পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯ম সংখ্যা । ] গর সতীশ 2ణి নে শুনিতে পায় নাই - এমনি ভাবে লগাইতে লাফাইতে ঘর তুষ্টতে বাহির হইয়া গেল। বিনয় আজ পরেশ বাবুর বাড়ি হইতে সকাল সকাল বিদায় গষ্টয়া গোরার কাছে যাইবে নিশ্চয় স্থির করিয়া আসিয়াছিল। বিশেষত গোরার কথু বলিতে বলিতে গোরার কাছে যাইবার উৎসাহও তাহার মনে প্রবল হইয় উঠিল। তাই সে ঘড়িতে চারটে বাজিতে শুনিয়া তাড়াতাড়ি চৌকি ছাড়িয়া উfয়া পড়িল । সুচরিত কহিল, “আপনি এখনি যাবেন ? মা আপনার জন্তে খাবার তৈরি করচেন। আর একটু পরে গেলে কি চলবে না ?” বিনয়ের পক্ষে এ ত প্রশ্ন নয়, এ হুকুম । সে তখনি বসিয়া পড়িল। লাবণ্য রঙীন রেশমের কাপড়ে সাজিয়া গুজিয়া ঘরে প্রবেশ করিয়া কহিল—“দিদি, খাবার তৈরি হয়েছে। মা ছাতে আসতে বল্লেন।” ছাতে আসিয়া বিনয়কে আহারে প্রবৃত্ত হইতে হইল। বরদাসুন্দরী তাতার সব সন্তানদের জীবনবৃত্তান্ত আলোচনা করিতে লাগিলেন । ললিতা স্বচরিতাকে ঘরে টানিয়া লইয়া গেল। লাবণ্য একটা চৌকুতে বসিয়া ঘাড় হেঁট করিয়া দুষ্ট লোহার কাঠি লষ্টয়া বুনানির কার্যো লাগিল—তাহাকে করে একজন বলিয়াছিল বুনানির সময় তাহার কোমল আঙুল গুলির খেলা ভারি সুন্দর দেখায় সেই অবধি লোকের সাক্ষাতে বিনা প্রয়োজনে বুনানি করা তাহার অভ্যাস হইয়া গিয়াছিল। পরেশ আসিলেন। সন্ধ্যা হইয়া আসিল । আজ রবিবারে উপাসনামন্দিরে যাইবার কথা । বরদাসুন্দরী কহিলেন—“যদি আপত্তি না থাকে আমাদের সঙ্গে সমাজে যাবেন ?” ইহার পর কোনে ওজর আপত্তি করা চলে না । চষ্ট গাড়িতে ভাগ করিয়া সকলে উপাসনালয়ে গেলেন। ফুিরিবার সময় যখন গাড়িতে উঠিতেছেন তখন হঠাৎ স্বচরিত চমকিয়া উঠিয়া কহিল—“ঐ যে গৌরমোহন বাবু যাচ্চেন ।” গোরা যে এই দলকে দেখিতে পাইয়াছিল তাঙ্গতে কাহারো সন্দেহ ছিল না। কিন্তু যেন দেখিতে পায় নাই স্বরাট । Q)● এইরূপ ভাব করিয়া সে বেগে চলিয়া গেল, গোরার এই উদ্ধত অশিষ্টতায় বিনয় পরেশবাবুদের কাছে লজ্জিত হইয়া মাথা হেঁট করিল। কিন্তু সে মনে মনে স্পষ্ট বুঝিল বিনয়কেই এই দলের মধ্যে দেখিয়া গোরা এমন প্রবল বেগে বিমুখ হইয়া চলিয়া গেল। এতক্ষণ তাহার মুনের মধ্যে যে একটি আনন্দের আলে জলিতেছিল তাহা একেবারে নিবিয়া গেল। স্নচরিত, বিনয়ের মনের ভাব ও তাহার কারণটা তখনি বুঝিতে পারিল, এবং বিনয়ের মত বন্ধুর প্রতি গোরার এই অবিচারে ও ব্রাহ্মদের প্রতি তাহার এই অন্যায় অশ্রদ্ধায় গোরার উপরে আবার তাহার রাগ হইল ;– কোনো মতে গোরার পরাভব ঘটে এই সে মনে মনে ইচ্চা করিল। স্বরাট । এবার শেষ মুহুর্তে স্থির হইয়াছে যে কংগ্রেস নাগপরে হইবে না, সুরাটে হইবে। অতএব সুরাটের বৃত্তান্ত জানিবার কৌতুহল হইতে পারে। নিম্নে আমরা সংক্ষেপে স্বরাটের বৃত্তান্ত লিখিতেছি— সুরাট তপতী নদীর দক্ষিণ তটে প্রায় নদীর মোহানায় অবস্থিত। সুরাট সমুদ্র হইতে জলপথে ১৪ মাইল এবং স্থলপথে ১০ মাইল দূরে অবস্থিত। তপতী যেখানে দক্ষিণপুৰ্ব্ব পথে যাইতে যাইতে হঠাৎ বাকিয়া দক্ষিণপশ্চিমে গিয়াছে ঠিক সেই বাকের উপর সুরাট অবস্থিত। তপতী। নৰ্ম্মদার হায় পূণ্যতোয় বলিয়া গণ্য না হইলেও ইহা স্থানীয় লোকের নিকট যথেষ্ট পবিত্র বলিয়া আদৃত। ‘পুরাণ বা নদীর পুণ্যকাহিনী অনুসারে তপতীর তীরে ১০৮তীর্থসংস্থিত। তন্মধ্যে সুরাট হইতে ১৫ মাইল পূৰ্ব্বে বোধীন নামক তীর্থ সৰ্ব্বপ্রধান—তথায় প্রত্যেক ১২ বৎসর অন্তর ধৰ্ম্মমেলা হইয় থাকে। স্বরাট হইতে নদীর উজানে দুই মাইল দূরে অশ্বিনীকুমার ও গুপ্তেশ্বর নামক স্থানদ্বয় ও পূণ্যতীর্থ বলিয়৷ গণ্য হয়। এতদুভয় স্থানেই বহু মন্দির, যাত্ৰীগৃহ ও জলাবতরণিক সোপানশ্রেণী আছে। প্রতি বৎসর বহু স্নানার্থী যাত্রী এস্থানে আগমন করে। গুপ্তেশ্বর শবদাহের প্রসিদ্ধ. স্থান ।