয়ে সাথে যেতেছে ভাসিয়া। আসিল রজনী পরি তিমির বসন, গ্রাম্য পশুপাল গৃহে যেতেছে ফিরিয়া । মধুর বহিতেছিল রজনী সমীর । গাভীগণ চেয়ে আছে পাইবে কখন আপনার খাদ্য দ্রব্য। কোথায় এখন দুগ্ধ পাত্র লয়ে হায় রমণীর দল ? নীরবতা আসি যেন ছেয়ে দিল সেই জনশূন্ত পথ ঘাট । মন্দিরেতে আজি নাহি ঘণ্টারব। বাতায়নে আলোশিখা জলে না কঁাপিয়া। গৃহচালে আজি আর ধুমশিখা উঠে নাই, নীরব সকল। সমুদ্রের কুলে সবে জালাইল আলো ক্ষুদ্ৰ কাষ্ঠখণ্ড লয়ে। চারিদিকে তার শুষ্ক মান মুখে বসি আঁধার হৃদয়ে অভাগা সে গ্রামবাসী। শুনা যায় শুধু নরনারী-কণ্ঠধ্বনি, শিশুর ক্ৰন্দন মাঝে মাঝে সে স্তব্ধতা দেয় ভাঙ্গাইয়া । গ্রাম্য পুরোহিত যেন পিতা সবাকার,