পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ులు প্রবাসী । আত্মবিশ্বত হইতে কতক্ষণ ? নহিলে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ হয় ত উদ্দেশ্বের পথে কাটা দিয়া উঠিবে এবং দলের অভিমানকেই কোনোমতে জয়ী করাকে স্বদেশের জয় বলিয়া ভুল করিয়া বসিব । আমরা এক এক কালের লোক কালের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে কোথায় নিষ্ক্রান্ত হইয়া চলিয়া যাইব-কোথায় থাকিবে আমাদের ষত ক্ষুদ্রতা, মান অভিমান, তর্ক বিতর্ক,বিরোধ,— কিন্তু নিধাতার নিগুঢ় চালনায় আমাদের জীবনের কৰ্ম্ম নিশ্চয়ই ধীরে ধীরে স্তরে স্তরে আকৃতি দান করিয়া আমাদের দেশকে উপরের দিকে গড়িয়া তুলিবে। অন্তকার দীনতার শ্ৰীহীনতার মধ্য দিয়া সেই মেঘ বিমুক্ত সমুজ্জল ভবিষ্যতের অভু্যদয়কে এইখানেই আমাদের সম্মুথে প্রত্যক্ষ কর যেদিন আমাদের পৌত্রগণ সগৌরবে বলিতে পারিবে, এ সমস্তষ্ট আমাদের, এ সমস্তই আমরা গড়িয়াছি। আমাদের মাঠকে আমরা উৰ্ব্বর করিয়াছি, জলাশয়কে নিৰ্ম্মল করিয়াছি, বায়ুকে নিরাময় করিয়াছি, বিদ্যাকে বিস্তৃত করিয়াছি ও চিত্তকে নিভাক করিয়াছি। বলিতে পারিবে আমাদের এই পরম সুন্দর দেশ--এই সুজলা সুফলা মলয়জশীতলা মাতৃভূমি, এই জ্ঞানে ধৰ্ম্মে কৰ্ম্মে প্রতিষ্ঠিত, বীৰ্য্যে বিধৃত জাতীয় সমাজ এ আমাদেরক্ট কীৰ্ত্তি—যেদিকে চাহিয়া দেখি সমস্তই আমাদের চিন্তা, চেষ্টা ও প্রাণের দ্বারা পরিপূর্ণ, আনন্দগানে মুখরিত এবং নুতন নুতন আশাপথের যাত্রীদের অক্লান্ত পদভারে কম্পমান । দলিত কাম । আইল বসন্ত পুনঃ, ক্ষীণ কায় সেই তটিনীর সোনাজলে, ভাসিছে তরণী এক লয়ে নরনারী - নিৰ্ব্বাসন কালে রাজার তরণী গেছে অতলে ডুবিয়, ক্ষুদ্র এই তরীপরে সকলে মিলিয়া হইতেছে অগ্রসর। সকলে তাহারা শুনেছে সে পল্লীবাসী আছে অদূরেতে কোন দেশ এক, তাই হইতেছে আজি অগ্রসর, আশা আলো ভাসিছে আননে। [*श्र छांशं । আবার হয়েছে আশাসকলে মিলিঙ্গ দেখা হলে রবে সেথা পূৰ্ব্বেকার মত। তারি সাথে পুরোহিত মলিনীরে লয়ে চলেছেন অন্বেষণে । প্রতিদিন যায় ক্ষুদ্র তরী মৃদু সেই তরঙ্গের ভরে হইতেছে অগ্রসর । বন শৈলশ্রেণী কত পড়ে থাকে পাছে, রজনী হইলে নদীকূলে তরী বাধি শিবির করিয়া নিশাকালে সেই ধানে একত্র সকলে কাষ্ঠখণ্ড জালি করে প্রদীপ তাহার। আহারের আয়োজন করে সেইখানে । শিমূলের বৃক্ষ হতে শুভ্ৰ তুলারাশী উড়িয়া ছড়ায়ে পড়ে তরঙ্গের পরে । মৃদু মর মর ধ্বনি করে স্রোতস্বিনী । দেখা যায় দূরে ওই উদ্যান ভিতরে অতি ক্ষুদ্র গৃহ গুলি, বসন্তের শোভা পড়েছে ছড়ায়ে যেন সে উদ্যানে শুধু। সেইখানে স্রোতস্বিনী যেতেছে বাকিয়া সেই স্বর্ণ তীরে তার নেবুর স্ববাস দূর হতে ভেসে যায়। সেইখান দিয়া নদী যেন ক্ষীণ কায় হইল সহসা, দুধারে গাছের সারি। ছলিছে পল্লব উচ্চ দেবালয়ে যেন তুলিছে পতাকা । ক্রমেতে রজনী হলে তীরে তরী বাধি আহার করিত সবে । চাদের কিরণ কেমন ছড়ায়ে পড়ে তটিনীর বুকে । কখনো পেচক তার কর্কশ গলায় উপহাস করে যায় রজত কিরণে । উচ্চ বৃক্ষ চুড়ে সব পড়িয়াছে ছায় দূর হতে দেখাইছে তারা যেন সব পল্লীপথে অযতনে সমাধি মন্দির। সেই স্তব্ধহীন স্থান সকলি কেমন ঘুমে ভর স্বপ্ন সম ছেয়ে চারিদিক। অদ্ভুদ কল্পনা-জাল দিয়াছে বিরিয়া সকল মানব আঁখি, সকলেই ভোর আপন মনের ভাবে । নলিনীর মনে ছায়াসম মূৰ্ত্তি কার ভাসিয়া বেড়ায়। সেই দুর বনপথে শৈলের উপরে বিমল তাহার যেন। প্রতি তরঙ্গের ক্ষেপে, সে যেন আসিছে আরো কাছে তাহার। সহসা গভীর রাতে নাবিকের দল যাত্রার সময় বলে সঙ্কেতের ধ্বনি করিল, সহসা তরী চলিল ভাসিয়া,