পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8있 - 4 সুচারুরূপে সংকলিত হয়,নাই । কোন পুরাকালে পোঁও,বৰ্দ্ধনে রাজধানী সংস্থাত ’ইয়াছিল, তাহার জনশ্রুতি পৰ্য্যন্ত বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে । পুরাতন সংস্কৃত সাহিত্যে পৌণ্ডবৰ্দ্ধনের উল্লেখ দেখিয়া মনে হয়,—ম্মরণাতীত পুরাকাল হইতে পেগু বৰ্দ্ধন ভারতবিখ্যাত রাজনগর বলিয়া সৰ্ব্বত্র সুপরিচিত ছিল। তথায় এক সময়ে ক্রিয়াকলাপের প্রাধান্ত দেখিতে পাওয়া যাইত ; তাহার পর বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবে সকল স্থানই "ধৰ্ম্ম-সংঘ—বুদ্ধ” মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হইয়া উঠিয়াছিল। এই প্রদেশ এক সময়ে জ্ঞানালোচনার জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করিয়া সুধীসমাজেও সুপরিচিত হইয়া উঠিয়াছিল। বৌদ্ধমতানুরক্ত পাল নরপালগণ পৌণ্ডবৰ্দ্ধনের নানা স্থানে রাজনগর ও রাজত্বের্গ প্রতিষ্ঠিত করিয়া রাজ্যশাসনে ব্যাপৃত হইয়াছিলেন। তাতাদের রাজ্য কালক্রমে সেনরাজগণের করতলগত হইবার পর, তাঙ্গ আবার মুসলমানের অধীন হইয় পড়ে। কি হিন্দু, কি বৌদ্ধ, কি মুসলমান,— সকলেই এখন ক্রীড়াপটে বিরাজ করিতেছেন। এখন তাহাদের বীরবিক্রমের লীলাভূমি অরণ্যমাত্রে পর্য্যবসিত হইয়াছে। বক্তিয়ার পিলিজি এবং তাহার অব্যবহিত পরবর্তী মুসলমান ভূপতিবর্গ পৌণ্ড বদ্ধনে পদার্পণ করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না। তাঙ্গর রাজ্যজয়েই ব্যাপৃত ছিলেন, সুতরাং পুনর্ভবার্তীরে দেবকোটের সেনানিবাসেই তাহদের প্রকৃত রাজধানী প্রতিষ্ঠিত হুইয়াছিল । তাহার পর গৌড়,— তাহার পর পাণ্ডুয়া, তাহার পর আবার গৌড় রাজধানী রূপে ব্যবহৃত হইয়াছিল । বরেন্দ্রমণ্ডলের অত্যন্ন স্থানেই বক্তিয়ার খিলিজি অধিকার বিস্তার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। নবাধিরত রাজ্য মধ্যে শাসন-সংস্থাপনের সুব্যবস্থা করিবার পুৰ্ব্বেই শক্তিয়ার খিলিজি তিববত-বহির্গত হইয়াছিলেন । বৰ্দ্ধনকোট হইতে দশ দিবস উত্তরাসো করতোয়াতীর অবলম্বন করিয়া অগ্রসর হইবার পর বক্তিয়ার একটি প্রস্তরনিৰ্ম্মিত সেতু দেখিতে পাইয়া করতোয় উত্তীর্ণ হইয় পৰ্ব্বতারোহণে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। অধিকদূর আরোহণ করিবার পূৰ্ব্বেই তাহাকে পরাভূত হইয়া পেতুর নিকট প্রত্যাবর্তন করিতে হইয়াছিল। সেখানে আসিয়া দেখিলেন,— সেতু ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া, দেশের লোকে প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । তাতার প্রত্যাবর্তনের পথ অবরুদ্ধ করিবার আয়োজন করিতেছে। তিনি একশত মাত্র অনুচর সমভিব্যাহারে সন্তরণে নদী পার হইয়া ভগ্নমনে রথে দেবকোটে প্রত্যাবর্তন করিতে না করিতে নিৰ্দ্দয়ৰূপে নিহত হইয়াছিলেন। র্তাহার প্রধান সেনাপতি মহম্মদ শেরাণ তখন রাজ্যজয়ে ব্যাপৃত ছিলেন । তিনি দেবকোটে আসিয়া সিংহাসনে আরোহণ করিলেন। হত্যাকারী দিল্লীতে উপনীত হইয়া বাদশাহী সনন্দ লইয়া দেবকোট আক্রমণ করায়, পুনরায় গৃহকলহের সূত্রপাত হইয়াছিল। তাহাতে শেরাণ নিহত হইলে, আলি মাইন থিলিজি সিংহাসনে আরোহণ করিয়া, সুলতান আলাউদ্দীন নাম গ্রহণ করিয়াছিলেন। দুই বৎসরের মধ্যেই তাহার অত্যাচার অবিচারে লোকসমাজ ব্যতিব্যস্ত হইয়া উঠিল। তখন হাসামুদ্দীন তাহাকে পদচ্যুত ও নিহত করিয়া সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ধিয়াসুদ্দীন নাম গ্রহণ করিয়া দেবকোট হইতে গৌড় নগরে রাজধানী স্থানান্তরিত করিয়াছিলেন। গৌড়ের সুবৃহৎ মৃৎপ্রাচীর তাহারই কীৰ্ত্তিচিহ্ন বলিয়। কথিত হইয়া আসিতেছে। ১২২৭ খৃষ্টাব্দে দিল্লীশ্বর আলতমাস তদীয় পুত্র শাহজাদা, নসিরুদ্দীনকে গোঁড় আক্রমণে নিযুক্ত করেন। তিনি ঘিয়ামুদ্দীনকে যুদ্ধে নিহত করিয়া, গৌড়ীয় সিংহাসন অধিকার করিয়াছিলেন । তাহার পরলোকগমনে আবার খিলিজি সামন্তগণ গৃহকলহে লিপ্ত হইয়াছিলেন। আলউদ্দীন দৌলত শাহ সিংহাসনে উপবেশন করিতে না করিতে, দিল্লীর ফৌজ আসিয় তাহাকে পরাভূত করিল ; এবং আলাউদ্দীন জানি নামক এক ব্যক্তিকে রাজপ্রতিনিধি পদে প্রতিষ্ঠিত করিয়া দিল। জানি বর্ষ চতুষ্টয় রাজ্যভোগ করিয়া পরলোক গমন করিলে, সইফউদ্দীন আইবক ১২৩৪ খৃষ্টাব্দ, ' পৰ্য্যন্ত সিংহাসন অধিকার করিয়াছিলেন। সইফউদ্দীনের পর তুঘান খা । সম্রাট আলতামস তাহাকেই সিংহাসন দান করেন। আলতামস-তুহিতা সুলতান রিজিয়া তাহাই স্থির রাখিয়াছিলেন । এই সময়ে (১২৪৪ খৃষ্টাব্দে) উড়িষ্যাধিপতি গৌড়চ্চুর্গ আক্রমণ করায়, দুৰ্গতির একশেষ উপস্থিত ইষ্টয়াছিল। গোঁড়াধিপতি দুর্গ রক্ষার সম্ভাবনা দেখিতে না পাষ্টয়া, স্লীশ্বরের শরণাগত তষ্টয়াছিলেন । দিল্লীশ্বরের সেনাপতি তৈমুর খাঁ আসিবার