পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৪০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

«Η ον . যে আশ্রম ছিল সেই কাননের বুকে প্রবাসী । প্রান্তরের কাছে । সেই আশ্রমের মাঝে অনাথ দুৰ্ব্বল চাহে অনাথশরণে, মৃত্যুর মাঝারে লভে অমৃতপরশ । সেবিক। নলিনা সেথ নিশাথে দিবসে করিছে শুশ্রাধা সবে, মৃত্যু কোলে যারা লভিবে বিশ্রাম, তারা যেন তার মুখে হেরিছে স্বর্গের সালে। সে যেন গে। তথা স্বর্গের দূতের চিত্র, চিত্রকরকরে। অথবা স্বর্গের আলো স্বর্গের গুয়ারে, যেন তার মুখচ্ছবি, দেখাইছে পথ যে পথে বিশ্রাম লভি যাইবে সত্বরে । বিশ্রামের দিনে এক নির্জন সে পথে, নলিনী আশ্রমমূখে করিল গমন । আশ্রমের দ্বারে যবে কবিল প্রবেশ কি মধুর সুধাগন্ধে ভবিল হৃদয় । তুলিল সে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ সুন্দর কুসুম, ভাবিল অন্তরে, যদি কেহ মৃত্যুকালে হেরি সে সুন্দর পুষ্প, লভি সে আঘাণ হয় স্বর্থী। যেমন সে সোপনেতে করে আবোঙ্গণ, স্নিগ্ধ বায় গেল পবশিয়া, মন্দিরেতে ঘণ্টাধ্বনি তষ্টল মধুব। প্রাক্ষর হইতে আসে সঙ্গীতেধ ধ্বনি বিভূগান গায় সবে । শেন মোঙ্গময় শাস্ত আহত করিয়া পশিল পরাণে । কে যেন অমৃবে তাক কহিল ডাকিয়া “তোমার পরীক্ষা শেষ" ; নয়নেতে তার জ্বলিল স্বর্গের আলো । রোগীদেৰ গিয়া করিল সাত্তনা, তৃষ্ণাৰ্ত্তেরে দিল বারি, মৃতের নয়ন মদি ঢাকিল বয়ান। যারা সব তুষারেব সম পথ পাশ্বে পড়েছিল। কত শ্রান্ত যাতনা অধীর চাহিল তাহাব পানে । যেন রবিকর কারাগারে পশিয়াছে। চারিদিকে চেয়ে দেখিছে নলিনী, কেমন মৃত্যুর হস্ত শান্তি ও সাস্বনা দেয় অভাগা মানবে । কত পরিচিত দেহ নাহি সেথ আর, কত যে নূতন জন এসেছে সেথায় সংখ্যা নাহি তার । সহসা অন্তর কঁপিয়া উঠিল তার, যেন চরাচর উঠিল ঘুরিয়া, স্থির অচেতন সম মুহিল দাড়ায়ে, হস্ত হতে ঝরে ফুল, [ ৭ম ভাগ নয়নের জ্যোতি তার যেন নিভে গেল । কি আকুল দুঃখপূর্ণ করুণ কুষ্ঠের উঠে মৰ্ম্মভেদী স্বর। মৃতপ্রায় যারা তারাও চমকি চায় । সম্মুখে তাহার শয্যাপরে পড়ে আছে বৃদ্ধ একজন, দীর্ঘ শুভ্ৰ কেশগুচ্ছ পড়েছে ললাটে। . কিন্তু সে প্রভাতকালে,সেমুখেতাহার সহসা সে ঘেীবনের চিত্রপটথানি জাগিয়া উঠেছে যেন। মৃত্যু কাল এসে আপনার পূর্ব বেশ দিয়াছে ফিরায়ে ! উত্তপ্ত অধরে যেন রাঙিমা প্রকাশ হইয়াছে। কোন একদেশবাসী যারা রক্ত চিহ্ন দিয়া মৃত্যু করে নিবারণ, যেন আজ সেই চিহ্ন করেছে ধারণ মলিন অধর আজি, সেই সে কারণে । নীরব নিশ্চলভাবে রয়েছে পড়িয়া, যেন জীবনের স্বপ্ন ডুবিছে আঁধারে। মরণের ঘুমে মগ্ন হতেছে পরাণ । আত্মা তার সেই রাজ্যে করে বিচরণ ! সহসা করুণ কণ্ঠ পশিল শ্রবণে । কে যেন যন্ত্রণাভরা মৃদু কণ্ঠস্বরে “বিমল হৃদয়রত্ন” বলিল তাঙ্গরে। তারপর কণ্ঠস্বর মিলাল, নীরবে। হেরিল সে স্বপ্নে যেন শৈশবের সেক্ট প্রিয় গুহ, সে হামল মধুর প্রান্তর। রজতের ধারা সম বহে স্রোতস্বিনী, সেই গ্রাম, সেই বন, পৰ্ব্বতের শ্রেণী, সেইখানে ছায়াতলে করিছে ভ্ৰমণ কিশোরী নলিনী তার হৃদয়ের ধন। বহিল অশ্রুর ধার নির্মীলিত চোকে খুলিল মুদ্রিত আঁখি, স্বপ্ন অবসান ! কিন্তু যে নলিনী তার শয্যা পাশ্বে বসি, বৃথা চেষ্ট নাম তার হলনাক বলা, অধরে আসিয়া কথা মিলাল অধরে । বৃথা চেষ্ট উঠিবার । নলিনী আসিয়া চুমিল অধরপুটে, হৃদয়ে তাহার রাখিল মস্তক তার। মধুর সে দৃষ্টি সহসা আঁধারে যেন হইল মগন । সহসা আসিয়া বায়ু করিল নিৰ্ব্বাণ প্রদীপের মান আলো । ফুরাল সকলি। সব শেষ হয়ে গেল, আশা, ভয়, দুঃখ, হৃদয় বেদনারাশি, আকুল বিরহব্যথা, সে অসীম ধৈর্য্যবল হল শেখ।