পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা J "মধ্যে যে নিগৃঢ়বন্ধন রক্ষা হইয়া আসিতেছিল, লর্ড কেলভিনের মৃত্যুতে বুঝি বা তাহ ছিন্ন হষ্টয়া যায়। নানা শাখাপ্রশাখা বিশিষ্ট বিজ্ঞানকে সঙ্কীর্ণ গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ রাখা যেমন "এক মহাদোষ, বাহিরের নানা অবান্তর ব্যাপার ও আবর্জনাকে তাহার ভিতরে স্থান দেওয়াও ততোধিক মহাদোষ s লর্ড ' কেলভিনের নেতৃত্বে ইংলণ্ডে বিজ্ঞান এপর্য্যন্ত নিষ্কলুষ ছিল। এই মহারণীর অভাবে সার অলিভার লজ প্রমুখ নব্য নেতাদিগের দ্বারা ইংলণ্ডের পরীক্ষাগারে মার্কিনভৃতের আবির্ভাব অসম্ভব হইবে না । এই ভৌতিক নৃত্যে নিউটন হাশেলের কৰ্ম্মক্ষেত্র ইংলণ্ডের পুৰ্ব্ব পবিত্রতা ও মহিমা কতদূর অক্ষুণ্ণ থাকিবে, তাহা এখন নিশ্চয়ই চিন্তার বিষয় হইয়া দাড়াইবে । § রাজার মৃত্যুতে রাজসিংহাসন শূন্ত থাকে না, এবং বুহিবদ্ধ সমাজে অধিনায়কের অভাব হইলে, অধিনায়ক আপন হইতে আসিয়া শূন্যস্থান অধিকার করে । কিন্তু লর্ড কেলভিনের মত রাজা ও অধিনায়ক কোথায় ? যে সাধারণ শাস্ত্রজ্ঞান ও কাৰ্য্যকুশলতার অপূৰ্ব্ব সন্মিলন লর্ড কেলভিনকে বৈজ্ঞানিকসমাজের নেতৃত্ব দিয়াছিল, ইংলণ্ডে কোন পণ্ডিতেই ত তাঙ্গ, দেখা যাইতেছে না। আধুনিক বিজ্ঞানকে র্যাংরিা নিজের হাতে গড়িয়া মহিমাময় করিয়াছেন, অতি অল্পদিনের মধ্যে আমরা তাহদের তিন চারিটিকে হারাইয়াছি। রসায়নবিদ মেণ্ডেলিফ এবং ফরাসী পণ্ডিত কোরি ও বাৎলোর মৃত্যুতে যুরোপের বিভিন্ন দিক্ হইতে সত্যই এক একটি দিকৃপালের পতন হইয়াছে । লর্ড কেলভিনের মৃত্যুতে যুরোপের আর এক দিক্ হইতে যে আর একটি দিকৃপালের পতন হইল, তাহা অবগুই স্বীকার করিতে হইবে। লৰ্ড,কেলভিন ১৮২৪ খৃষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ইষ্টার পিতাও একজন স্থপণ্ডিত লোক ছিলেন। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুকাল গণিতের অধ্যাপনায় নিযুক্ত থাকিয়া ইনিও স্বযশ অর্জন করিয়াছিলেন । এই প্রকার পিতার পুর্য্যবেক্ষণের অধীনে থাকিয়া পুত্র যে সুশিক্ষিত হইবেন তাহাতে আর আশ্চৰ্য্য কি ? কেলভিন দশ বৎসর বয়সে প্রবেশিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া একুশ বৎসরে কেমব্রিজের শেষ পরীক্ষায় উপস্থিত হইলাছিলেন, এবং পরীক্ষায় দ্বিতীয় লর্ড কেলভিন

  • a>6。

স্থান অধিকার করিয়া বহু সম্মানে ভূষিত হইয়াছিলেন। এই সময়ে জড়তত্ত্বের গবেষণার উপযোগী ভাল পরীক্ষাগার ইংলণ্ডে মোটেই ছিল না। কেমব্রিজের অবস্থা তখনে । খুব শোচনীয়। নিউটনের সময়ে পরীক্ষাগারের অবস্থা যে প্রকার ছিল, তাহার তথনকার” অবস্থা প্রায় তদ্রুপই রহিয়া গিয়াছিল। ফরাসী পণ্ডিতদিগের সুযশ এই সময়ে জগতময় পরিব্যাপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল। যুবক কেলভিন তাহার সেই অদম্য জ্ঞানলিপীয় চালিত হইয়। সেই বিজ্ঞানের কেন্দ্রের দিকে ছুটিয়াছিলেন । সুপ্রসিদ্ধ ফরাসী বৈজ্ঞানিক রেনো ( Regnault ) তখন পূর্ণ উদ্যমে জলীয় বাম্পের তাপ রক্ষার ব্যাপার লইয়া গবেষণায় নিরত। লর্ড কেলভিন ইষ্ঠারি অধীনে কিছুদিন পরীক্ষাগারের কাজকৰ্ম্ম শিক্ষা করিয়াছিলেন। কিন্তু ফ্রান্সে তার আবে অধিক দিন থাকা হইল না । এক বৎসরের মধ্যে স্বদেশে ফিরিয়া আসিয়া তাহাকে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়বিজ্ঞানের অধ্যাপনার ভার গ্রহণ করিতে হইয়াছিল । সেই সময় ইষ্টতে সুদীর্ঘ ৫৩ বৎসরকাল লর্ড কেলভিন ঐ অধ্যাপকের কাজেই নিযুক্ত ছিলেন, এবং যে সকল মহাবিষ্কার ইহঁাকে অমরত্ব দিবার উপক্রম করিয়াছে, তাহার অধিকাংশই ইনি গ্লাসগোর অধ্যাপকের আসন হক্টতেই জগতে প্রচার করিয়াছিলেন। গত অদ্ধ শতাব্দী, ধরিয়া এক কেলভিনেরই জন্য গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় বৈজ্ঞানিকজগতের এক মহাতীর্থ হইয়া দাড়াইয়াছিল । লর্ড কেলভিন তাহার অধ্যাপকজীবনের প্রারম্ভেই তাহার অসাধারণ প্রতিভা ও সূক্ষ্মদর্শনের পরিচয় দিয়াছিলেন। এই সময়ে ভূতত্ত্ববিদগণ ভূগর্ভস্থ শিলাস্তরের উৎপত্তিকাল নিরূপণ করিয়া পুথিবীর বয়ঃকাল নিৰ্দ্ধারণের চেষ্টা করিতেছিলেন। ইষ্টার হিসাব করিয়া দেখাইয়াছিলেন, পৃথিবী সহস্ৰ কোট বৎসরেরও অনেক পূৰ্ব্বে জন্মগ্রহণ করিাছিল। লর্ড কেলভিন এই গণনার বিরুদ্ধে ঘোর প্রতিবাদ আরম্ভ করিয়াছিলেন, এবং তাপক্ষয় দ্বারা এখনকার শীতল অবস্থায় আসিতে পৃথিবী কত বৎসর অতিবাহন করিয়াছে তাহ স্থির করিবার জন্ত গণনা আরম্ভ করিয়াছিলেন। গণনায় পৃথিবীর বয়স দশকোট বৎসরের অধিক হইল না। এই ব্যপার অবলম্বন করিয়া ভূতত্ত্ববিদ্‌