পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৪০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مه ۹۰ সাপ যেমন কাছাকে গিলিতে আরম্ভ করিলে তাহাকে কোনো মতেই ছাড়িতে পারেন-গোর তেমনি তাহাৰ কোনো সংস্কল্প ছাড়িয়া দিতে বা তাঙ্গর একটু আধটু বাদ দিতে একেবারে অক্ষম বলিলেক্ট হয় । অপর পক্ষ হইতে কোনো বাধা অথবা শৈথিল্য উপস্থিত হইলে তাহার জেদ আরো চড়িয়া উঠিতে থাকে। দ্বিধাগ্ৰস্ত বিনয়কে সবলে ধরিয়া রাখিবার জন্ত গোরার সমস্ত অন্তঃকরণ উষ্ঠত হইয়া উঠিল। গোরা তাহার লেখা ছাড়িয়া মুখ তুলিয়া কহিল—“বিনয়, একবার যখন তুমি দাদাকে কথা দিয়েছ তখন কেন ওঁকে অনিশ্চিতের মধ্যে রেথে মিথ্যে কষ্ট দিচ্চ ?” বিনয় হঠাৎ অসহিষ্ণু হইয়া বলিয়া উঠিল—“আমি কথা দিয়েছি---না তাড়াতাড়ি আমার কাছ থেকে কথা কেড়ে নেওয়া হয়েচে ?” গোরা বিনয়ের এক্ট অকস্মাৎ বিদ্রোহের লক্ষণ দেখিয়া বিস্মিত এবং কঠিন হইয়া উঠিয়া কহিল-“কথা কে কেড়ে নিয়েছিল ?” বিনয় কহিল--“তুমি ” গোরা । আমি ! তোমার সঙ্গে এ সম্বন্ধে আমার পাচ সাতটার বেশি কথাই হয়নি-- তাকে বলে কথা কেড়ে নেওয়া ! বস্তুত বিনয়ের পক্ষে স্পষ্ট প্রমাণ কিছুই ছিলন- গোর যাহা বলিতেছে তাহ সত্য-কথা অল্পষ্ট হইয়াছিল এবং তাহার মধ্যে এমন কিছু বেশি তাগিদ ছিলনা যাহাকে পীড়াপীড়ি বলা চলে— তবুও একথা সত্য গোরাই বিনয়ের কাছ হইতে তাঙ্গর সম্মতি যেন লুঠ করিয়া লইয়াছিল। যে কথার বাহ প্রমাণ অল্প সেষ্ট অভিযোগ সম্বন্ধে মানুষের ক্ষোভও কিছু বেশি হইয়া থাকে। তাই বিনয় কিছু অসঙ্গত রাগের সুরে বলিল—“কেড়ে নিতে বেশি কথার দরকার করে না ।” গোর টেবিল ছাড়িয়া উঠিয়া দাড়াইয়া কহিল—“নাও তোমার কথা ফিরিয়ে নাও । তোমার কাছ থেকে ভিক্ষে করেই নেব বা দস্থ্যবৃত্তি করেই নেব এত বড় মহামূল্য কথা এটা নয়।” পাশের ঘরেই মহিম ছিলেন-গোরা বজ্রস্বরে তাহাকে ডাকিল "দাদা।” প্রবাসী । মহিমশশবান্ত হইয়া ঘরে s সিতেই গোৱা কহিল— ৭ম ভাগ। "দাদা, আমি তোমাকে গোড়াতেই বলিনি যে শশিমুগীর সঙ্গে বিনয়ের বিবাহ হতে পারেনা—আমার তাতে মত নেই!” মহিম। নিশ্চয় বলেছিলে! তুমি ছাড়া এমন কথা আর কেউ বলতে পারত না । অন্ত কোনো ভাই হলে ভাইঝির বিবাহ প্রস্তাবে প্রথম থেকেই উৎসাহ প্রকাশ করত । - গোর"। তুমি কেন আমাকে দিয়ে বিনয়ের কাছে অনুরোধ করালে ? মহিম। মনে করেছিলুম তাতে কাজ পাওয়া যাবে, আর কোনো কারণ নেই। গোর মুথ লাল করিয়া বলিল—“আমি এ সবের মধ্যে নেই। বিবাহের ঘটুকালি করা আমার ব্যবসায় নয়, আমার অন্ত কাজ আছে ।” এই বলিয়া গোরা ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । হতবুদ্ধি মহিম বিনয়কে এ সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন করিবার পূৰ্ব্বেষ্ট সেও একেবারে রাস্তায় বাহির হইয়া পড়িল। মহিম দেয়ালের কোণ হইতে হু কাটা তুলিয়া লইয়া চুপ করিয়া বসিয়া টান দিতে লাগিলেন। " 曾 গোরার সঙ্গে বিনয়ের ইতিপূৰ্ব্বে অনেক দিন অনেক ঝগড়া হইয়া গিয়াছে কিন্তু এমন আকস্মিক প্রচও অপু,ৎপাতের মত ব্যাপার আর কখনো হয় নাই। বিনয় নিজের কৃত কৰ্ম্মে প্রথমটা স্তম্ভিত হইয়া গেল। তাহার পরে বাড়ি গিয়া তাঙ্গর বুকের মধ্যে শেল বিধিতে লাগিল। এই ক্ষণকালের মধ্যেই গোরাকে সে যে কত বড় একটা আঘাত দিয়াছে তাহা মনে করিয়া তাহার আহারে বিশ্রামে রুচি রছিল না। বিশেষতঃ এ ঘটনায় গোরাকে দোষী করা যে নিতান্তই অস্তুত ও অসঙ্গত হইয়াছে ইহাই তাহাকে দগ্ধ করিতে লাগিল,—সে বরাবর বলিল, “অন্যায়, অন্যায়, অন্যায় !" বেলা দুইটার সময় আনন্দময়ী সবে যখন আহার সারিয়া সেলাই লইয়া বসিয়াছেন এমন সময় বিনয় আসিয়া তাহার কাছে বসিল । আজ সকাল বেলাকার কতকটা "খবর তিনি মল্লিমের কাছ হইতে পাইয়াছিলেন । আহারের সময়