পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

** 8. প্রবাসী। ধুইল চরণ তার ; কিরণ কিরীট মধুর সমীরে দোলে যেন পেলা ছলে। ‘বিদায়’ কহিল সেই শাস্ত পুরোহিত দাড়াইয়া ছায়াময় প্রাঙ্গণে যাইয়া “আনি সে প্রবাস হতে গুহ তারাটিরে বাধি দি , বালিকার কনক অঞ্চলে ।” বিদায় মাগিয়া নিয়া নলিনী তথন মুমস্তের সাথে গেল তটিনীর তীরে । ভাসিছে তরণ ক্ষুদ্র সলিল হিল্লোলে, " নাবিকের বসে ছিল অাশা পথ চেয়ে । বিমল প্রভাতে লয়ে উজ্জ্বল আলোক চলিল আশায় ভাসি ; যে গিয়াছে চলে অদৃষ্টের নিদারুণ ঝটিকার ঘায় শুষ্ক পল্লবের সম মরুর মাঝারে, তাহারে পাইতে পুনঃ ফিরায়ে আবার । সেই দিন, তার পর আরো দুষ্ট দিন হল গত, কোন চিহ্ন নাহি তার, বনে কিম্বা তটিনীর তীরে, নাহি ক্ষুদ্র তরী। কিছু দিন পরে তারা পাইল কিনারা, অনিশ্চিত, লোক মুখে বার্তা পেয়ে শুধু চলিল তাহারা দুরে, অবশেষে দোহে শ্রান্ত হয়ে ক্ষুদ্র এক নিৰ্জ্জন নগরে বাধিয়া তরণী গেল, ক্ষুদ্র পান্থশালা সেই থানে। শুনে তারা গৃহ কর্তা মুখে বিমল সঙ্গীর সাথে অশ্বদল লয়ে গিয়াছে ফিরিয়া পুনঃ পিতার আবাসে। 8 দুর পশ্চিমের তীরে নির্জন প্রদেশে উচ্চ শৈল শোভিতেছে, তুষার ধবল। দুই পাশ্বে উচ্চ শৈল মধ্য দেশে তার ক্ষীণ পথ শোভা পায়, শৈল চুড়া এক প্রবেশের দ্বার পথে দ্বারীর সমান। সেই থানে নামি সবে শকট হইতে চলিল তরণী বুকে। আনন্দ আলসে বহিতেছে স্রোতস্বিনী, অগণিত তার ঝর ঝর বারি ধারা ঝরিছে সদাই ছুটিছে সাগর মুখে। যেন বীণা বুকে তারে তারে দ্রুত খেলা সঙ্গীত তরঙ্গে । এই সব নদী তটে শু্যামল প্রান্তর আলো আর ছায়া লয়ে সদা মধুময় সদাই সুগন্ধী বায়ু পরাগ মাখিয়া খেলিতেছে মুক্ত পথে, ফুটন্ত কুসুমে আলো করে আছে সেই গুমি বনভূমি।

  • ... "۰ء ---ه اع هماعی-s-۰یها ------م

[ ৭ম ভাগ । দূরে চরিতেছে সব পশুপাল যত কোন খানে কাননেতে জলিছে অনল অন্ধকার গগনেতে বিজলার প্রায় । সারাদিন বহে ক্লাস্ত হয়েছে পবন । সেই বন ভূমে পুৰ্ব্বে কোন জাতি এক গিয়াছিল যুদ্ধ তরে। সেই বন পথ রঞ্জিত শোণিত ধারে । উদ্ধে গগনেতে ছড়ায়ে বিচিত্র পক্ষ শকুনির দল ঘুরছে ফিরিছে শূন্তে, যেন তারা সব সেনাপতি সম ফিরে অশান্ত অধীর । দুরে কভু দেখা যায় শিবির হইতে উঠিতেছে ধুম শিখা। নদী তীরে কোথ। রহিয়াছে কুঞ্জ সম কণ্টকে আবৃত বৃক্ষরাশি। নদী তটে বৃক্ষ মুল তুলি বনের ভল্লুক সুখে করিছে আহার । উপরে অনন্ত সেই নীলিম গগন ঈশ্বরের হস্ত সম রয়েছে প্রকাশ । এই সব বন পথে পৰ্ব্বত মালায়, বিমল আসিয়াছিল, সঙ্গীদের লয়ে । প্রতিদিন সঙ্গী সাথে সুমন্ত নলিনী অগ্রসরি যাইতেছে তাহাদের পানে। কতু তারা দেখে কিম্ব কৰ্ভু ভাবে মনে, বিমলের শিবিরের অনলের শিখা দেখা যায় অতি দুরে বিমল প্রভাতে ; সন্ধ্যাকালে যবে তারা অতি শ্রান্ত হয়ে, আসে পুনঃ সেই স্থানে দেখে শুধু তার অবশিষ্ট কাষ্ঠ খণ্ড আর ছাক্ট রাশি । যদিও শরীর ক্লান্ত অশান্ত হৃদয়, তবু আশা আলো সদা দেখাইছে পথ আলেয়ার আলো সম ভুলাইয়া আঁখি । একদা বসিয়া সবে জালাইয়া আলো হেনকালে এল এক সে দেশী রমণী শিবিরে তাদের, মুগে তার মাথা যেন ঃখের মলিন ছায়া আর সহিষ্ণুত । , বলিল সে আসিয়াছে অতি দূর হতে, স্বামী তার হত কোন অদ্যায় সমরে । শুনি তার দুঃখ কথা করুণ অন্তরে, খাদ্য দ্রব্য দিল তারে যতন করিয়া । আহারান্তে শিবিরেতে শ্রমক্লান্ত হয়ে পড়িল ঘুমায়ে সবে। শুধু এক বসি’ নলিনী শিবিরে তার। ভিখারিণী গিয়৷ কহে তারে আপনার দুঃখের কাহিনী।