পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ఫిల না! কেবল নাচিয়ে দিতেই পারেন। কথায় বলে, “জলমে রহকে মগর সে বৈর’ ( জলে বাস করিয়া কুমীবের সহিত শক্ৰতা ) । আগে নিজেরাই সাহেব সাজলেন, হোটেলে খেলেন, চুরুট ফুকলেন, এখন নেজামুড় থেয়ে ধৰ্ম্মে দিয়েছেন মন, কিনা স্বদেশ সেজেছি। বন্দেমাতরমূ, বন্দেমাতরম, এ আবার ছাই কি কথা ? বন্দেপিতরম্ বল্লেও বা কিছু মানে হতো। চিরকাল বগীর ভয়ে পেটের পীলে চমকেছে, এখন শিবাজী হলেন আপনার লোক । এ দেশের লোক বেশ বাবা ! কোন হুজ্জত হাঙ্গামে নেই, পোড়া বাঙ্গালীর সব বাড়াবাড়ি।” এই শ্রেণীর প্রবাসিনীর বলেন, “কি বাবু! স্বদেশী কাপড় দু’চক্ষে দেখতে পারিনে, মোটা খসখসে পরলে পরে গায়ে যেন ছড় যায়। একখানা কাপড় এক মনের বোঝা । আবার গুণ কত ! ধোপার বাড়া গেলে, “কিনারীর’ ( পাড়ের ) রঙ্গ উঠে যায় । ওসব স্বদেশী ওদেশ কিছু থাকবে না । ইংরেজের সঙ্গে লাগা, ওরা হ’ল দেবতার জাত, ওদের সঙ্গে পারবে ? কথায় বলে, “যার থাই তার গাঙ্গ’ । তা বাঙ্গালী এমন জাত যে, মুনের গুণ মানে না গা ! রাজার দেশ, তা সে দু’থানাই করুক আর চারখানাই করুক, তাতে আমার তোমার কি ?" প্রথম শ্রেণীর শিক্ষিত প্রবাসীর বঙ্গবিভাগে কোন ক্ষতি না মনে করিলেও, কেহ কেহ স্বদেশীর পক্ষপাতী হইয়াছেন। প্রবাসিনী । প্রায়শ্চিত্তে প্রতিশোধ । ( ইতিহাসের শিক্ষা । ) ( > ) জীর্ণ চীরপরিহিত পর্ণকুটারবাসী নিরন্ন ব্যক্তি হইতে । রাজমুকুটধারী স্বর্ণসিংহাসনারূঢ় পৃথ্বীপতি পর্যন্ত কাহারও নিস্তার নাই---প্রকৃতির প্রতিশোধ, দেবতার দণ্ড সকলকেই স্পর্শ করে। জীবনে হউক, জীবনাস্তে হউক, বিধাতার অভিসম্পাত অপরাধীর অদৃষ্টের মত তাহার সঙ্গে সঙ্গে থাকে। মামুষের ক্ষীণ দৃষ্টি সকল সময়ে তীব্র অনলশিখা দেখিতে পায় না, তাই কখন কখনও মনে হয় যে পরমেশ্বরের প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । অপক্ষপাত বিচারেও অপরাধী নিস্কৃতি লাভ করে—অপরাধীব চিতাভষ্মের সহিত তৎকৃত অপরাধও চিরবিলুপ্ত হইয়া যায় —স্বর্গের বিচারমগুপে পাপ-পুণ্যের হিসাব-নিকাশের পাতায় উহা বাদ পড়ে । কিন্তু ইহা একটা নিদারুণ ভ্রম। ইতিহাস অতীতের জ্ঞান-বৃদ্ধ সাক্ষী-বৰ্ত্তমানের বিচক্ষণ শিক্ষক ও ভবিষ্যতের অতিস্থির আচঞ্চল পথপ্রদর্শক। সেই ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যাইবে যে তাহার প্রতি পৃষ্ঠায় লিখিত রহিয়াছে— দওঃ শাস্তি প্রজাঃ সৰ্ব্বা দণ্ড এবাভিরক্ষতি দওঃ স্বপ্তেযু জাগৰ্ত্তি দণ্ডং ধৰ্ম্মং বিদ্যুবুধাঃ। মনু---৭।১৯। ধৰ্ম্ম অক্ষয়—তাহার বিনাশ নাই । চির সুমুপ্তিমগ্ন ধরাতলে দণ্ডই জাগরণ । তাই ঋষিবাক্য দণ্ডকে ধৰ্ম্ম বলিয়া প্রখ্যাত করিয়াছে। দণ্ড যে মহা জাগরণ তাহ। আমরা এখন বেশ বুঝিতে শিখিয়াছি। সুদূর আফগানিস্থানের দুর্ভেদ্য শৈলমালার অন্তরাল হইতে একদিন মহম্মদ বক্তিয়ার খিলিজি হজরত মহম্মদের পতাকা লইয়া স্বর্ণপ্ৰসবিনী বঙ্গদেশে আগমন করিয়াছিলেন। বিধিদত্ত কুরূপ দর্শনে মহম্মদ ঘোরী যাহাকে আশ্রয় দেন নাই--দিল্লির রাজপথে ভ্ৰমণ করিয়া যিনি জীবনের দীর্ঘ দিন অতিবাহিত করিয়াছিলেন, তবুও কুতবউদ্দীনের আশ্রয়লাভ করিতে পারেন নাই, অবশেষে ঔঘল বেগ নামক কোন প্রাদেশিক শাসনকর্তা র্যাহার কৰ্ম্মকুশলতা, সাহস এবং শক্তি দর্শনে পুলকিত হইয়া বিধিপ্রদত্ত কুরূপ উপেক্ষা করিয়াছিলেন-সেই বক্তিয়ার খিলিজি প্রথমে বেহারে এবং পরে বঙ্গে আগমন করিয়াছিলেন এবং বাঙ্গালার অংশবিশেষে বিজয়লাভ করিয়া প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন । তাহার রণোন্মত্ত সৈন্তগণ নদীয়ার ধনরত্ন লুণ্ঠন করিয়া যখন পরিতৃপ্ত হইল, বক্তিয়ার তখন বীরদৰ্পে অগ্রসর হইয়া লক্ষ্মণাবর্তীতে রাজধানী সংস্থাপন করিয়াছিলেন। র্তাহার রাজ্যলাভেচ্ছা এতই প্রবল হইয়াছিল যে তিনি দুর্গম তিব্বতে পৰ্য্যন্ত অভিযান করিয়াছিলেন । রাজ্যবিস্তারকামনায় বক্রিয়ার এতই অন্ধ হইয়াছিলেন যে নিজের সৈন্ত-সামন্তদিগের