পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\లసి 6 . অর । অজ । আর একা তুমি জ্ঞানী! হেন অভিমান কেমনে জন্মিল তব ? এই স্পৰ্দ্ধা, হেন অহঙ্কার, কণ্টক-বৃক্ষের মত কর পরিহার চিত্ত হ’তে উৎপাটিয় । কোন দোষে কহিছ সবারে যেহেতু, নিবিড় অন্ধকারে নিমগ্ন ইহারা। এই ক্ষুদ্র, মুক শিলাখণ্ড-মাঝ ভাবে যারা—বিরাজেন বিশ্ব-অধিরাজ মুর্থ তারা—অতি অন্ধ ! অনন্ত-স্বরূপ ভগবানে যাহার এহেন তুচ্ছ, ক্ষুদ্র করি’ আনে তারা কি দুর্ভাগ্য নহে ? এ প্রধান মুর্থতার মাঝে জেনো বন্ধু, মুনিশ্চয় কোন যুক্তি আছে। সত্য বটে সৰ্ব্ব-শক্তি, অনন্ত, বিরাট্র ভগবান ; সৰ্ব্বভূতে চিরন্তন সে সত্তা মহান বিরাজিত ; তবু, তুচ্ছ মানবের সঙ্কীর্ণ কল্পনা র্তা’র সে অসীম সত্তা করিতে ধারণা পারে নাক । তাই, তা’রে প্রতিষ্ঠিত করিয়া সম্মুখে সীমাবদ্ধরূপে, সদা সৰ্ব্ব দুঃখে-মুখে র্তাহারি উপরে করে জীবন নির্ভর। ভাবে মনে— কতটুকু ক্ষুদ্র এই নর : ক্ষণে ক্ষণে যা’র স্থতি লুপ্ত হয়, যা’র জ্ঞান কভু নাহি পারে বুঝিবারে—কি যে আছে মৃত্যু-পর-পারে, যা’র দৃষ্টি এই ক্ষুদ্র করতলে হ’লে অন্তরাল, অন্ধ হ’য়ে নাহি হেরে—এ সৃষ্টি-বিশাল, তুচ্ছতম সেই জীব কেমনে এ অথও মহিমাভুমারে করিবে ধ্যান ? তাই, সে প্রতিমা গড়ি’ আপনার প্রেমে, আত্ম-নিবেদিয়া, শান্তমনে ধ্যানায়ত্ত করি তা’রে পুজে সঙ্গোপনে। মানবের সীমাবদ্ধ বুদ্ধি এই সৃষ্টির পাথারে অস্থির হইয়া, শেষে শ্ৰান্ত আপনারে কোথায় হারা’য়ে ফেলে! তাই, সে নীরবে, ধীরে ধীরে, চিত্তেরে করিয়া স্থির, পশিয়া মন্দিরে, প্রতিমারে করে পুঞ্জা ভাবিয়া বিশ্বের মুলাধার। প্রবাসী । অজ। কি কৰিলে—‘ভ্ৰান্ত মতি’ ! এ বিশাল ভারত অজ্ঞান, অঙ্গ। অজ । অর । আজ । [ ৭ম ভাগ । ... و... "...-.... তবে বন্ধু, করিতেছ তুমিও স্বীকার অনন্ত স্বরূপে তা’র ?—উত্তম। তা হলে সেই পূজা প্রশস্ত—যা বিরাট সত্তায় ? —যদি বুঝা যায়। তা না হ’লে কহ প্রিয়, প্রাণ কিগো শান্তি পায় জড়-আরাধনে ? যার স্তব্ধ মহিমায়— ‘ বিচিত্র অসীম শক্তিবলে চলে ব্ৰহ্মাও—জগৎ, র্তাহারে করিলে মনে মৃত, জড়বৎ, হয় কিহে তার পূজা ? প্রাণ কি গে৷ কন্তু তৃপ্তি লভে হেরিলে তাহারে অচেতন ? বলে—তবে, কোন সুখে এ সাধনা করে নর! ভাবে দেখি–তাহে কি আনন্দ যবে এই পবন-প্রবাহে লভে জীব সুখ-স্পর্শ র্তা’র ; রাগ-দীপ্ত স্বৰ্য্য-করে হাস্য-শুচি হেরি’ র্তা’র উঠেগে শিহরে’ ভক্ত-হিয়া ; “কুলু-কুলু’ প্রবাহিনী যবে বহমান, আদিম কালের সেই সঙ্গীত মহান শুনিয়া, সাধক তাহে হারাইয়া আপন পরাণ প্রেমাবেশে মুহূমুহূ হয় কম্পমান! জলে, স্থলে, গগনেতে—চরাচরে যাহা কিছু সব, তা’রি মাঝে হেন ভাবে করে অনুভব যবে উপাসক তার অস্তিত্ব নিয়ত, তবে তা’র কি আনন্দ বল দেখি !—সে মুখ অপার ! এত শাস্তি, এত তৃপ্তি লভিবারে পারে বল কিহে, মন-গড়া, সীমা-বদ্ধ প্রতিমারে নিয়ে ? অতি সত্য কথা,—কভু এ তৃপ্তির নাহিক তুলনা ! কিন্তু সখা, এ অমৃত লভে যেই জন অবিরাম নশ্বর জীবনে, তা’রে সামান্ত মানব ভেবোনাক ; নর-দেহে দেবত্ব-গৌরব লভিয়াছে সেইজন। অনন্তেরে যে করিতে পারে হেনভাবে আরাধনা, এ সংসারে তা’রে দেবজ্ঞানে করি পুজা । সাধনার সর্বোচ্চ শিখরে ভূমানন্দে দেবতা সে বিচরণ করে। কিন্তু, বন্ধু, এত উচ্চ নহে যারা তাহাদেরে প্রাণ অতুলন শান্তি-সুধা-কণা করে পান। পৌত্তলিক সাধকের করিওনা হেন অপমান ।