পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা । ] ক্ষতি হয় বলিয়া বোধ হর না ! বৰ্ম্মার অধিবাসীদিগের মধ্যে জাতিভেদ প্রথা আদেী নাই । তাহাদের মধ্যে অধিকাংশই বৌদ্ধ। ভারতবর্ষে প্রচলিত বৌদ্ধধৰ্ম্ম ও সিংহলে প্রচলিত ‘বৌদ্ধধৰ্ম্ম এতদুভয়ের সংমিশ্রণে বৰ্ম্মার বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম উদ্ভূত হইয়াছে । বৰ্ম্মাবাসী বৌদ্ধের প্রধানতঃ দুই ভাগে বিভক্ত -- ১ । মুলাগওঁ । ১ । মহাগওঁীণ প্রথমোক্ত সম্প্রদায় ভুক্ত বৌদ্ধের বাহিক ক্রিয়া কলাপে বিশেষ অনুরক্ত, শেষোক্ত সম্প্রদায় ভুক্ত ীেদ্ধের অদৃষ্টবাদী, তাহারা_ক্রিয়ানুষ্ঠান দ্বারা দেবতার প্রতিসাধন বিষয়ে বিশেষ নহে । উপরে যে উভয় সম্প্রদায়ের উল্লেখ করা হইল তাহদের পরস্পরের মধ্যে কোনও রূপ দলাদলি নাই। zosta (Upper Burma) বৌদ্ধের তাহদের একজন দলপতি নিৰ্ব্বাচন করে। এই দলপতির নাম “থাথা না Af: (thathanabaing) অবশু, ইংরাজ আমলে গভর্ণমেণ্টের অনুমোদিত ন হইলে নিৰ্ব্বাচন সিদ্ধ হয় না । বৰ্ম্মীর সকল স্থানেই ধৰ্ম্মমন্দির দেখিতে পাওয়া যায়। এই মন্দির গুলিকে ইংরাজের pagodas প্যাগোডা ) বলিয়া থাকেন। মন্দিরগুলি ইষ্টকনিৰ্ম্মিত,আমাদের দেশের ঘণ্টার আকারের। কোনও কোনও মন্দিরের উপরাংশ সোণার পাত দিয়া মোড় । এই সমস্ত ধৰ্ম্মমন্দির ব্যতীত বৰ্ম্মায় অসংখ্য “ফুঙ্গী-চঙ্গ” আছে। “ফুঙ্গা-চঙ্গ” পুরোহিত দিগের আশ্রম, বৌদ্ধ শ্রমণদিগের বিহার । অধিকাংশ আশ্রমই কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত, তবে কতকগুলি ইষ্টক নিৰ্ম্মিতও দেখিতে পাওয়া যায়। এই সমস্ত আশ্রমগুলিই ইহাদের জাতীয় পাঠশালা ! ধৰ্ম্মোপদেষ্টাই ইহাদের শিক্ষক। পল্লীগ্রামে বালক বালিকার এই সমস্ত আশ্রমেই লেখাপড়া শিক্ষা করে। বিদ্যাশিক্ষার পরেও ইহারা কিছু দিন এই সমস্ত আশ্রমে বাস করে। ইহাদের ধৰ্ম্মের নিয়ম এই যে প্রত্যেক পুরুষকেষ্ট কিছু দিনের জন্য পুরোহিতদিগের সহিত আশ্রমে বাস করিতে হইবে । এখানকার পাৰ্ব্বত্য জাতিগুলি বৌদ্ধ নহে । তাহারা স্বতব্যক্তির আত্মার উপাসনা করে। ভূত প্রেত বিশ্বাস করে। এমন কি নরহত্যা করিয়াও ইষ্টদেবতার প্রতিসাধন করিতে ক্ষাস্ত হয় না। এতদ্ব্যতীত বৰ্ম্মায় হিন্দু, মুসলমান ও २ বৰ্ম্ম । ৪২৯ و پ****** ** ده,- *******.* খ্ৰীষ্টানদিগের সংখ্যাও নিতান্ত । অল্প নহে। ১৯০১ খ্ৰী: আদমসুমারী অনুসারে বর্মার হিন্দুর সংখ্যা ২৮৫,৪৮৪; মুসলমানের সংখ্যা ৩৩৯,৪৪৬ ; শ্ৰীষ্টানের সংখ্যা ১৪৭,৫২৫ । খ্ৰীষ্টানদিগের যে সংখ্যা দেওয়া গেল, তাহার মধ্যে বৰ্ম্মাবাসী খ্ৰীষ্টান সংখ্যা ১২১,১৯১ । বৰ্ম্মার অধিবাসিগণ প্রধানতঃ কৃষিজীবী। কিন্তু রেশম ও স্থতার বস্ত্রবয়ন, স্বর্ণকার, কৰ্ম্মকার, কুম্ভকার, স্বত্রধর, ও অন্যান্য শিল্পকার্য্যেও অনেক লোক জীবিকার্জন করিয়া থাকে । সমগ্র অধিবাসী সংখ্যার শতকরা ৪৩৪ বাণিজ্যে ও ২৫৪ অন্যান্ত ব্যবসায় ব্যাপৃত। সরকারী চাকুরীতে ১৯১,৭৯৬ অর্থাৎ শতকরা ১৮৫ জন লোক ১৯০১ খ্ৰীঃ নিযুক্ত ছিল। বৰ্ম্মায় ভিক্ষাজীবীর সংখ্যা কম। ভিন্ন দেশের সহিত বাণিজ্য বিষয়ে বৰ্ম্মবাসীরা বিশেষ পটু বলিয়া বোধ হয় না । রেঙ্গুনে যে সমস্ত চীনদেশীয় সওদাগর আছেন, তাহাদেরই ব্যবসায় বিশেষ প্রবল বলিয়া বোধ হয়। " খাদ্য সম্বন্ধে বৰ্ম্মাবাসীদিগের বিশেষ কিছুতে আপত্তি আছে বলিয়া বোধ হয় না। আমাদের দ্যায় ইহারাও ভাত খায়। তবে ইহাদের চাউল, সবই আতপ । আমাদের দেশের স্তায় সিদ্ধ চাউল প্রস্তুত করিতে ইহারা জানে না । সকল রকম মৎস্ত মাংসই ইহার থায় । পিয়াজ ও রসুনে ইহারা বিশেষ অনুরক্ত। লবণাক্ত মৎস্ত ইহারা বড় ভাললাসে । এই পচা শুষ্ক মৎস্তের এরূপ তুর্গন্ধ যে অনভ্যস্ত ব্যক্তি তাহ সহ্য করিতে পারে না। যদি কেহ আমাদের দেশ হইতে লোণ মাছের আমদানি করিতে পারেন, তাহ হইলে তাহার বিশেষ লাভ হইবার সম্ভাবনা । কেহ কেহ সে ব্যবসা করিয়া কিছু কিছু লাভবান হইয়াছেন। কিন্তু বিপুল আয়োজনে এ ব্যবসা করিবার চেষ্টা কেহই করেন নাই । বস্ত্রাদি সম্বন্ধে ইহারা বেশ পরিষ্কার পরিছন্ন। অবস্থামুসারে অধিকাংশ লোকই রেশমী বস্ত্র পরিধান করে । স্ত্রীলোক ও পুরুষদিগের বস্ত্রের বিশেষ পার্থক্য নাই।” আমাদের স্তায় কাছ, কেঁচা ইহাদের নাই। তবে কোনও কোনও পুরুষ ক্টোচার পরিবর্তে খানিকটা কাপড় নাভির নিকট গুজিয়া রাখে। সকলেই সৰ্ব্বদা জামা গায়ে দেয় । পুরুষের মাথায় খানিকট রেশমী বস্ত্র জড়াইয়া রাখে।